TT Ads

নিজের শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে যাওয়া সেই ব্যাংকার বাসায় ফিরেছেন। তবে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) তার শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না।

ছিল না মায়ের মুখে লাগানো অক্সিজেন মাস্ক। টানা ছয় দিন হাসপাতালে থেকে করোনাভাইরাসমুক্ত হয়ে ঘরে ফিরলেন রেহানা পারভীন।
ছেলে ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জিয়াউল হাসান টিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে মাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এখন মা সম্পূর্ণ সুস্থ।

তিনি আরও বলেন, যে মোটরসাইকেলে করে মাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়েছিলাম। আজ সেই মোটরসাইকেলে করে মাকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। এটি আমার কাছে পরম আনন্দের।


পিঠে সিলিন্ডার বেঁধে মাকে নিয়ে ১৭ এপ্রিল হাসপাতালে যান ছেলে
তিনি ও তার ছোট ভাই রাকিবুল হাসান ইভান মাকে নিয়ে নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যপাশা গ্রামে ফেরেন। মাকে নিয়ে তাদের এই বাড়ি ফেরাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয় উল্লেখ করে জিয়াউল হাসান জানান, ৬ দিন মুমূর্ষু মাকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রেখে পুরোপুরি সুস্থ করে বাড়ি ফিরেছেন।

জিয়াউল হাসান জানান আরও জানান, শনিবার (১৭ এপ্রিল) তার মা রেহানা পরভীনের অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ অবস্থায় নিজ শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে যে বাইকে করে মাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম, আজ মায়ের ফুসফুসে অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি একই বাইকে। এ যেন আল্লাহর নেয়ামত। এ সময় জিয়াউল হাসান দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১৭ এপ্রিল) লকডাউনের মধ্যে কোনো ধরনের যানবাহন না পেয়ে মোটরসাইকেলে করোনায় আক্রান্ত মাকে নিয়ে নিজের শরীরে মায়ের অক্সিজেন গ্রহণের সিলিন্ডার বেঁধে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন ছেলে জিয়াউল।
এ সময়ে তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশি চেকপোস্টে পড়েন। পুলিশ গাড়ি না থামালেও চেকপোস্টের জন্য মোটরসাইকেলের গতি শ্লথ করলে অক্সিজেন সিলিন্ডার শরীরে বেঁধে মাকে নিয়ে যাওয়া ছবি কেউ তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

জিয়াউল হাসানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাকিম মোল্লা। তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার। ২০২০ সালের প্রথম রমজানে হাকিম মোল্লা মৃত্যুবরণ করেন। নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সূর্যপাশা গ্রামের বাসিন্দা তারা। মা রেহানা পারভীন নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *