বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘কাউকে আওয়ামী লীগ করতে দেবে না, প্রশাসনের লোকজন সেই প্রক্রিয়া নিয়েছে।’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে তাকে এ কথা বলতে দেখা যায়।

তিনি বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছি, ইঙ্গিত দিয়েছি যে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে যাচ্ছে তারা। গুলি হইছে, আমাদের নেতা-কর্মীরা আহত হইছে। তাদের চিকিৎসা করাতে ঢাকা শহরে যাইতে দিচ্ছে না। মানে কোন পরিস্থিতিতে আছি, এটা কেমন কথা। যারা আহত হইছে তাদের গ্রেফতার করে রাখছে। আমরা পুরো ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই। আমি অপরাধী হয়ে থাকলে, আমাদের নেতা-কর্মীরা অপরাধী হয়ে থাকলে এখানে থাকার কোনো অধিকার আমার নেই। আমি রেজিগনেশন লেটার দিয়ে দেব। অপমান-অপদস্তের তো একটা সীমা আছে।’

ওই ভিডিওতে মেয়র আরো বলেন, ‘আমাকে তো অপদস্ত করে না, করে আওয়ামী লীগকে, করে সরকারকে। আমি প্রথম থেকেই বলছি এটি ষড়যন্ত্র, ষড়যন্ত্র, ষড়যন্ত্র। আমি সিটি করপোরেশনের একজন মেয়র। কিন্তু সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন মিলে কী করছে বুঝলাম না। মেয়র মানে কী? এটা মেয়রের ক্ষমতার কোনো বিষয়ও না। তারা গুলি করলে আমরা পাল্টা গুলি করবো এটাই মনে হয় চাইছিল। অথবা তারা যা করছে তাতে আমরা কেন মিছিল করি না, প্রতিবাদ সভা করি না এটাও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার তো আমাদের সরকার, নৌকা মার্কার সরকার, শেখ হাসিনার সরকার। আমি এখানে নাড়া দিলে পরে ক্ষতি ওনাদের হবে না, ক্ষতি হবে আমার দলের। দলের ক্ষতি করার আগে আমার সরাসরি রিজাইন দিয়ে চলে যাওয়া ভালো।’
এ দিকে গত বুধবার থানা কাউন্সিলে সংঘটিত ঘটনায় পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়ের করা দু’টি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, তিনি ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলেন। ঘটনার পরের দিন বরিশালে আসেন। অথচ তিনি একটি মামলার ৮ নম্বর আসামি। এছাড়া মৃত এক ব্যক্তিও মামলার আসামি হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, ইউএনও মো: মুনিবুর রহমানের দায়ের করা মামলায় যে ২৮ জনকে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে, তাদের নাম-ঠিকানা, বাবার নাম এমনভাবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যেন বাদি তাদের প্রত্যেকের পূর্ব পরিচিত। এ ছাড়া ইউএনওর বাসভবনে সিসি ক্যামেরার যে ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কয়েক মিনিটের। কিন্তু ঘটনা তো কয়েক ঘণ্টার। আবার সেই কয়েক মিনিটের ফুটেজে শুধু আনসারদেরই সরাসরি গুলি করতেই দেখা গেছে। ছত্রভঙ্গ করতে কোনো ফাঁকা গুলি করার বিষয় নেই, যেটা পুলিশ করে। আর যারা থানা কাউন্সিলে গিয়েছিল তারা তো নিরস্ত্রই ছিল। কিন্তু মামলায় বলা হয়েছে ‘মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র’ ছিল। আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি বুধবার রাতের এ ঘটনার পেছনে বিশেষ কোনো পক্ষ রয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো: ইউনুস বলেন, নিয়মিত রুটিন ওয়ার্কের কাজ হিসেবে সেদিন উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়েছিল বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আমরা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ওই রাতে ইউএনওর বাসভবনে কেউ হামলা করেনি। রাতে বিভাগীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় আমিও ছিলাম। হামলা হলে ইউএনওর বাসভবনের একটি জানালার গ্লাসও ভাঙতো না? আবার যে গেট ভাঙার কথা হচ্ছে সেটি কোথায়? সব গেটই তো ঠিকই দেখেছি। ইউএনও নিজেই এর সাথে জড়িয়েছেন। নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন।

 

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে করা দুই মামলায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যেই গ্রেফতার এড়াতে অনেকে বরিশাল ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তবে রাজধানী থেকে বরিশাল নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্নাকে গ্রেফতারের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি বরিশাল পুলিশের।
শনিবার দুপুরে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি নুরুল ইসলাম জানান, বুধবার ঘটনার দিন এবং পরের দিন ১৩ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অভিযানে আরো ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিন উদ্দিন কালুকে শুক্রবার রাতে রুপাতলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও ২১ জনের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবু এবং বরিশাল জেলা বাস-মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরিয়ার বাবু রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা পরিষদ (থানা কাউন্সিল) কম্পাউন্ডে লাগানো শোক দিবসের ব্যানার অপসারণ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। যার সূত্র ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিরাপত্তাকর্মী ও কয়েকদফায় সিটি করপোরেশনের কর্মী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

 

বরিশালে সংঘর্ষের ঘটনায় সি‌টি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুই মামলা প্রত্যাহার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অপসারণ করাসহ ঘটনার বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানি‌য়ে‌ছেন পৌর‌ মেয়ররা। একই সঙ্গে তিন ঘণ্টার পু‌রো ভি‌ডিও জনগ‌ণের সাম‌নে প্রকাশ করারও দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছেন তারা।

শ‌নিবার (১৮ আগস্ট) বরিশাল ক্লা‌বে বিভা‌গের ২৬ পৌরসভার মেয়রদের প‌ক্ষে অনু‌ষ্ঠিত সংবাদ স‌ম্মেলন এ দা‌বিগু‌লো জানানো হয়।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে লিখিত বক্ত‌ব্যে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হা‌রিছুর রহমান ব‌লেন, গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে বাধা দান ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আনসার সদস্যরা মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।
পরে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা মেয়রকে উদ্ধার করে বাসায় পাঠিয়ে দেন।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ওপর হামলার খবর মুহূর্তে নগরব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার জনতা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা কমপ্লেক্সের গেটে উপস্থিত হন।

এ সময় পুনরায় তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়।
এতে গুলিবিদ্ধ হন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড‌ভো‌কেট রফিকুল ইসলাম খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ আরও ৬০ থেকে ৭০ জন।

আহতরা চিকিৎসার জন্য শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রায় ২০০ দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে, ফলে আরও ৫০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হন।

মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুটি মামলা প্রত্যাহার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অপসারণ করার জোর দাবি জানিয়েছেন হারিছুর রহমান। তা না হলে শোকাবহ আগস্ট শেষে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে মুলাদী পৌরসভার মেয়র মোধ শ‌ফিক উজ্জামান রু‌বেল ব‌লেন, ঘটনা যা ঘ‌টে‌ছে তা প্রকাশ না ক‌রে ভিন্ন খা‌তে নেওয়ার চেষ্টা চল‌ছি‌ল, কিন্তু এখন সত্য ঘটনা বে‌রি‌য়ে আস‌তে শুরু ক‌রে‌ছে। রা‌তের ঘটনার ২০ থে‌কে ২৫ সে‌কে‌ন্ডের ভি‌ডিও সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ্যমে প্রকাশ না ক‌রে পু‌রো তিন ঘণ্টার ভি‌ডিও জনগ‌ণের সাম‌নে তু‌লে ধরা হোক। আমরা বিচার বিভাগীয় তদ‌ন্তের মাধ্য‌মে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ ও দোষী‌দের দৃষ্টান্তমূলক শা‌স্তির দা‌বি জানাই।

তি‌নি আরও ব‌লেন, আমরা প্রশা‌স‌নের বিপ‌ক্ষে নয় বা তা‌দের সঙ্গে কোনো বি‌রোধ নেই। মু‌নিবুর রহমা‌নের ম‌তো স্বেচ্ছাচারী উপ‌জেলা কর্মকর্তা‌র ম‌তো সবাই খারাপ, তাও বল‌ছি না। তাই তার সৃষ্ট ঘটনার তীব্র নিন্দা জা‌না‌চ্ছি।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবনে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের হামলা এবং তাদের ওপর আনসার সদস্যদের গুলিবর্ষণ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে শহরে। এ ঘটনায় ইউএনও এবং পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। দুই মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে।

ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট এই অবস্থার মাঝেই বদলি আদেশ এসেছে কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলামের। তাকে সিলেট রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

গত বুধবার (১৮ আগস্ট) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি শাহাজাদা মো. আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত পত্রে এই আদেশ দেওয়া হয়। আদেশে ২৫ আগস্টের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে।

যদিও ইউএনও’র ওই ঘটনা ১৮ আগস্ট রাতে ঘটেছে। আর ওসির বদলি আদেশও হয়েছে ওই তারিখে। যে কারণে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই বদলি হয়েছে মনে করা হলেও ঘটনার আগেই বদলির আদেশ হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আর মেয়রের বিরুদ্ধেই মামলার পরপরই বদলি আদেশের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় এ নিয়ে কানাঘুষা চলছে।

