বরিশালের বাবুগঞ্জে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মিষ্টি বিতরণকে ঘিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রবিউল ইসলাম (৩০) নামে এক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আগরপুর ইউনিয়নে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করছিলেন। এসময় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোঃ আউয়াল হোসেন, মোঃ রাসেল এবং মোঃ শাকিলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে একই ইউনিয়নের রহমান হাওলাদারের পুত্র সেচ্ছাসেবক দলনেতা আউয়াল হাওলাদার দুলাল হাওলাদারের পুত্র রবিউল ইসলামের ওপর হামলা চালায়।

 

হামলায় ধারালো ছুরি দিয়ে রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে ও আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রেরা এসআই জাহিদ হোসেন ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

নিহতের পরিবার দ্রুত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি জানিয়েছে।

 

বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ সহিদুর রহমান। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

নানা উপায়ে অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম, প্রকৌশলীদের অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে করে তিনি এই সম্পদের অধিকারী হয়েছেন।

প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৫ কোটি টাকারও বেশি! অথচ তিনি চাকুরীতে বহাল বাবদ এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে সর্বসাকল্য যে বেতন পেয়েছেন তার বিপরীতে স্বাভাবিকভাবেই তার এই বিপুল সম্পত্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ জনমনে। অবৈধ পন্থায় দূর্নীতি করে তিনি বরিশাল নগরীর সার্কুলার রোডে গড়ে তুলেছেন ৫ তলা আলীশান বাড়ী। বিএম স্কুল রোডে ট্রাফিক অফিসের বিপরীতেও রয়েছে আরেক আলীশান বাড়ী। গ্রামের বাড়ী গৌরনদীতে গড়েছেন ব্যাপক সম্পদ।স্ত্রী, নিকটাত্নীয়সহ নামে বেনামে গড়েছেন এসব সম্পদ।

অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে। দুর্নীতি-অনিয়ম কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এখানে। নানা উপায়ে অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম, প্রকৌশলীদের অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির উৎসব চলছে এই দপ্তরে।

জানা যায়, কয়েকজন ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম কাজ পাইয়ে দেওয়া, নিজে নেওয়া, বিল ও জামানতের চেক পরিশোধের ক্ষেত্রে গুনে গুনে বুঝে নেন কমিশন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, বরিশালের বাবুগঞ্জ, আগৈলঝাড়া, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদীতে কারিগরি স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপনের কাজের বাবুগঞ্জ ও আগৈলঝাড়ার কারিগরি স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপনের দুইটি কাজ তিনি বসুন্ধরা হাউজিং (প্রাঃ) লিঃ নামক ঠিকাদারী লাইসেন্সের মাধ্যমে নিজে ভাগিয়ে নেন। পরবর্তীতে ৩২ কোটি টাকার কাজ দুইটি ৭% কমিশনে বিক্রী করে দেন। অবশ্য তিনি বরিশালে যোগদানের পর থেকেই অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন এবং বাছাই করা উন্নয়ন কাজগুলো নিজেই বিভিন্ন কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে বিক্রিী করে দিয়ে আসছেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের প্রকৌশলী মফিকুল ইসলাম বরিশাল এসেছিলেন বাবুগঞ্জ, আগৈলঝাড়া, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদীতে কারিগরি স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপনের কাজের কমিশন নিতে। বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বরিশাল সার্কিট হাউজে তার সাথে অবস্থান করতেছিলেন। এমন সময় কমিশনের অগ্রিম পয়ত্রিশ লক্ষ টাকা তার দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের নিকট জমা দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিনিধি। নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল কমিশনের টাকা নিয়ে কম্পিউটার অপারেটর রাশেদকে বরিশাল সার্কিট হাউজে আসতে বলেন। কিন্তু কম্পিউটার অপারেটর রাশেদ সমুদয় টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান, বন্ধ করে ফেলেন ব্যবহৃত মোবাইল। তার এমন কান্ডে নাজেহাল হয়ে পড়েন নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল।

শুরু হয় তুলকালাম কান্ড, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের গ্রামের বাড়ী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারী গাড়ীতে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে আনা হয় স্ত্রী, সন্তান ও ভাইকে। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের দেয়া হুমকি-ধামকি। কিন্তু কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের স্ত্রী পাল্টা হুমকি ছেড়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেন- আমার স্বামীকে খুজে পাচ্ছি না, তার কিছু হলে আমি আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এতে ঢের নাজেহাল হয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল- ছেড়ে দে মা কেদে বাচি অবস্থায় কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের স্ত্রী, সন্তান ও ভাইকে ফের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারী গাড়ীতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার গ্রামের বাড়িতে পৌছে দেন।

সকলের নিকট সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের কমিশন দূর্নীতি। বরিশালে যোগদানের পর থেকেই সে এভাবেই দূর্নীতির দূর্গ গড়েছেন। তার দূর্নীতির দূর্গ সচল রাখতে তিনি ঢাকাস্থ সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আলতাফ হোসেনকে প্রতি সপ্তাহে ইলিশের ঝুড়ি পাঠাতেন। এরফলে তিনি কোন নিয়মের তোয়াক্কা করেন না।

জানা যায়, বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, সমঝোতার নামে নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা অনৈতিক সুবিধা আদায় করছেন। শিক্ষা প্রকৌশল সংশ্লিষ্টরা জানান, অসাধু প্রকৌশলী-ঠিকাদার সিণ্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ায় বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ঠিকাদারদের থেকে প্রতি প্রকল্পের নির্ধারিত অনৈতিক ঘুষ ও পার্সেন্টিস নিয়ে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ।

তিনি বর্তমানে নিজেকে জামায়াত সমর্থিত কর্মকর্তা দাবী করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল কতৃক অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের গত ২৭/০৭/২০২২ ইং ঘোষিত আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এসব বিষয়ে দুদক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ অনুসন্ধান করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দপ্তরের দুইজন কর্মকর্তা জানান, বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে ৭-৮ জনের একটি ঠিকাদার সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তারা বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের ছত্রছায়ায় থেকে বড় বড় প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের এসব কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোটা অঙ্কের কমিশন দিচ্ছেন।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, বরিশাল জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তের নির্বাহীকে ম্যানেজ করে অসাধু ঠিকাদার সিণ্ডিকেট অনেক প্রকল্পের কাজ হাতিয়ে নিয়েছে। এই প্রকৌশলী এতটাই বেপরোয়া ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তাদেরকে প্রকল্পের কাজগুলো দিয়েছেন। তবে এই ঠিকাদাররা কাজ করে না, চড়া দামে সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে প্রকল্প বিক্রি করে দেয়। এতে করে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম ও তার সকল দুর্নীতি-অনিয়মের একান্ত সহযোগী উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, শহিদ-আশিক মিলে শিক্ষা প্রকৌশলে কায়েম করেছে অনিয়মের রাম-রাজত্ব। তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্যের কারণে সাধারণ ঠিকাদাররা অতিষ্ঠ। তবে প্রভাবশালী ৬-৮ জনের ঠিকাদাররাই এখানে সর্বেসর্বা। সাধারণ ঠিকাদারদের নানাভাবে হেনস্থা করেন তারা।

এসকল অনিয়ম-দুর্নীতির উৎসবের প্রধান সেনাপতি হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ সহিদুর রহমান। অনেক ঠিকাদারের মতে- ডাবল শহীদ আর আশিক বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মালিক। গণমাধ্যম থেকে তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেন নাই।

তবে নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের সকল দুর্নীতি-অনিয়মের একান্ত সহযোগী উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান এসকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তারেক আনোয়ার জাহেদী বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যে কারো কোন দুর্নীতি-অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেব না, তদন্ত করে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

 

 

ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে খুলনায় আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিএনপির অভিভাবক, সাবেক হুইপ ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং বরিশাল সদর-৫ আসনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. মোঃ মজিবর রহমান সরোয়ার।

সমাবেশে তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, শ্রমিক অধিকার, গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার এবং মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপির চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের একটি গৌরবময় দিন। এই দিন সেনা-জনতার ঐক্য দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ধারাকে আরও শক্তিশালী করে।”

প্রাণপ্রিয় এ নেতার সফরকে ঘিরে খুলনায় তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। বরিশাল জেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তার সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সমাবেশ শেষে বরিশাল থেকে আগত নেতাকর্মীরা জানান, অ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারকে কেন্দ্র করেই বরিশালে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। তার নেতৃত্বে সংগঠনের তৃণমূল আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

 

 

 

বরিশাল নগরীর বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে হোসেন হাওলাদার ও মোঃ সাব্বির নামের দুই যুবককে আটক করেছে কাউনিয়া থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- নগরীর ৫ নং ওয়ার্ডস্থ পলাশপুর এলাকার মাসুম হাওলাদারের ছেলে হোসেন হাওলাদার ও একই এলাকার মোজাম্মেল শরীফের ছেলে মোঃ সাব্বির শরীফ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বেলতলা খেয়াঘাট সংলগ্ন সুন্দরবন শিপইয়ার্ডের ভিতরে ১৪/১৫ জন যুবক মিলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এ সময় হুলস্থুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হোসেন ও সাব্বিরকে আটক করা হয়।

আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বেলতলা খেয়াঘাট সংলগ্ন সুন্দরবন শিপইয়ার্ডের ভিতরে ১৪/১৫ জন যুবক মিলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। পরে থানা পুলিশ গিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আলী হোসেন ও মোঃ সাব্বিরকে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনেই স্লোগান দেওয়ার বিষয়টি স্বিকার করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার তাদের কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কোতয়ালী মডেল থানায় গেলে ও ওসির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে কল দিলে কয়েক দফা ঘুরিয়েও কোন তথ্য দেননি।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ||
বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতাশা এলাকার সাপানিয়া এলাকায় বালু তোলার কাজে নিয়োজিত এক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সধারী ছাদ্দাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালি উত্তোলনের কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের দাবি, বিএনপি হেভিওয়েট নেতার অনুসারী হিসেবে পরিচিত কোটন, আবেদ, নোমান, আলতাব, তাবিব ও মিলন নামের কয়েকজন তাদের কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে আসছিলো। এর আগেও বিসিক এলাকায় বালি ফেলার সময় অভিযুক্তরা তাদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিল। সম্প্রতি মতাশার এলাকায় পুনরায় কাজ শুরু হলে তারা আবার চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল রাত ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র ও হাতুড়ি নিয়ে ড্রেজার পাইপসহ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে প্রায় ছয় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৃত ব্যক্তির নাম দিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার আসামি চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহ আলম চুন্নু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এরপরও তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
শাহ আলম চুন্নু বরিশাল সদর উপজেলা ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের সুবিধাভোগী দোষর ও ৩নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য। দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন করে তার রাজনৈতিক পরিচয়। আওয়ামী লীগের সময় বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম জাকিরের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন সময়কালীন উপজেলা রাজনৈতিক কমিটির সমন্বয়ক ছিল দুর্নীতিবাজ ও প্রতারক শাহ আলম চুন্নু। বর্তমানে হয়ে গেছে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি। নিজের অপরাধ ও দুর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিএনপির নাম ব্যবহার করে চলছে। তবে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ বিষয়টির ব্যাপারে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।
ইউপি সদস্য থাকা কালীন সময়ে গত বছর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল চুরির অভিযোগ স্মারক নং-৪৬.০০.০৬০০.০১৭.০০৩.২০-১৫৬ আদেশ বলে ইউপি সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ শাখার সহযোগিতা ও হাই কোর্টের রিটপিটিশনের মধ্যমে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে, তার পিতা ডিলার ইউসুফ আলী সিকদার চাল চুরির অভিযোগে ডিলার শিপ থেকে বহিস্কার হওয়ার পরে হাই কোর্টে রিট পিটিশনের মাধ্যমে ফের ডিলার শিপের দায়িত্বে আছেন। প্রকল্প আত্মসাতের প্রমাণিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অন্ধকারে পরে আছে। দুদকের করা মামলা চলমান থাকা কলীন সময়ে ফের অর্থ বছরে তিনটি প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে কমিটি দিয়েছে, চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ মেহেদী হাসানের সার্বিক সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী অফিসে। এমনকি গত বছর রাস্তার নাম দিয়ে প্রকল্প নিয়ে কাজ না করে, বিল উত্তোলণ করা রাস্তা ফের চলতি বছরে ওই রাস্তায় প্রকল্প দিয়েছে দুর্নীতিবাজ ইউপি সদস্য শাহ আলম চুন্নু।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সিদ্ধ হস্ত সচিব মোঃ মেহেদী হাসান অনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতা ও সমর্থনের অভিযোগ উঠেছে।
মৃত ব্যাক্তির নামে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, সাহেবেরহাট শাখায় হিসাব নং-০৩৩১৯০১০১৫৪০৫ থেকে শ্রমিক মজুরি বাবদ প্রতারণার আশ্রায়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও অপরাধমূলক অসদাচরনের মাধ্যমে চেক/ভাউচারে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের সতত্যা পেয়ে গত বছর তার বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সমম্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মনিরুন নেছা।

মামলার এজাহারের তথ্য মতে, মো. শাহ আলম (চুন্নু) দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত মামলায় শ্রমিক মজুরি বাবদ ১৪ হাজার ৫শত টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি মো. শাহ আলম (চুন্নুর) বিরুদ্ধে ইজিপিপি প্রকল্পের শ্রমিক আবু সুফিয়ানের মৃত্যুর পর তার নামীয় সোনালী ব্যাংক পিএলসি সাহেবের হাট শাখা থেকে প্রতারণার আশ্রায়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও অপরাধমূলক অসদাচরনের মাধ্যমে চেক/ভাউচারে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাত দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুনীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় মামলা রুজু হয়।

দুদকের আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায় বলেন, ‘দুদকের করা মামলা অজামিনযোগ্য। শাহ আলম চুন্নুর বিরুদ্ধে মৃত্যুর ব্যক্তির নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক যদি মনে করে তবে তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করতে পারে। এক্ষেত্রে দুদক চাইলে পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারে।’
মামলার পরও শাহ আলম চুন্নুকে গ্রেপ্তার করা হয়নি জানতে দুদকের সমম্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহপরিচালক মনিরুন নেছার সঙ্গে একাধিক বার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে উপ-পরিচালক এইচ.এম আখতারুজ্জান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনি আদালতে আমাদের মামলার কপি দিয়ে আরও একটি মামলা করেন।
দুদকের মামলার বিষয়ে পরিচালক মোঃ মোজাহার আলী সরদার বলেন, আপনি বিষয়টি উপ-পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করেন।
সম্প্রতি দুর্নীতিবাজ ইউপি সদস্য শাহ আলম চুন্নু টিসিবি ডিলারশিপের জন্য শিকদার ট্রেডার্স প্রোপাইটার তার স্ত্রী মোসা: হাসিনা বেগমের নামে আবেদন করে টিসিবির কর্মকর্তাদের ভুল বুঝিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরিত চিঠিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।
উপজেলা পরিষদের সূত্রমতে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের সার্বিক সহযোগিতা ও চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম হাওলাদারের জোরালো সুপারিশের পরিপেক্ষিতে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ এবং বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মচারী সিকদার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটার মোছাঃ হাসিনা বেগম প্রকৃত মুদি ব্যবসায়ী না হওয়া সত্ত্বেও মিথ্যা তথ্য সমৃদ্ধ প্রতিবেদন টিসিবির প্রধান কার্যালয় প্রেরণ করেন।
তবে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে টিসিবি সূত্র দাবি করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাহ আলম চুন্নুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে দুই একটি বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক । বরিশাল সদর উপজেলার তালতলি বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা এখনও কোণঠাসা প্রভাবশালীদের দাপটে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের শাসনামলে যারা প্রভাব খাটিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন, তারা