মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট ও আলুবাজার পয়েন্টে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিচার দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন করেছেন বাল্কহেড মালিক-শ্রমিকেরা। রোববার সকালে বরিশাল নগরীর চাঁদমারি–সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে ওই মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন শেষে এই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন মালিক-শ্রমিকনেতারা। স্মারকলিপিতে তাঁরা অভিযুক্ত চাঁদাবাজদের কঠোর বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইমারত নির্মাণে বালু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে এসব স্থাপনা নির্মাণে বালু আসে নৌপথে রাজবাড়ীর পাকশী এবং কুষ্টিয়া থেকে। বরিশাল অঞ্চলের অন্তত ৫০০ বাল্ডহেড রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বালু পরিবহন করে। পথে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট ও আলুবাজার–সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ট্রলার ও স্পিডবোটযোগে প্রতিটি বাল্কহেডে হানা দিয়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেয় স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। দাবি করা চাঁদা না দিলে বাল্কহেড শ্রমিকদের মারধর করে সঙ্গে থাকা টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়। অনেক সময় বাল্কহেড আটকে রেখে নদীতে বালু ফেলে দেয়। কখনো বাল্কহেড ডুবিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা।
চাঁদপুরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদা না দেওয়ায় বরিশালগামী বালুবাহী দুটি বাল্কহেডের ১০ জন শ্রমিককে মারধর করে বাল্কহেড আটকে রাখে সন্ত্রাসীরা।
ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে রোববার সকাল ১০টায় নগরের চাঁদমারি এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে মানববন্ধন করেন নির্যাতিত মালিক-শ্রমিকেরা। মানববন্ধন থেকে মেঘনার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী সেলিম খান ও তাঁর বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা।
মানববন্ধন শেষে এই দাবিতে বরিশালের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেন বাল্ডহেড মালিক-শ্রমিকেরা।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বাল্কহেড শ্রমিকদের স্মারকলিপি গ্রহণের পর বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি পৌঁছে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।