অনেকেই বলছেন, ইউএনও’র বাসায় হামলার ঘটনায় সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষ না নেয়ায় এবং ঘটনার সময় তার অনুসারীদের ওপর লাঠিচার্জ করার কারণেই ওসি নুরুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই তিনি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন। সেই থেকে প্রায় তিন বছর এই থানায় কর্মরত ছিলেন।

তবে এখনও কোতোয়ালি মডেল থানায় নতুন কোনো ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় রাতভর মাঠে সরব ছিল শত শত নেতাকর্মী, সকালেও তারা শ্রমিক লীগের মাধ্যমে বরিশাল নগরীর দুটি বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সকল গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা দায়ের ও গ্রেফতার অভিযান শুরু করার পর পাল্টে যায় চিত্র। দুপুরের পর থেকে পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন পুলিশের হাতে।নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিজিবি ও অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা জোন থেকে ১০ প্লাটুন বিজিবি এসেছে। এছাড়া পিরোজপুর ও পটুয়াখালী থেকে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছেন।এদিকে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বরিশাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল বন্ধ করেন মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিকরা। পরে ১৩ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টা থেকে আবারো বাস চলাচল শুরু হয়।

এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবু ও রুপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহারিয়ার বাবুসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, দুটি মামলার মধ্যে একটির বাদি বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মুনিবুর রহমান এবং অপরটির বাদি পুলিশ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মামলায় তার বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর পুলিশের দায়ের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, দুটি মামলায় ৩০-৪০ জনের মতো নামধারী এবং কয়েক শ’ অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।

এদিকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে নগরের কালিবাড়ি রোডস্থ মেয়রের বাসভবন হঠাৎ করেই ঘিরে ফেলেন র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা। এ সময় সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। মেয়রের বাসার ভেতরে নেতাকর্মীরা যেতে চাইলে তাতেও পুলিশ বাধা দেয়। তবে কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে যান।

 

এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল রাতের ঘটনায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের কেউ কেউ ওখানে অবস্থান করছেন। সেজন্য সেখানে যাওয়া, তবে সেখানে গিয়ে সেরকম কাউকে পাওয়া যায়নি এবং কাউকে সেখান থেকে আটকও করা হয়নি।

ঘটনার শুরু যেভাবে
বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে ব্যানার সরানোকে কেন্দ্র করে আনসার সদস্যদের গুলিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম ও সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত।

 

এদিকে মেয়রের ওপর হামলার খবর পেয়ে ছাত্রলীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থানা কাউন্সিলের প্রধান ফটকে এসে জড়ো হয়। পরে তারা বিক্ষুব্দ হয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এসময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বিক্ষুব্দরা বরিশাল পুটয়াখালী মহসড়কে অবস্থান নিলে সেখান থেকেও তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এসময় পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এর মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে হট্টগোল বেঁধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেইসাথে দফায় দফায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, সিটি করপোরেশনের স্টাফদের সাথে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। শুনেছি আনসার সদস্যরা গুলি চালিয়েছে। আর এ নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনার জেরে থানা কাউন্সিলের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ওপর ময়লা ও ময়লা বহনকারী গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছে করপোরেশনের কর্মচারীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এনামুল হক জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান যেটুকু জানিয়েছেন, তার বাসভবন এলাকায় কিছু লোক ব্যানার খুলতে আসে। কিন্তু সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় রাতের বেলা এভাবে ব্যানার খুলতে নিষেধ করেন তিনি। সেসময় আগত লোকদের সাথে বাগ-বিতণ্ডা হয় এবং তারা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষেধ অমান্য করে বাসভবনে প্রবেশ করতে উদ্যত হন। এসময় নিরাপত্তার খাতিরে দায়িত্বরত আনসার বাহিনী গুলি ছোড়ে।

পরে খবর পেয়ে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সেময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের দিকে কিছু লোক এগিয়ে গেলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এসময় একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়। এছাড়া ইউএনও দাবি করেছেন, তার বাসভবনে দায়িত্বরত কয়েকজন আনসার সদস্যও আহত হয়েছে।

এছাড়া তিনি আরো জানান, ময়লা ও গাড়ি দিয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কটি অবরোধ করা রাখা হয়েছে। সেগুলো সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন,

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তারা আমাকে গালিগালাজ করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।

মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ছররা গুলি করা হয়েছিল। আমার গায়ে লেগেছিল, ব্যথা পেয়েছি। আমার গায়ে জ্যাকেট

