ঝালকাঠি প্রতিনিধি : দশ দফা দাবিতে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচিকে কেন্দ্র ঝালকাঠিতে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশের ছয় সদস্যসহ অন্তত দশজন আহত হয়েছে। এ সময় আটক করা হয়েছে বিএনপির ১৬ নেতা-কর্মীকে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝালকাঠি শহরের আমতলা সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সদর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন সরকার।

স্থানীয়রা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দশ দফা দাবিতে দলীয় কার্যালয় থেকে জেলা বিএনপি পদযাত্রা শুরু করে।পদযাত্রাটি কিছু দূর অগ্রসর হলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধস্তাধস্তি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পাল্টা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। ওসি মো. নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, বিএনপির কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।

এতে এক নারী পুলিশ সদস্যসহ জেলা পুলিশের কমপক্ষে ছয় জন আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপির কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি অংশ নেওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, পুলিশের বাধার মুখে সংক্ষিপ্ত আকারে দশ দফা দাবিতে প্রতিবাদ সভা করে পরে বিএনপি। এরপর নেতা-কর্মীরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। এতে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “এ অবস্থা শুধু ঝালকাঠিতেই নয়, সারাদেশেই বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালাচ্ছে।”

তিনি জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনিসুর রহমানসহ আটক নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১৬ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।

 

মিনি পিকআপে স্টিলের আলমারির মধ্যে অভিনব কায়দায় বিপুল পরিমান গাঁজা পরিবহনের সময় দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর। এ সময় স্টিলের আলমারিসহ পিকআপ জব্দ করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে এ অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়।

আটকরা হলেন, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন পাচকিত্তা ইউনিয়নের মৃত খবির মিয়ার ছেলে মো. গিয়াস উদ্দিন (৩০) ও মুরাদনগর পৌরসভার মধ্যমপাড়া এলাকার মো. সেলিম মিয়ার ছেলে মো. শাকিল মিয়া।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে সন্দেহজনক পিকআপটিকে থামিয়ে তাতে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ওই পিকআপে থাকা স্টিলের একটি আলমারির ভেতরেও তল্লাশি করা হয়।

যদিও প্রথমে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে গাঁজার কোরনা সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে যাই আমরা। তবে যেহেতু আমাদের কাছে আগে থেকেই সংবাদ ছিলো তাই পিকআপ ও আলমারিটিতে আবারও তল্লাশি শুরু করি। তখন দেখতে পাই আলমারির নীচের দিকে আলাদা একটি অংশ রয়েছে। যেটি স্ক্রু দিয়ে আটকানো। তারপর সেটি খুলে বিশেষভাবে রাখা ৬৪ কেজির গাঁজার সন্ধান পাই।

তিনি আরও জানান, আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাদকের এ বিশাল চালানটি নিয়ে তারা বরিশালে আসে। সিঅ্যান্ডবি রোডে আসার পর অজ্ঞাতদের ফোন দিলে তারা নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাবে বলে তারা জানায়।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদের যাদের নাম জানা যাবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

 

পটুয়াখালীর শ্রীরামপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক নারী। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে সদর উপজেলার মৌকরন ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের প্রধান শিক্ষক মো. রশিদ মাস্টারের বাড়িতে ওই নারী অবস্থান করছেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ি ছেড়েছেন প্রধান শিক্ষক।

রশিদ মাস্টার পৃর্ব কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওই নারী একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। প্রতিবেশী রানী বেগম বলেন, সকালবেলা আমরা শুনতে পাই এক মহিলা আসছে বিয়ে করার জন্য। তার সঙ্গে কথা বলি। তিনি নাকি পটুয়াখালী থেকে এসেছেন। আগে কখনো তাকে দেখিনি।

অনশনরত ওই নারী বলেন, রশিদ মাস্টার ছয় বছর ধরে আমাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাসায় রেখেছে। আমার মেয়ে তার স্কুলে পড়তো। সেখান থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আমাকে বিয়ের ছলনা দিয়ে সে এতদিন সম্পর্ক করেছে। সে আমাকে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছে। কিন্তু সেই বিয়ের কাগজ এখন পর্যন্ত দেয়নি। সে শুধুমাত্র কলেমা পড়েছে, কাবিন করেনি।

তিনি আরও বলেন, তার (রশিদ) সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে আমার বাবা-মা কেউ আমাকে আশ্রয় দেয় না। আজকে আমি অসহায় হয়ে তার বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। আমার একটা মেয়ে। তাও তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে আমার একটি বাচ্চাও নষ্ট করেছে। সে বলেছে আমাকে কোনো দিন ছেড়ে যাবে না। সে কোরআন শরিফ নিয়ে কসম কেটেছে।

