মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৭ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
লকডাউনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে না। আর তাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। লকডাউনে অনেকেই গত দুইদিন ধরে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। আজকেও কিছু যাত্রী রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে এসেছেন। বাস না ছাড়ায় হতাশা নিয়ে তারা বাসায় চলে যাচ্ছেন।
সোমবার (৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ব্যস্ততম গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার কোনো বাসই ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি। তবে ঢাকার বাইরে থেকে যে সকল বাস গতকাল রাতে রওনা দিয়েছে সেগুলো বাস টার্মিনালের আশেপাশের এলাকায় এসে যাত্রীদের নামিয়ে টার্মিনালের ভিতর পার্কিং করে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে পুলিশের তৎপরতায় আমিনবাজার ব্রিজের আশেপাশের এলাকায় যাত্রীদের বেশি নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে সেখান থেকে বাসগুলো ঘুরিয়ে নিজ নিজ কোম্পানির নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালে বাসের টিকিট কাটতে আসা যাত্রী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি থাকি উত্তরা। বরিশাল যাবো বলে এখানে এসেছি কিন্তু এসে দেখি কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। লকডাউনের কারণে বাস ছাড়বে না সেটা আগেই জানতাম তার পরেও কষ্ট করে এসেছি। এই ভেবে যে কোনো উপায়ে বরিশাল যাওয়া যায় কিনা। কিন্তু এখানে এসে যা দেখলাম তাতে গাবতলী থেকে বরিশাল যাওয়ার কোনো উপায় দেখছি না। আবার সদরঘাট থেকেও কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না। কি করবো ভাবছি, লকডাউনে ঢাকা থেকেও তো কোনো লাভ নেই।’
অপর এক যাত্রী যাবেন আরিচা। তিনি বলেন, ‘গতবছর লকডাউনে গাবতলী থেকে প্রাইভেট কার বা মোটরসাইকেলে করে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ কোনো পরিবহন ছেড়ে যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এখন আবার বাসায় চলে যাচ্ছি।’
এদিকে, সকাল থেকে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, বাস কাউন্টারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাউন্টার বন্ধ করে বসে আছেন। কেউ কেউ আড্ডা দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ একসঙ্গে মিলে তাস খেলছেন।
গাবতলী এলাকায় মোহাম্মদ রাসেল হোসেন নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা এখানে ডিউটি করছি। সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানী থেকে কোনো বাস যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ঢাকার বাইরে থেকে যে সকল বাস যাত্রী নিয়ে আসছেন, সকালে সেগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে বা সুবিধাজনক স্থানে পার্কিং করে রাখার জন্য অনুরোধ করছি। আগামী সাত দিন লকডাউনের কারণে কোনো ধরনের বাস চলাচল করতে পারবে না। তাছাড়া যাত্রীদের বা সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তায় আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি।