মো:রাজিবুল হক(বরগুনা প্রতিনিধি)
বরগুনার বামনা উপজেলা সদর ইউনিয়নের নিজ আমতলী গ্রামে পোশাক কারখানার শ্রমিক মো. আল-আমীন এর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আল-আমীন ওই গ্রামের মরহুম নুর মোহাম্মদ এর একমাত্র ছেলে। সে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রামের নিজ বোনের বাসায় তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। এদিকে তাঁর মৃত্যুর খবর স্বজনরা গোপন রেখে একটি ভুয়া মৃত্যুসনদ তৈরী করে শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নিহতের লাশ বামনায় তার নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। রাতেই তাকে দাফন করার পরিকল্পনা করেন স্বজনরা। স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে বামনা থানাপুলিশকে খবরদিলে পুলিশ এসে লাশের সুরাতাল শেষে রবিবার লাশটি ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার দুই দুলাভাই জাহাঙ্গীর আলম(৪৫) ও মো. আজিজ(৪২)কে বামনা থানায় নিয়ে আসেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে নিহত আল-আমীনের মুত্যুর সঠিক কারনটি গোপন রেখে তার ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজ ভুয়া হার্টএ্যাটাকের সনদ তৈরী করে লাশ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসেন। প্রতিবেশীদের কাছে তারা ফোন করে তার মৃত্যুর কারণ হার্টএ্যাটাক বলে চালিয়ে দেয়। এমনকি রাতেই তাকে দাফন করার জন্য কবর তৈরী করে রাখে।
এদিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ওই লাশটি দেখতে চাইলে নিহত আল-আমীন এর দুলাভাই জাহাঙ্গীর আলম জানায়, লাশটি সবার সামনে দেখবেন না। সবাই জানে ওর মৃত্যু হয়েছে হার্টএ্যাটাকে। কিন্তু আপনারা যখন এসেছেন আপনাদের কি লাগবে বলেন? পরে সাংবাদিকদের চাপে তিনি স্বীকার করেন তার হার্টএ্যাটাক হয়নি সে আত্মহত্যা করেছেন।
তখন তিনি জানান, শনিবার সকাল ৬টার দিকে তারা আলআমীনকে ঘরে দেখতে না পেয়ে বাথরুমে গিয়ে দেখেন দরজাবন্ধ। পরে ওই দরজা ভেঙ্গে বাথরুমের সাওয়ারে তার জুলন্ত লাশটি দেখেতে পায়। থানাপুলিশের ভয়ে সে বিষয়টি গোপন রেখে চট্টগ্রামের একটি ক্লিনিক থেকে ভুয়া একটি মৃত্যু সনদ তৈরী করে লাশটি নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সযোগে বামনায় আসেন।
নিহত আল-আমীনের চাচাতো ভাই বাদশা মিয়া জানান, পিতামাতাহীন আল-আমীনের এমন কোন দুঃখ নেই যে তার আত্মহত্যা করতে হবে। লাশটির যে অবস্থা আমরা দেখেছি তাতে আমি ধারনা করছি তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়েছে।
এব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আলআমীনের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো না। তাই তার লাশ ময়না তদন্তছাড়াই স্বজনরা বামনায় নিয়ে আসেন। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তবে তার ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর ও আজিজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক রাখা হয়েছে।