#

 

#

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে মাদক বিক্রেতাকে ধরতে গিয়ে লঙ্কাকান্ড সৃষ্টি করল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শহরের কাশিপুরের চহঠা এলাকায় শনিবার রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম চার মাদক ব্যবসায়ীকে গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করলে তাদের একজন মাসুদ তালুকদার হাতকড়াসহ পালিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করাসহ হাতকড়া উদ্ধারে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মসরুদের নেতৃত্বে ঘণ্টাব্যাপি রুদ্ধদার অভিযানে ঘাম ঝরালেও শেষত্বক ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। কিন্তু স্থানীয় এক চা দোকানিকে চাকরি রক্ষার্থে যে কোনো মূল্যে আসামি মাসুদ নয়, অন্তত হাতকড়াটি উদ্ধারে সহযোগিতা চায়। শনিবার রাত ১০টার দিকের এই ঘটনাটি বরিশাল পুলিশে জানাজানি না হলেও এনিয়ে শহরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুরের চহঠা এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, ডিবি পুলিশ এই ঘটনায় মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করলেও তাতে পালিয়ে যাওয়া মাসুদকে অন্তর্ভুক্ত করেনি।

স্থানীয় ও ঘটনাপ্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়- ডিবির এসআই মসরুদের নেতৃত্বে শনিবার রাত ১০টার দিকে চহঠা কারিকর বাড়ি পোল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়। একপর্যায়ে তারা স্থানীয় মুনসুর তালুকদারের ছেলে মাসুদ তালুকদার ও তার তিন সঙ্গীকে গাঁজাসহ গ্রেপ্তারে সক্ষম হলেও আরও দুজন মোস্তফা এবং সালু পালিয়ে যায়। পরক্ষণে এই চারজনকে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তোলার প্রাক্কালে কৌশলে দৌড়ে মাসুদ পালিয়ে যায়। এসময় ডিবি পুলিশ ধাওয়া দিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ঘন্টাব্যাপি ওই এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, হাতকড়াসহ মাসুদ পালিয়ে যাওয়ার পরে ডিবি পুলিশ আশপাশ এলাকাসমূহে গণতল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু তারা মাসুদকে গ্রেপ্তার বা হাতকড়া উদ্ধার করতে না পারলেও একটি মাধ্যমে জানতে পারে, স্থানীয় চা দোকানি আলমগীর কারিগরের দোকানে মাসুদ দিনের অধিকাংশ সময় আড্ডাবাজি করে এবং তার সাথে সম্পর্কও ভাল।

একটি সূত্র জানায়, ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা এই সুযোগটি নিয়ে আলমগীরের স্মরণাপণ্ন হয় এবং মাসুদকে নয়, অন্তত হাতকড়াটি উদ্ধার করে দেওয়ার সহায়তা কামনা করে চাকরি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। অবশ্য এই সময় দোকানিও সহযোগীতার আশ্বাস দিলে ডিবি পুলিশ তার কাছে হাতকড়ার চাবিটি দিয়ে আসে।

জানা যায়, ওই দোকানি কোনো মাধ্যম মাসুদের সাথে যোগাযোগ করে এবং রাতেই তার কাছ থেকে হাতকড়ার চাবিটি এনে রেখে দেয়। পরবর্তীতে দোকানির কাছ থেকে রাত ২টার দিকে ডিবি পুলিশের এসআই মসরুদ ও এএসআই ইসাহাকসহ কয়েকজন গিয়ে চাবিটি নিয়ে আসে।

ঘটনাপ্রত্যক্ষদর্শী অপর এক ব্যক্তি জানান, গভীর রাতে চাবি আনতে গিয়ে দোকানিকে ঘুম ভাঙানোয় তিনি কিছুটা বিরক্তবোধ করেন এবং জোরে বলতে থাকেন আপনাদের চাবি নিরাপদ স্থানে অর্থাৎ সবুজ শার্টের পকেটে রেখেছি। পরবর্তীতে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তারা হাতকড়া নিয়ে চলে আসে।

তবে গাঁজা ব্যবসায়ী হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে যাওয়া এবং স্থানীয় দোকানির সহায়তায় তা উদ্ধার করার বিষয়টি এসআই মসরুদর অস্বীকার করলেও একটু বিব্রত হয়ে এএসআই ইসাহাক বলেন, আমি মুল অভিযানে ছিলাম না। হাতকড়া ও চাবি আনতে যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে এসি স্যারের সাথে কথা বলার জন্য বলেন।

শনিবার রাতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি দাবি করলেও স্থানীয় চা দোকানি আলমগীর বলছেন, অনেক কষ্ট করে তাদের হাতকড়াটি উদ্ধার করেন। এবং ওই রাতেই পুলিশ সেখানে গিয়ে তা নিয়ে আসে। এসময় বিষয়টি কারও কাছে বলতে দোকানিকে নিষেধও করে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মঞ্জুরুল রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here