করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সবকিছুই উলট-পালট করে দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেকে, আয় কমে গেছে বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। বসবাসের ব্যয় বহন করতে না পেরে শহর ছেড়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি পরিশোধের চাপে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ করতে না পারলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল, পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত না করাসহ দেয়া হচ্ছে নানা বার্তাও।
বন্ধ থাকার পরও এই মহামারীর মধ্যে টাকা পরিশোধ করার নির্দেশনা পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তাদের।
সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে অভিভাবকরা। যদিও করোনাকালে টিউশন ফি আদায়ের জন্য চাপ না দিয়ে মানবিক হতে বলা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুর আলহাজ্ব দলিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম মানছেনা এটি।
জানা যায়, ওই স্কুল থেকে মাসিক বেতন, সেশন ও উন্নয়ন ফি দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দেয়া হচ্ছে। স্কুলে নোটিশ ঝোলানোর পাশাপাশি অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের ফি পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ওই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাই ৭৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩৬০০ টাকা,সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪০০০ টাকা থেকে শুরু করে দশম শ্রেণির প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০০০ থেকে ৭০০০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।
দলিল উদ্দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে। ১০ নভেম্বারের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হবে বলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে, সে বলেন গত মাসের ২৮ তারিখ অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে টাকা উত্তোলনের জন্য তার নির্দেশ আমরা পালন করছি। এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একই কথা বলেছে। ( সকল কথার ভিডিও রেকর্ড রয়েছে।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা বিনা কান্না করে বলেন, আমার সন্তান ওই স্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে টিউশন ফি দেয়ার জন্য আমাদের বাসায় লোক পাঠানো হচ্ছে।
টিউশন ফি পরিশোধ করা না হলে অনলাইন ক্লাস থেকে বহিষ্কার ও পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে না বলে শ্রেণি শিক্ষকদের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
অভিভাবক তানভীর আহমেদ অভি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ৮০ ভাগ অভিভাবকের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। শহর এলাকায় অভিভাবকগণ সংসারের ব্যয় বহন করতে হিমসিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় টিউশন ফি পরিশোধ করা সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রিয়াজুল কবির কে ফোন দেওয়া হলে সে ফোন রিসিভ করেনি।বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান,শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেওয়ার দিক নির্দেশনা দেইনি আমরা।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার ও কথা জানান তিনি।