TT Ads

দিনে দিনে বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়ে তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

প্রতিদিনই সচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। তবে কার্যত এখনো অনেকেই মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থবিধি মানছেন না।

এদের মধ্যে অনেকেই আবার ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে মাস্ক পরতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালনার নির্দেশনার পর বরিশালে বাস-মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন পরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বেড়েছে।

যা নিয়ে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রুপাতলী থেকে সরকার নির্ধারিত নিয়মে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও চরকাউয়া থেকে সদর উপজেলার বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সড়ক ও মহাসড়কে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শুক্রবারের (২ এপ্রিল) তথ্যানুযায়ী, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া সাতজনসহ মোট চিকিৎসাধীন ১১২ জন রোগী। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগী ২৪ জন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) ২৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগীসহ চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০৫ জন রোগী। গত বুধবার (৩১ মার্চ) করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিলেন ৯৩ জন। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৫ জনের।

শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা ওয়ার্ডে ১২টি আইসিইউ বেডের মধ্যে দুটি ভেন্টিলেটর বিকল। বাকি ১০টিতেই রোগী চিকিৎসাধীন। এখনো আইসিইউ সেবা পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন অন্তত ২০ জন রোগী। এর ফলে মুমূর্ষু রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী আইসিইউ সেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনা মহামারিতে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী আইসিইউ সেবা দিতে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউ বিভাগে দক্ষ জনবল নিয়োগের দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মনিরুজ্জামান  জানান, আইসিইউ বিভাগে এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো জনবল দেওয়া হয়নি। এ্যানেসথেশিয়া বিভাগ থেকে ডেপুটেশনে চিকিৎসক এনে সাময়িকভাবে আইসিইউ সেবা চালিয়ে রাখা হচ্ছে। অন্যান্য শ্রেণির কর্মচারীও নেই। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। তবে জনবল সংকটসহ বিভিন্ন কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও রোগীদের চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

এদিকে শেবাচিমের পিসিআর ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭ জনের। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর আগের (বুধবার) গত ২৪ ঘণ্টায় পিসিআর ল্যাবে ১৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪০ জনের।

আর বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, গত ফেব্রুয়ারিতে বরিশাল বিভাগে করোনা আক্রান্তের হার দুই থেকে তিন শতাংশে নেমে আসে। গত মার্চের প্রথম দুই সপ্তাহেও একই হারে স্থির ছিল। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনজন করে করোনা আক্রান্ত হতেন। কিন্তু গত ১৫ মার্চ থেকে এক লাফে এ সংখ্যা গড়ে ১২ জনে পৌঁছায়। যা কখনো কখনো ৩০ এর ঘরও অতিক্রম করছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মাস্ক না পরে চলাফেরার কারণে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আবার অনেকের করোনার লক্ষণ থাকলেও তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করিয়ে যেমন ঘুরে বেড়ান, তেমনি করোনার রোগীদের অনেকেই যারা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে, তারাও আইসোলেশনে না থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে সংক্রমণ বাড়ছে। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মানাতে জনপ্রতিনিধিদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *