নিজের শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে যাওয়া সেই ব্যাংকার বাসায় ফিরেছেন। তবে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) তার শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না।

ছিল না মায়ের মুখে লাগানো অক্সিজেন মাস্ক। টানা ছয় দিন হাসপাতালে থেকে করোনাভাইরাসমুক্ত হয়ে ঘরে ফিরলেন রেহানা পারভীন।
ছেলে ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জিয়াউল হাসান টিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে মাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এখন মা সম্পূর্ণ সুস্থ।

তিনি আরও বলেন, যে মোটরসাইকেলে করে মাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়েছিলাম। আজ সেই মোটরসাইকেলে করে মাকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। এটি আমার কাছে পরম আনন্দের।


পিঠে সিলিন্ডার বেঁধে মাকে নিয়ে ১৭ এপ্রিল হাসপাতালে যান ছেলে
তিনি ও তার ছোট ভাই রাকিবুল হাসান ইভান মাকে নিয়ে নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যপাশা গ্রামে ফেরেন। মাকে নিয়ে তাদের এই বাড়ি ফেরাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয় উল্লেখ করে জিয়াউল হাসান জানান, ৬ দিন মুমূর্ষু মাকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রেখে পুরোপুরি সুস্থ করে বাড়ি ফিরেছেন।

জিয়াউল হাসান জানান আরও জানান, শনিবার (১৭ এপ্রিল) তার মা রেহানা পরভীনের অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ অবস্থায় নিজ শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে যে বাইকে করে মাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম, আজ মায়ের ফুসফুসে অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি একই বাইকে। এ যেন আল্লাহর নেয়ামত। এ সময় জিয়াউল হাসান দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১৭ এপ্রিল) লকডাউনের মধ্যে কোনো ধরনের যানবাহন না পেয়ে মোটরসাইকেলে করোনায় আক্রান্ত মাকে নিয়ে নিজের শরীরে মায়ের অক্সিজেন গ্রহণের সিলিন্ডার বেঁধে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন ছেলে জিয়াউল।
এ সময়ে তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশি চেকপোস্টে পড়েন। পুলিশ গাড়ি না থামালেও চেকপোস্টের জন্য মোটরসাইকেলের গতি শ্লথ করলে অক্সিজেন সিলিন্ডার শরীরে বেঁধে মাকে নিয়ে যাওয়া ছবি কেউ তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

জিয়াউল হাসানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাকিম মোল্লা। তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার। ২০২০ সালের প্রথম রমজানে হাকিম মোল্লা মৃত্যুবরণ করেন। নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সূর্যপাশা গ্রামের বাসিন্দা তারা। মা রেহানা পারভীন নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

বরিশাল বিভাগে বিগত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৪৪২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সময়ে মারা গেছেন এক নারী। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, চলতি মাসের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৪৬৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩৫ হাজার ২২৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ভোলা জেলায় সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছে। এই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ২৩৩ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালী। এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ২৯০ জন।

পর্যায়ক্রমে বরগুনায় ৫ হাজার ৪৫০, বরিশালে ৪ হাজার ৯৭৯, পিরোজপুরে ৪ হাজার ৪৩৩ ও ঝালকাঠিতে ৪ হাজার ৮৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য দফতর আরও জানায়, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইনের মজুদ রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভাগে ১ হাজার সিসির ৩৬ হাজার ৩৫০ ও ৫০০ সিসির ৩১ হাজার ৯৮৪ পিস স্যালাইন মজুদ আছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে চলমান লকডাউন কার্যকরে বরিশালে পাঁচ ব্যক্তি ও ছয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) গোটা বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত বিশ্বাস দাস ও নিরুপম মজুমদার।

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় ৫ ব্যক্তি ও ৬ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা ৬ হাজার ৩’শ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। একই সাথে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় করোনা সংক্রমণ রোধে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করেন।

জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে বরিশাল নগরীর স্ব রোড, বাজার রোড, আমানতগঞ্জসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত বিশ্বাস দাস মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩টি ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৮’শ টাকা জরিমানা আদায় করেন।

অপরদিকে বরিশাল নগরীর নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ ও হাতেম আলী চৌমাথা এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার। এ সময় তিনি ৫ ব্যক্তিকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং এক ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।

এসব মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) পৃথক পৃথক টিম সহায়তা প্রদান করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া বহুল বিতর্কিত হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের মতো নিজের প্রথম স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্বেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে শরিয়ত মোতাবেক এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী দাবি করে বরিশাল নগরীর মাহামুদুল হাসান আনসারী।

তিনি (আনসারী) পেশায় ১১নং ওয়ার্ডস্থ বঙ্গবন্ধু কলোনী মসজিদের ইমাম। একই ওয়ার্ডের মাদ্রাসা গলির বাসিন্দা এক প্রবাসীর চল্লিশোর্ধ্ব স্ত্রীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নাটকীয়ভাবে বিয়ে করার কথা বলে শারিরিক সর্ম্পক করে দুইবার গর্ভপাত করানো এবং তার অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়েছে মাহামুদুল হাসান আনসারী। সর্বশেষ নগরীর অভ্যন্তরের একটি মূল্যবান জমি নিজের নামে লিখে নেওয়ার কৌশলে ব্যর্থ হয়ে ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় দুই সন্তানের জননী ওই নারী কোতয়ালী মডেল থানায় পঞ্চাশোর্ধ্ব আনসারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আজ শুক্রবার সকালে অভিযোগের তদন্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই ওয়ার্ডে পুলিশ কর্মকর্তা রুমা আক্তার বলেন, ভূক্তভোগী নারীকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে দেয়ার জন্য থানায় আসতে বলা হয়েছে।

ভূক্তভোগী ওই নারী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকাকালীন ২০১৩ সালে তার বাসায় গিয়ে দুই শিশু পুত্রকে মাহামুদুল হাসান আনসারী আরবি শেখাতেন। ওইসময় তাকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে নানানভাবে আনসারী উত্যক্ত করতেন। এরইমধ্যে নাটকীয়ভাবে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আনসারী দাবি করে শরিয়ত মোতাবেক তাকে (নারী) সে বিয়ে করেছে। পরবর্তীতে একই বছরের ২ মার্চ থেকে তারা শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে তার (নারী) সাথে আনসারী শারীরিক সম্পর্ক করে আসছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একই বছর ওই নারীকে ফুঁসলিয়ে তার কাছে থাকা পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায় আনসারী। এরপূর্বে নারীর পেটে দু’দফা সন্তান আসলে ভুল বুঝিয়ে তা গর্ভপাত করায় আনসারী। সর্বশেষ একটি সন্তান গর্ভে আসলে সেটিও পূর্বের দুটির মতো গর্ভপাত করতে বললে নারী আপত্তি জানানোর পর তাকে মারধর করা হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা ভূক্তভোগী নারী মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান, তাকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে কাবিন ছাড়াই বিয়ে করার দাবি করে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলো আনসারী এবং তার কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন তার নামে শহরের রূপাতলীতে থাকা একখন্ড জমি আনসারীর নামে লিখে না দিলে সে আমাকে (নারী) এবং আমার পেটের সন্তানকে হত্যা করার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

শুক্রবার সকালে ওই নারী সাংবাদিকদের ফোন করে জানান, থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর আনসারী গ্রেফতার আতঙ্কে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে একটি কাজী অফিসে নিয়ে কাবিন করেছে। কিন্তু তার ভরণপোষণ বা থাকার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে তিনি থানা পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলেও উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহামুদুল হাসান আনসারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নগরীর কোতয়ালী থানা এলাকায় একটি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালে বুধবার আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, বরিশাল নগরীর কোতয়ালী থানাধীন বিএম কলেজ রোডস্থ কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ইয়াবা ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের দলটি ঘটনাস্থলের পৌঁছলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ঘেরাও পূর্বক ০৩ (তিন) জন ব্যক্তিকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন (১) মোঃ মশিউর রহমান(৩০), পিতা- মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সাং- ভরতকাঠী, থানাঃ নলছিটি, জেলাঃ ঝালকাঠি, (২) মোঃ ইমদাদুল হক(৩০), পিতা- মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাং- চর দারিয়াল, থানাঃ বাকেরগঞ্জ, জেলাঃ বরিশাল, (৩) মোঃ শাকিব জামান শাওন(৩০), পিতা- মৃত সেকেন্দার আলী, সাং- দেহেরগতি, থানা- বিমানবন্দর, জেলা- বরিশাল।