এখন খোলস পাল্টে বিএনপির অনুসারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার এক বছর তিন মাস পার হলেও এসব নেতার প্রভাব এখনও বাজারে অটুট রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পলাতক বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা এখনও তালতলি বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক খাজনা আদায় অব্যাহত রেখেছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও এসব প্রভাবশালী নেতা ও তাদের অনুসারীরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ওই গোষ্ঠীর নেতা কালু সিকদার ও তার অনুসারীরা উপজেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম আব্বাস আকন—এর সঙ্গে ফুলের তোড়া দিয়ে দেখা করে নিজেদের বিএনপি অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার হাতেও ফুল দিয়ে ‘নতুন পরিচয়ে’ আত্মপ্রকাশ করেছেন তারা।
স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কালু সিকদার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক সিটি মেয়র ও সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার সঙ্গে থাকা মিরাজ, মজিবুর, নাইম, সেলিম, সবুজ, লোকমান, নিজাম, ইয়ারসহ অর্ধশতাধিক সহযোগী তালতলির মাছ ব্যবসা থেকে চাঁদা আদায় করতেন। বর্তমানে তাদের মধ্যে কয়েকজন আত্মগোপনে এবং কয়েকজন কারাগারে রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিএনপি নেতা বলেন,“ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর টাকার জোরে ও ফুলের রাজনীতির আশ্রয় নিয়ে কালু এখন বিএনপির কাঁধে ভর করেছে। অথচ এদের হাতেই আগে বিএনপি–জামায়াতের অনেক কর্মী হয়রানির শিকার হয়েছেন।”
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ নুরুল আমিন। তিনি বলেন,“আমার জানা মতে আওয়ামী লীগের কেউ আমাদের সঙ্গে চলতে পারে না। যদি এমন কেউ থেকে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম আব্বাস আকন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন,আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি, পরে কথা বলব।”

 

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশালে কর্মরত ৩৫টি সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (সোমবার) দুপুর ২টায় বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোঃ দেলোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং। এসময় উপস্থিত ছিলেন ৩৫ সংগঠনের নেতা সিনিয়র সাংবাদিক মামুনুর রশীদ নোমানী,শেখ শামিম,তরিকুল ইসলাম,এস এম আলামিন,বেলাল সিকদার,এস আলালসহ অর্ধ শতাধিক সাংবাদিক।
মতবিনিময় সভায় বরিশালের সংবাদমাধ্যম অঙ্গনের বিভিন্ন সমস্যা, তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ, পেশাগত নিরাপত্তা, সাংবাদিকদের কল্যাণ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিত যোগাযোগের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। প্রশাসন ও গণমাধ্যম একসাথে কাজ করলে সমাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও শক্তিশালী হবে।”
সভায় উপস্থিত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার, তথ্যপ্রবাহে সহজতা এবং সংবাদপেশার মানোন্নয়নে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

 

