বরিশালে শীতে কাঁপছে মাদ্রাসার এতিম শিশুরা। বিশেষ করে কম্বল কিংবা গরম কাপড়ের অভাবে নগরীর পলাশপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর সড়কের গুচ্ছগ্রামের মধ্য কালবার্ড সংলগ্ন রহমানিয়া কিরাতুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছে। গায়ের কাপড় ও একটি পাতলা খাতা চলমান সর্বনিম্ন তাপমাত্রার এই শীত সামলাতে পারে না শিশুরা।

অন্যদিকে একটি এতিমখানায় যে পরিমাণ এতিমসহ শিক্ষার্থী থাকে, সেই পরিমাণ কম্বল কেনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসা কতৃপক্ষ। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র উচ্চ পর্যবেক্ষক মাজহারুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল ৯টায় বরিশালে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন ১০.৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

একই সঙ্গে সকালে ২ নটিক্যাল মাইল বেগে বাতাস বয়ে গেছে। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি বরিশালে। এতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভ‚ত হয়েছে। এর আগে শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি আরো বলেন শীতের এ তীব্রতা আরো ৪/৫ দিন থাকার সম্ভবনা রয়েছে তবে মাঝে মধ্যে এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে তারপরে শীতের তীব্রতা থাকার পর এ অঞ্চলে বজ্র বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কনকনে এই শীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির ভোগান্তি দেখা দিয়েছে মারাত্মকভাবে।

বিশেষ করে মাদ্রাসার এতিম শিশুরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর পলাশপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর সড়কের গুচ্ছগ্রামের মধ্য কালবার্ড সংলগ্ন রহমানিয়া কিরাতুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এতিমসহ শতাধিক শিশু আবাসিকে থেকে পড়ালেখা করছে।

সেখানে মাত্র ১০টি কম্বল রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসা কতৃপক্ষ। মাদ্রাসা কতৃপক্ষ আরো বলেন, বর্তমানের মাদ্রাসার ছাত্র বেশি থাকায় তাদের তিন বেলা খাবার যোগার করতে খুব সমস্যা হয়ে দারিয়েছে। তার মধ্যে দেখা দিয়েছে শীতের তীব্রতা।

এখন এই শীতে ছোট ছোট এতিম শিশুদের নিয়ে কি করবো তা বুঝতে পারছিনা। কোন ব্যাক্তি যদি এই এতিম শিশুদের দিকে তাকিয়ে কিছু কম্বল অথবা শিশুদের পোষাক দিতেন তাহলে এই এতিম শিশুরা শীতের হাত থেকে একটু রক্ষা পেতেন। এই মাদ্রাসায় এতিমরা কম্বল ও গরম কাপড়ের কারণে প্রচন্ড শীতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে খাদ্য ও অর্থের সংকট রয়েছে। তাই বিত্তবান কিংবা প্রশাসন থেকে এতিম শিশুদের রক্ষায় গরম কাপড় নিয়ে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন ওই মাদ্রাসা কতৃপক্ষ। অন্য দিকে মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাইর কাজ শেষ হলেও এখনও বাকি রয়েছে ৪র্থ তলার নির্মাণসহ ভবনের বাকি কাজ।

 

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ঢুকে এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সংঘটিত এই ঘটনায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। জানা গেছে, আটক যুবকের নাম মেহেদী হাসান অভি (২৮), সে বাকেরগঞ্জ উপজেলার মজিবর রহমানের ছেলে।

মেহেদী হাসান অভি জানান, প্রাক প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে একটি পুনতদন্তের বিষয়ে খোঁজ নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ২২২ নম্বর কক্ষের জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার অং মাচিং মারমার কক্ষে যান তিনি।

ওই কক্ষে কথা বলার সময় বাদানুবাদের এক পর্যায়ে সেখানে থাকা নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) অংছিং মারমা তাকে (অভি) একটি চড় দেয়। তিনিও তাকে পাল্টা একটা চড় মারেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীরা তাকে ধরে একটি কক্ষে নিয়ে বেদম মারধর করে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে এনডিসি’র বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলতে রাজী হননি তিনি। জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, এক যুবক অফিসে এসে এক কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং হুমকি দেয়।

সে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে। ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, হুমকি এবং হামলার অভিযোগে মামলা করার কথা বলেন তিনি।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি একেএম আরিচুল হক জানান, অভি নামের ওই যুবক অবৈধভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সার্টিফিকেট শাখায় ঢুকে অন্যায় কোন কাজের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে।

যেটা অফিশিয়াল আইন বিরোধী। কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। আটক যুবক তাকে মারধরের অভিযোগ করেনি বলে জানান ওসি।

 

বরিশালের মুলাদীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান মেহেনাজ আক্তারকে (১৫) বিষপানে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত মেহেনাজের বাবা মাহাবুব হাওলাদার বাদী হয়ে বুধবার দিবাগত রাতে মুলাদী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার একমাত্র আসামি মেহেনাজের মা তাসলিমা বেগমকে পুলিশ প্রহরায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুলাদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম।

তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত বুধবার সকালে স্বামী মাহাবুব হাওলাদারের সঙ্গে স্ত্রী তাসলিমা বেগমের ঝগড়া হয়। মাহাবুব কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে প্রথমে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেহনাজ আক্তারকে বিষপান করিয়ে নিজেও বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাসলিমা।

এতে বাড়িতেই মেহনাজের মৃত্যু হয়। প্রতিবেশীরা তাসলিমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে পুলিশ প্রহরায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নিহতের লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই নিহতের নিহতের বাবা মাহাবুব হাওলাদার বাদী হয়ে তার স্ত্রী তাসলিমা বেগমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

স্বদেশপ্রত্যাবর্তন দিবসে বরিশালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন।

বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে নগরীর সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত জাতীর জনকের প্রতিকৃতিতে প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর আগে, দিবসটি উপলক্ষে সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

 

অপর দিকে বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত) বেলা সাড়ে ১১টায় কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃর্তিতে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এরপরে বরিশাল মহানগর যুবলীগের আহবায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম,যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন,মেজবা উদ্দিন জুয়েল সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার গঠনের পর এবার মন্ত্রিসভা গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরই মধ্যে তাদেরকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন করা হয়েছে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য।

বুধবার রাতে গণমাধ্যমে বিষয়টি জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

এবার মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন ২৫ জন। আর প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ১১ জন।

এরআগে বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমতি দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বিকালে মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমোদনের পর মন্ত্রিসভা গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ হিসেবে ডাক পেয়েছেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, ফারুক খান, আবদুর রহমান, মোহাম্মদ এ আরাফাত।

আগের মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন এবং নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণের জন্য যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তারা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আব্দুর রাজ্জাক ও তাজুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান খান, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আ. ক. মোজাম্মেল হক, ড. হাসান মাহমুদ, নসরুল হামিদ বিপু, মহিবুল হাসান নওফেল, সাধন চন্দ্র মজুমদার, ফরহাদ হোসেন, শাহরিয়ার আলম, জুনায়েদ আহম্মেদ পলক।

পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন যারা-

ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫), নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪), মো তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), আনিসুল হক (বাহ্মণবাড়িয়া-৪), মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭), মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪), সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১), র, অ, ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩), মো. আব্দুর রহমান (ফরিদপুর-১), নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫), আব্দুস সালাম (ময়মনসিংহ-৯), জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৯), ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর-১), মো. ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২), মো. জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩), নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬), ডা দীপু মনি (চাঁদপুর-৩) ও আসাদুজ্জামান খান (ঢাকা-১২)।

এছাড়া টেকনোক্রেট কোটায় পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সামন্ত লাল সেন।

প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন যারা

বেগম সিমিন হোমেন রিমি (গাজীপুর), নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩), জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩), মোহাম্মাদ আলী আরাফাত (ঢাকা ১৭) মো. মহিববুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর-২), জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫), জনাব কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), বেগম বুমানা আলী (গাজীপুর-৩), শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২) ও আহসানুল ইসলাম টিটু (টাঙ্গাইল-৬)।

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পাশাপাশি তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য সম্মতিও জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনেও সম্মতি দিয়েছেন।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও গণ্য করার কথা বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

এর আগে সকাল ১০টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ নবনির্বাচিত ২৯৮ জন সংসদ সদস্য। তার আগে সংসদ সদস্য হিসাবে প্রথমে শপথ গ্রহণ করেন বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী। এরপর স্পিকার হিসেবে তিনি শেখ হাসিনাসহ অন্য সংসদ সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ীরাও এদিন শপথ নিয়েছেন।

সংসদ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতা হলেন তিনি। একাদশ সংসদে মতিয়া চৌধুরী ছিলেন সংসদ উপনেতা। এবারও এ পদে তাকে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। চিফ হুইপ হয়েছেন গত সংসদে এ পদে দায়িত্ব পালন করা নূর-ই-আলম চৌধুরী।

শপথ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ গঠিত হয়। বাকি ছিল প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়টি। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেওয়ার পর যে কর্মকাণ্ডও সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাকি নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকালে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হবে বলে জানা গেছে।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২২২টি আসনে বিজয়ী হয়েছে নৌকার। জোট শরিকরাও নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে দুটি আসন পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১; কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি আসন। প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসনে বাগিয়ে নিয়েছেন। যদিও তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতা।

 

জাতীয় সংসদ নিবাচনের আগমুহূর্তে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরিশালের সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

বরিশাল সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থানকালে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। এর আগে সার্কিট হাউজের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশ বাস্তবায়নে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা হয়।

পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, আমরা দক্ষিণাঞ্চলবাসী অবহেলিত ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর পদ্মাসেতু থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত কোথাও কোন উন্নয়ন বাকি নেই। তাই এই অঞ্চলের জনগণ তাকে অভ্যর্থনা জানাবে। পাশাপাশি তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবে।

বরিশাল সদর আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদ ফারুক বলেন, আমরা আজকে (বুধবার) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেছি। আগামী শনিবার জেলা ও উপজেলার নেতাদের নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণ করবো। প্রধামন্ত্রী বরিশালে এসে এই সরকারের আমলে দক্ষিণাঞ্চলে কি কি উন্নয়ন হয়েছেন তা বলবেন। পাশাপাশি নৌকার প্রার্থীদের জনগণের সামনে পরিচয় করিয়ে দেবেন। এটাই তার মুখ্য উদ্দেশ্য।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, সহ-সভাপতি ও বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, মহানগর সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৯ ডিসেম্বর বরিশাল সফর করবেন। ওইদিন বিকেল ৩টায় বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। তার আগমনের খবরে উজ্জীবীত স্থানীয় নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের আগমুহূর্তে দলীয় প্রধানের এমন আগমনে দক্ষিণাঞ্চলে নৌকার পক্ষে ভোট বিপ্লব ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।

 

বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহিদ ফারুকের পক্ষে মিছিল এবং গণসংযোগ করেছে নেতাকর্মীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর দক্ষিণ সদর রোডের নির্বাচনী কার্যালয় চত্বর থেকে মিছিল ও গণসংযোগ শুরু করেন তারা।

প্রতীক পাওয়ার পর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সার্কিট হাউজের সামনে থেকে নৌকার পক্ষে একটি মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। মিছিলটি সদর রোড গিয়ে শেষ হয়। পথিমধ্যে পথচারীদের সঙ্গে গণসংযোগ করে নৌকার লিফলেট বিতরণ করেন তারা। এ সময় বরিশালের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আবারও নৌকায় ভোট চান আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

গণসংযোগকালে মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বরিশালের উন্নয়ন তরান্বিত করতে আবারও নৌকা বিজয়ী করা প্রয়োজন। নৌকা বিজয়ী হলে বরিশালে ভোলার গ্যাস আসবে। সার্বিক উন্নতি হবে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকা বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন….

 

বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত পেতে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়। তার আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে হাইকোর্টে গিয়ে নিজের পক্ষে রায় পেলেও মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগে আটকে যায় সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা। মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার তা স্থগিত করে দেন।

পরে সাদিক আবদুল্লাহর আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, চেম্বার কোর্ট বাতিল করেছেন। এখন আমরা নিয়মিত লিভ টু আপিল করবো। বরিশালের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দলের মনোনয়ন না পেয়ে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। গত ১৫ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিলেন।

কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ তুলে তার মনোনয়ন বাতিল চেয়ে পরে ইসিতে আপিল করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম। শুনানি শেষে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে কমিশন।

অন্যদিকে জাহিদ ফারুক মামলার বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থিতা বাতিলের আপিল করেছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ। সেই আপিল নির্বাচন কমিশনে নামঞ্জুর করা হয়। ফলে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বহাল থাকে।নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এরপর হাইকোর্টে রিট করেন সাদিক।

সেই আবেদনের শুনানি করে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বরিশাল-৫ আসনের এ স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে এরপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম। সেই আবেদনেই হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এখন সাদিক আব্দুল্লাহ পাল্টা আবেদন করেছেন।

 

ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীমের ট্রাক প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে দুপক্ষের মারামারিতে রফিকুল ইসলাম (৫২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুইজন।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার সিরতা কোনাপাড়া হুতারবাড়ির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রফিকুল স্থানীয় চর ভবানীপুর কোনাপাড়া এলাকার মৃত নুর হোসেনের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কোনাপাড়া হুতারবাড়ির মোড়ে আইনুদ্দিনের দোকানের সামনে ট্রাক প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপনকে কেন্দ্র করে নিহতের ছোট ভাই মো. ফারুকের (৪০) সঙ্গে অপর ভাই ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে রাজু (২৮) ও সাজুদের (২৫) কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কিলঘুসির ঘটনা ঘটে।

পরে রফিকুল ঘটনাস্থলে এলে কিলঘুষি মারা শুরু করে ভাতিজারা। একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। ওসি আরও জানান, দুই পক্ষই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক।

তবে কে এই ক্যাম্পের নেতৃত্ব দেবে মূলত এ নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি। কারণ নিহত রফিকুলের সঙ্গে ভাতিজাদের আগে থেকেই বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ চরে আসছিল। এছাড়াও রফিকুল এর আগে দুইবার স্ট্রোক করেছিল বলেও জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। ঘটনার তদন্ত চলছে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।