এস এম মিরাজ//
বরিশালের আমানতগঞ্জ ভূমি অফিস—যে অফিসের দরজায় সাধারণ মানুষ ন্যায়ের আশায় সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকে, সেই দরজার ভেতরেই নাকি চলছে ঘুষের কদর্য কারবার। অভিযোগের তীর সোজা গিয়ে ঠেকেছে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ খান–এর বুকে। দীর্ঘদিন ধরে গোপনে চাপা থাকা ক্ষোভ এবার মুখ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে সাধারণ মানুষের।
কথা বলছিলেন ভুক্তভোগী মোঃ আবু সালে আহমেদ। তার কণ্ঠে ক্ষোভ, তবু এক ধরনের ভাঙা অসহায়ত্ব—
১৩ নভেম্বর তিনি কাউনিয়া মৌজার জেল নং ৪৭-এর ৩০৬৮ খতিয়ানের দুইটি নামজারি করাতে অফিসে গেলে, কর্মকর্তা মাসুদ নাকি চেয়ে বসেন ৭,০০০ টাকা ঘুষ। আইন অনুযায়ী যেখানে সরকারি ফি মাত্র ১,১৭০ টাকা, সেখানে অতিরিক্ত কয়েকগুণ টাকা দাবি—এ যেন প্রশাসনের গায়ে বসে থাকা কালো ছায়া। অবশেষে বাধ্য হয়ে তিনি ৪,০০০ টাকা দিয়ে নামজারি করান।
এ অভিযোগ নতুন নয়। তার আগে জেল ৪৮, আমানতগঞ্জ মৌজার ভিপি সম্পত্তিতে নাকি তিনজনের নামে ভুয়া খতিয়ান খুলে খাজনা কেটে দেওয়ার মতো ভয়ংকর দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের তালিকা যেন দিনে দিনে ফুলে–ফেঁপে পাহাড় হচ্ছে।
অবশ্য মাসুদ খান সব অভিযোগ অস্বীকার করে এক কথায় বলেন—
“এসব সবই মিথ্যা, ভিত্তিহীন।”
সরকারি কর্মকর্তা যখন এমন সোজা কথায় দায় ঝেড়ে ফেলেন, তখন জনগণের জন্য আর কীই বা অবশিষ্ট থাকে?
স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। তারা বলেন,
“ভূমি অফিসে গেলে হয়রানি ছাড়া কিছুই নেই। টাকা না দিলে কোনো কাজই হয় না। আইন আছে বই কি—তার ব্যবহার কই?”
অমানতগঞ্জের মানুষ আজ প্রশ্ন তুলছে—
যে অফিসে তারা সেবা নিতে যায়, সেই অফিস যদি হয় টাকা–চালিত, তবে ন্যায়বিচার কোন দরজায় পাওয়া যাবে?
ঘুষের ঘূর্ণি আর দুর্নীতির দমবন্ধ অন্ধকারের বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষ একটাই দাবি তুলেছে—
দ্রুত তদন্ত, কঠোর ব্যবস্থা এবং ভূমি অফিসে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা।
দুর্নীতি যদি শেকড় গেঁড়ে বসে, তবে ন্যায় কোথায় দাঁড়াবে?
অমানতগঞ্জের মানুষ আজ সেই প্রশ্নের উত্তর অপেক্ষায় বসে আছে।