‘বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি’র একজন সহযোগী সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ৯ নভেম্বর রোববার সরকারি ডাকযোগে তিনি এই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগকারী সহযোগী সদস্যের নাম এম সাইফুল ইসলাম। তিনি দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এবং বরিশাল বাণী ডটকমের বার্তা সম্পাদক পদে কর্মরত।
পদত্যাগপত্রে এম সাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, গত ১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোন কারন ছাড়াই বিআরইউর সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ ফোন দিয়ে আমাকে ভৎসনামূলক কথাবার্তা বলেন। তার কথা মত না চললে সদস্য পদ ‘বক কাটা’ যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। পরদিন আমি সহযোগি সদস্য পদ থেকে অব্যাহিত চেয়ে একটি আবেদন নিয়ে বিআরইউতে যাই। এ সময় সাধারণ সম্পাদক আমার অব্যাহতির আবেদনপত্রটি রাখেননি। আমি তাকে রাখার জন্য অনুরোধ করলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং বের হয়ে যেতে বলেন। এতে উপস্থিত সদস্যদের সামনে আমি অত্যন্ত অপমানিত ও লজ্জিত বোধ করেছি। তাই অব্যাহতির আবেদনপত্রটি সরকারি ডাক যোগে পাঠিয়েছি। এদিকে সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের একজন ব্যুরো প্রধানকে সহযোগী সদস্য পদ থেকে কোন মিটিং, কারণ দর্শানো ও তদন্ত ছাড়াই অগঠণতান্ত্রিকভাবে অব্যাহতিপত্র পাঠানো হয়। যাতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সাংবাদিক সমাজে। এ ঘটনায় বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন উদ্বেগ জানিয়ে বিষয়টির লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরইউর একজন সিনিয়র সদস্য।

ঝালকাঠি-২ (ঝালকাঠি-নলছিটি) আসনে বিএনপির প্রার্থী ইসরাত সুলতানা (ইলেন) দলের এক নেতার বাসায় শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ককে সঙ্গে নিয়ে শহরের মহিলা কলেজ রোডে সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেনের বাসায় যান। ১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে সেখানে প্রশ্ন তোলেন উপস্থিত নেতা-কর্মীরা।

ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রাজনীতিতে এ নিয়েওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহাদাৎ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরাত সুলতানার উদ্দেশে বলেন, দলের দুঃসময়ে যাঁরা নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁদের পাশে ছিলেন না ইলেন ভুট্টো। বরং মনোনয়ন পেয়ে তিনি এমন এক প্রার্থী হয়েছেন, যাঁকে দেখে আওয়ামী লীগের নেতারাই বেশি খুশি।

শাহাদাৎ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না। কিন্তু দলের দুঃসময়ে যেসব নেতা-কর্মী জেল খেটেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন, তাঁদের আপনি জনসংযোগে পাশে রাখুন। নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর রাখুন।’ এ সময় ইসরাত সুলতানাকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়।এরপর গতকাল দুপুরে ইসরাত সুলতানা নেছারাবাদ কায়েদ সাহেব হুজুরের কবর জিয়ারত শেষে গণসংযোগ ও ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন।

গত বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়া হায়দার (স্বপন), দলটির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জীবা আমিনা আল গাজীর রাজধানীর বাসায় দেখা করে দোয়া চান ইসরাত সুলতানা। তাঁদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় জীবা আমিনা আল গাজী এক-এগারোর সময় সংস্কারবাদী হিসেবে ইসরাত সুলতানার সমালোচনা করেন। তিনি ইসরাত সুলতানাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কোন আন্দোলন-সংগ্রামে দলের নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন? ২০১৮ সালে আপনি দলের মনোনয়ন পেয়েও কেন নির্বাচন করলেন না? সে সময় আমি বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়েছি।’এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর পক্ষে নেতা-কর্মীরা প্রচার চালিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপি ইসরাত সুলতানাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরাত সুলতানা বলেন, ‘আমি চেষ্টা করছি সবার সহযোগিতা নিয়ে নির্বাচন করার। আমার প্রত্যাশা বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ ধানের শীষের পক্ষে সমর্থন দিয়ে বিপুল ভোটে আমাকে বিজয়ী করবেন। দলীয় কাউকে আমার প্রতিপক্ষ মনে করি না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে সবাই সম্মিলিতভাবে দল ও দেশের স্বার্থে মাঠে নেমে পড়বেন। আমি সবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’