ছিল। সে সময় সাথের লোকেরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। তাদের গুলি লেগেছে। অনেকেই আহত হয়েছেন।

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১০ প্লাটুন বিজিবি, সাথে অতিরিক্ত ১০ ম্যাজিস্ট্রেট
বরিশালে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একইসাথে মাঠে থাকবেন অতিরিক্ত ১০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনার পর।

 

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় রাতভর মাঠে সরব ছিল শত শত নেতাকর্মী, সকালেও তারা শ্রমিক লীগের মাধ্যমে বরিশাল নগরীর দুটি বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সকল গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা দায়ের ও গ্রেফতার অভিযান শুরু করার পর পাল্টে যায় চিত্র। দুপুরের পর থেকে পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন পুলিশের হাতে।নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিজিবি ও অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা জোন থেকে ১০ প্লাটুন বিজিবি এসেছে। এছাড়া পিরোজপুর ও পটুয়াখালী থেকে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছেন।এদিকে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বরিশাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল বন্ধ করেন মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিকরা। পরে ১৩ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টা থেকে আবারো বাস চলাচল শুরু হয়।

এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবু ও রুপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহারিয়ার বাবুসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, দুটি মামলার মধ্যে একটির বাদি বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মুনিবুর রহমান এবং অপরটির বাদি পুলিশ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মামলায় তার বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর পুলিশের দায়ের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, দুটি মামলায় ৩০-৪০ জনের মতো নামধারী এবং কয়েক শ’ অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।

এদিকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে নগরের কালিবাড়ি রোডস্থ মেয়রের বাসভবন হঠাৎ করেই ঘিরে ফেলেন র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা। এ সময় সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। মেয়রের বাসার ভেতরে নেতাকর্মীরা যেতে চাইলে তাতেও পুলিশ বাধা দেয়। তবে কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে যান।

এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল রাতের ঘটনায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের কেউ কেউ ওখানে অবস্থান করছেন। সেজন্য সেখানে যাওয়া, তবে সেখানে গিয়ে সেরকম কাউকে পাওয়া যায়নি এবং কাউকে সেখান থেকে আটকও করা হয়নি।

ঘটনার শুরু যেভাবে
বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে ব্যানার সরানোকে কেন্দ্র করে আনসার সদস্যদের গুলিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম ও সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত।

এদিকে মেয়রের ওপর হামলার খবর পেয়ে ছাত্রলীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থানা কাউন্সিলের প্রধান ফটকে এসে জড়ো হয়। পরে তারা বিক্ষুব্দ হয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এসময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বিক্ষুব্দরা বরিশাল পুটয়াখালী মহসড়কে অবস্থান নিলে সেখান থেকেও তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এসময় পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এর মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে হট্টগোল বেঁধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেইসাথে দফায় দফায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, সিটি করপোরেশনের স্টাফদের সাথে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। শুনেছি আনসার সদস্যরা গুলি চালিয়েছে। আর এ নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনার জেরে থানা কাউন্সিলের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ওপর ময়লা ও ময়লা বহনকারী গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছে করপোরেশনের কর্মচারীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এনামুল হক জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান যেটুকু জানিয়েছেন, তার বাসভবন এলাকায় কিছু লোক ব্যানার খুলতে আসে। কিন্তু সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় রাতের বেলা এভাবে ব্যানার খুলতে নিষেধ করেন তিনি। সেসময় আগত লোকদের সাথে বাগ-বিতণ্ডা হয় এবং তারা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষেধ অমান্য করে বাসভবনে প্রবেশ করতে উদ্যত হন। এসময় নিরাপত্তার খাতিরে দায়িত্বরত আনসার বাহিনী গুলি ছোড়ে।

পরে খবর পেয়ে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সেময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের দিকে কিছু লোক এগিয়ে গেলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এসময় একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়। এছাড়া ইউএনও দাবি করেছেন, তার বাসভবনে দায়িত্বরত কয়েকজন আনসার সদস্যও আহত হয়েছে।

এছাড়া তিনি আরো জানান, ময়লা ও গাড়ি দিয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কটি অবরোধ করা রাখা হয়েছে। সেগুলো সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন,

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তারা আমাকে গালিগালাজ করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।

মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ছররা গুলি করা হয়েছিল। আমার গায়ে লেগেছিল, ব্যথা পেয়েছি। আমার গায়ে জ্যাকেট ছিল। সে সময় সাথের লোকেরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। তাদের গুলি লেগেছে। অনেকেই আহত হয়েছেন।