প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী তানিয়া বেগম বলেন, ২০ বছর ধরে আমার স্বামীর সংসার করছি। এ রকম কোনো কিছু আমি আগে কখনো দেখিনি। আজ সকালে হঠাৎ করে এই মহিলা আমার ঘরে উঠে আমার স্বামীকে বলছে বিয়ে করতে। এটা আসলে ষড়যন্ত্র। আমার ছেলে রাজনীতি করে। আমাদের প্রতিপক্ষ একটি দল ষড়যন্ত্র করে এই মহিলাকে এখানে পাঠিয়েছে।

প্রধান শিক্ষক রশিদ মাস্টার বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে আমি চিহ্নিত করতে পেরেছি। স্থানীয় মেম্বারদেরকে আমি অবহিত করেছি। তারা যদি এটার সমাধান না করতে পারে তাহলে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এর আগেও সে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছিল। মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। কারণ মামলায় যে ছবি ও ডকুমেন্ট দেখিয়েছে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

আপনি বাড়ি ছেড়েছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর বাইরে চলে যাই। এরপর একটি স্কুলে প্রোগ্রাম ছিল সেই প্রোগ্রামে গিয়েছি। এখন আমি মেম্বারের বাড়িতে আছি।

মৌউকরন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) সাইদুল বলেন, সকালবেলা আমি এই খবর শুনতে পেয়ে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে যাই এবং আমি মেয়েকে জিজ্ঞেস করি- তুমি কেন এই বাড়িতে আসছো? সে আমাকে বলে- তাকে নাকি বিয়ে করছে। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করি- তোমার কাছে কাবিন আছে? সে বলে- কাবিন করে নাই কিন্তু কলেমা পড়েছে। তারপর আমি তাকে বলি- এই ছয় বছর তুমি কোথায় ছিলে। সে আমাকে বলে- বিভিন্ন জায়গায় সে আমাকে ভাড়া বাসায় রেখেছে।

তিনি বলেন, এই মহিলার আগের ঘরের একটি বাচ্চা আছে। সেই মেয়েটির এখন বিয়ের বয়স হয়েছে। অথচ তার স্বামী এখন পর্যন্ত বিয়ে করেনি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি তোমার আগের ঘরের স্বামীকে যে তালাক দিয়েছো সেই তালাকের কাগজ আছে? সে কোনো উত্তর দিতে পারেনি। এরপর আমি চলে আসছি‌।

 

বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তর পাসের ভুয়া সনদ দাখিল করে ২৫বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ডৌয়াতলা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। যার ডকেট নং ২৮১, তারিখ : ০৬.০২.২০২৩ ইং।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, জনবল কাঠামো ৯৫’র বিধিমালা লংঘন করে ১৯৯৫ তে অনার্স ফাইনাল বছরের ছাত্র থাকাকালীন তাকে ইংরেজি প্রভাষক পদে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০০ সালের মধ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করতে পারলে তার নিয়োগ বৈধ বলে গন্য হবে। এই শর্ত বেসরকারী স্কুল ও কলেজ বিধি বর্হিভ‚ত। তবে ১৯৯৮ সালে স্নাতকের ছাত্র থাকাকালীন ২য় বিভাগে উত্তীর্ন দেখিয়ে নিয়োগ বৈধ করা হয়। ২০০১ সালে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ৩য় বিভাগে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এ ব্যাপারে তৎকালীন বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দিলে তদন্তে এই জালিয়াতি ধরা পরে বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।

২০০৫ সালে তিনি (অধ্যক্ষ) কলেজ থেকে ইস্তেফা দিলে গভনিং বডির সভায় তার ইস্তফা পত্র অনুমোতিত হয় এবং তাকে এমপিও ভ‚ক্ত না করার জন্য তৎকালিন অধ্যক্ষ লিখিত ভাবে শিক্ষা বোর্ড কে অবহিত করেন। শিক্ষা বোর্ড সফিকুল ইসলামের ইস্তেফা পত্রসহ গভনিং বডির প্রস্তাব অনুমোদন করে। তার এমপিও বন্ধ করে দেন।

২০০৯ সালে সফিকুল ইসলামকে নতুন গভনিং বডি পূনঃ নিয়োগ দেন যা অবৈধ বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সফিকুল ইসলামের জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ নেয়ার বিষয়টি তদন্তের দাবী করা হয়েছে অভিযোগে।

অভিযোগকারী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, সফিকুল ইসলামের আপন মামা গভর্নিং বডির সভাপতি হাওয়ায় তাকে অবৈধ ভাবে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়ে বিধিমালা লংঘন করেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলামের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে হয়রানী করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। ২০০৫ সালে আমি এই ষড়যন্তকারীদের চাপের মুখে এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।