পরবর্তীতে স্থানীয় জনসাধারণের উপস্থিতিতে আসামীদের নিকট থেকে ১০০ (একশত) পিচ ইয়াবা, মাদক বিক্রয়ের নগদ ৩,২৪৮/-(তিন হাজার দুই শত আটচল্লিশ) টাকা এবং ০১টি মটর সাইকেল উদ্ধার করে। র‌্যাব-৮, বরিশাল সিপিএসসি’র ডিএডি মোঃ নূর ইসলাম বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালী থানায় মা

সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে একটি ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

বুধবার রাতে লামচরী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত তামান্না হাতেনাতে অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় ড্রেজার মেশিন জব্দ করেন। পরবর্তীতে তা পুড়িয়ে এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় বালু উত্তোলনকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ লকডাউনের মধ্যে প্রাইভেটকারে ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টিকার ব্যবহার করে মহাসড়ক দিয়ে যাত্রী পরিবহনের দায়ে যাত্রীসহ গাড়ি ও চালককে আটক করা হয়েছে।

গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়ন করতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী হাইওয়ে থানার সামনে মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা একটি প্রাইভেটকারকে থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। গাড়িটি থামানোর পর গাড়ির সামনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পিছনে ডাক বিভাগের স্টিকার এবং গাড়ির ভিতরে অনেক যাত্রী দেখা যায়। এসময় চালককে জিজ্ঞাসা করলে সে (চালক) অসংলগ্ন কথা বলেন।

এসময় গাড়ি ও চালক তাজুল ইসলাম আটক করে হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস চালক তাজুল ইসলামকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এসময় চালকের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে মানবিক কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিভাগে করোনা সংক্রমণ পর পর দুদিন একই সংখ্যায় থাকলেও হটস্পট বরিশাল মহানগরী সহ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাটা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগেরদিনের মত বুধবারেও এ অঞ্চলের ৬ জেলায় ১৯২ জন করোনা পজিটিভ রোগী সনাক্তের ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ১৩ হাজার ৭৬১ জনে। গত এক সপ্তাহ পরে বুধবারেই দক্ষিণাঞ্চলে কোন মৃত্যু না থাকলেও এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৪৪ জন। দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যুহার এখনো প্রায় ১.৭৭%।

গত মঙ্গলবার মহানগরীতে ৪১ জন সহ বরিশাল জেলায় আক্রান্তর সংখ্যা ছিল ৪৯। কিন্তু বুধবার তা প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়ে জেলায় আক্রান্ত ৯০ জনের মধ্যে মহানগরীতেই সংখ্যাটা ৭৭ জনে উন্নীত হয়েছে। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে বুধবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় ৪১ জন সহ দক্ষিণাঞ্চলে সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ১৯৫ জন। তবে সুস্থতার সংখ্যাও আগের দিন ছিল প্রায় দ্বিগুন, ৬৮ জন। দক্ষিণাঞ্চলে সুস্থতার হার ইতোমধ্যে ৯৮% থেকে প্রায় ৮১.৩৫%-এ হ্রাস পেয়েছে।

বুধবার সকালের পূর্ববর্ত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ভোলা জেনারেল হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৭৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১২৯ জনের করোনা পরিজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। সনক্তের হার এখন ১৫.০৪%। তবে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে বরগুনাতেই সনাক্তের হার এখনো সবচেয়ে কম ৯.৮৫%। সবচেয়ে বেশী ঝালকাঠীতে ১৯.০২%। পিরোজপরে ১৮,২৩%। বরিশাল মহানগরী সহ জেলায় ১৭.৭৭%। ভোলাতে ১২.৬৯%। পটুয়াখালীতে ১১.৭৯%।
আর মৃত্যু হারে এখনো সবার আগে পটুয়াখালী জেলা। এ জেলোয় ২ হাজার ৩৪ জন আক্রান্তের মধ্যে ৪৮ জনের মৃত্যুর ফলে মৃত্যু হার দক্ষিলাঞ্চলের সর্বোচ্চ ২.৩৬%। ঝালকাঠীতে ১ হাজার ১৫৫ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যুর ফলে গড়হার ১.৯৯%। পিরোজপুরে ১ হাজার ৫০৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। গড় মৃত্যুহার ১.৯৩%। বরগুনাতে ১ হাজার ১৭৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ২২ জন মারা গেছেন। মৃত্যুহার ১.৮৭%। বরিশালে মোট আক্রান্ত ৬ হাজার ৩শ জনের মধ্যে ১০৪ জন মারা গেছেন। মৃত্যুহার ১.৬৫%। ভোলাতেও আক্রান্ত ১ হাজার ৫৯০ জনের মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হলেও এ অঞ্চলের মধ্যে দ্বীপ জেলাটিতেই মৃত্যুহার এখনো সবচেয়ে কম ১.১৩%।

বুধবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বাদে অন্যসব জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ভোলাতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ জন। যা মঙ্গলবারে ছিল ২৯। পটুয়াখালীতেও আক্রান্তের সংখ্যাটা আগের দিনের ১৯ থেকে বুধবারে ৫ জনে হ্রাস পেয়েছে। ঝালকাঠীতে আক্রান্তের সংখ্যা অগেরদিনের ১২ থেকে বুধবারে ৯ জনে হ্রাস পেয়েছে। পিরোজপুরেও সংখ্যাটা মঙ্গলবারের ১২ থেকে বুধবারে ৬ জনে হ্রাস পেয়েছে। আর বরগুনাতে মঙ্গলবারে সংখ্যাটা ছিল যেখানে ৮, বুধবারে তা ৩ জনে হ্রাস পেয়েছে।

তবে এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনেই দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৮ জনে পৌছল। মারা গেছেন ৩৩ জন। অথচ গত জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসে এ অঞ্চলে ৯৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির রাজাপুরে এক নারীকে হয়রানির অভিযোগে পুলিশের এসআই মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই নারী সুমা বেগম বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর লিখিত এ অভিযোগ দাখিল করেন।

তল্লাশির নামে ঘর তছনছ করেন এসআই শাহ আলমের লোকজন। এমনকি স্বামীকে হাজির করতে না পারলে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার রাতেই ভুক্তভোগী রাজাপুর প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের কপি সাংবাদিকদের হাতে দিয়ে এ তথ্য জানান।

সুমা বেগম উপজেলার চাড়াখালি গ্রামের কবির হোসেন হাওলাদারের স্ত্রী। এসআই শাহ আলম বর্তমানে রাজাপুর থানায় কর্মরত রয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সুমা বেগমের স্বামী কবির হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলের সঙ্গে জমি-জমার বিরোধ চলে আসছিল।

ওই কুচক্রী মহলের ইন্ধনে এসআই শাহ আলম চাড়াখালীর স্থানীয় অপরিচিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে গত শনিবার দুপুরে সুমার বাড়িতে যায়।

শাহ আলম বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে অন্যদের জোরপূর্বক ঘরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালাতে বলেন।

এ সময় ঘরে মহিলারা ছাড়া কোনো পুরুষ লোক ছিলেন না। তল্লাশির সময় ঘরে থাকা সমস্ত মালামাল তছনছ করে শাশুড়ির একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় তারা।

মহিলারা বাধা দিতে চাইলে এসআই শাহ আলম সুমাসহ সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে মিথ্যা মামলায় চালান করে দেয়ার হুমকি দেয়।

কী কারণে তাদের ঘর তল্লাশি করা হচ্ছে শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সবাইকে চোর বলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে; যাতে ওই নারী লোকসমাজে লজ্জা পান এবং তার সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়।

তল্লাশি শেষে ফিরে যাওয়ার সময় এসআই শাহ আলম ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফেরত দিয়ে সুমাকে বলেন, তোর স্বামীকে সন্ধ্যার মধ্যে আমার কাছে হাজির করবি নইলে বাড়িঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিব।

পুলিশ কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডে বর্তমানে সুমাসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এসআই শাহ আলম যে কোনো সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন সুমা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশের এসআই মো. শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাবুল দাঁড়িয়া নামে এক লোক সুমার স্বামী কবিরের বিরুদ্ধে একটি গরু চুরির অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়েছি। সেখানে ঘটনার সত্যতা পাই।

এ বছর ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামি শরিয়াহমতে, গম, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর, পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যেকোনো একটির দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়।

উন্নত মানের গম বা আটা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৭০ টাকা দিতে হবে।

যব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৮০ টাকা, কিশমিশ দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৩২০ টাকা, খেজুর দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৬৫০ টাকা, পনির দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৩১০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।

দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত গম, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনিরের বাজার মূল্যের ভিত্তিতে এ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুসলমানেরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যগুলোর যেকোনো একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবেন।

এসব পণ্যের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য রয়েছে। তাই স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলে মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর ঈদের দিন সকালে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব হয়। ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করতে হয়।