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১০ প্লাটুন বিজিবি, সাথে অতিরিক্ত ১০ ম্যাজিস্ট্রেট
বরিশালে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একইসাথে মাঠে থাকবেন অতিরিক্ত ১০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনার পর

 

বরিশাল জেলা প্রশাসকের দাপ্তরিক মোবাইল ফোন ক্লোন করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বিশেষ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর ক্লোন করে এবং তা দিয়ে ফোন করে বিভিন্ন লোকের কাছে অর্থ দাবি করছে।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়ে সকলকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। এবং তিনি কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন বা তথ্য আদান-প্রদান করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

এর আগে গতকাল বুধবার উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ফোন নম্বর ক্লোন করা হয়েছিল।

পুলিশ এতে জড়িতদের খুঁজতে শুরু করেছে।’

 

রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুরে হোসনেয়ারা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধা নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে রাজাপুর থানা পুলিশ।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা সদরের টিএন্ডটি সড়কের নিহত নারীর একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় সাদ্দাম (২৪) ও পনির (৪০) নামে (নিহতের বাসার ভাড়াটিয়া) দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। নিহত হোসনেয়ারা পাঁচ সন্তানের জননী ও স্থানীয় মৃত. আব্দুল খালেক হাওলাদারের স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকাল থেকে হোসনেয়ারা বেগমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

পরে স্বজনরা বাড়ির পেছনের দিকে তাদের একটি পরিত্যাক্ত তালা দেওয়া ঘরের ভেতরে গলাকাটা লাশ দেখতে পায়।

পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঝালকাঠির পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কি কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।

 

শামীম আহমেদ : অন্তঃস্বত্তা নার্সদের করোনা মহামারীতেও কোন ছুটি নেই। ফলে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত অন্তঃস্বত্তা ১১১ জন নার্স প্রতিনিয়ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে কর্মরত ৯২৭ জন নার্স রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে ১১১ জন নার্স (সেবিকা) অন্তঃস্বত্তা হয়ে পরলেও রোগীদের সেবায় তারা কখনও পিছু হটেননি।

সর্বদা নিজেদেরকে রোগীর সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। এমনকি করোনার কারণে রোগীদের চাঁপ বৃদ্ধি পেলেও সেবা দিতে তারা কখনও বিরক্তবোধ মনে করেননি।

নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে অনেকসময় উল্টো রোগী ও তাদের স্বজনদের উগ্র আচরণ- শ্লীলতাহানি এবং নানারকম অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন সেবিকারা।

তবুও তাদের (নার্স) সংসার জীবন রেখে একটা নির্ধারিত সময় ব্যয় করছেন রোগী সেবার কাজে।

শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত নার্স বর্তমানে অন্তঃস্বত্তা সালমা আক্তার বলেন, সরকার আমাদের জন্য ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি দিয়েছেন।

আমরা সময়মত এসব ছুটি নিয়ে থাকি। কিন্তু করোনা মহামারী সংক্রান্ত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমিসহ অন্যান্যরা অন্তঃস্বত্তা অবস্থায়ও নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লেবার ওয়ার্ডে (পেয়িং বেড) কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সোনিয়া আক্তার সাত মাসের অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় করোনা পজেটিভ হয়েছেন।

কয়েকদিন আগেই আবার তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ফলে তাকে (সোনিয়া) ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হয়েছে।

শনিবার সকালে শেবাচিম হাসপাতালের নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট সেলিনা আক্তার বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের মধ্যে ১১১ জন অন্তঃস্বত্তা হয়ে পরেছেন।

এদেরমধ্যে পর্যায়ক্রমে ৪০ জনকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দায়িত্বপালন করা অন্যসব অন্তঃস্বত্তা সেবিকাদের ঝুঁকিপূর্ণ কোন কাজ দেওয়া হচ্ছেনা। তাদের প্রতি আমরা অন্যরা সবাই যতœবান রয়েছি।

 

শামীম আহমেদ : গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও গাঁজাসহ একাধিক মাদক মামলার দুই পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার এসআই অহিদ মিয়া, এএসআই পিনাকি সিকদার ও আসাদুল ইসলাম, গৌরনদীর দক্ষিণ পালরদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা মাদক ব্যবসায়ী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেন।

এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১০২ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

ওসি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত বিশ্বজিৎ বনিকের (৩৪) বিরুদ্ধে মাদক আইনে মুলাদী থানায় চারটি ও বরিশাল বিমানবন্দর থানার একটি এবং কাওসার খানের (৪২) বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানার একটি ও গৌরনদী মডেল থানা একটি মাদক মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ওইদিনই গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।