বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেব অনুযায়ী বিভাগে ১৫৪ জন রোগী এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে ১২১ জনকে। যদিও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৯৭ জনকে ছাড়পত্রও দেয়া হয়েছে, অর্থাৎ চিকিৎসায় তারা সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া বাড়িতে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হলেও সে তথ্য এখনও চুড়ান্তভাবে আসেনি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে।
এর বাহিরে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠী গ্রামে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক জিহাদী (৫৩) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য মৌখিকভাবে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যিনি ঢাকা থেকে সম্প্রতি বাড়িতে ফিরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং পরীক্ষায় তা নিশ্চিত হওয়ার পর পুনরায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পথে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে মৃত্যুবরণ করেন।
আর সবমিলিয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের কোন তথ্যই ছিলো না স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। হিসেব অনুযায়ী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আগে এসব রোগীরা কোন না কোনভাবে ঢাকায় গিয়েছিলেন। আর সেখান থেকে আসার পরই শরীরে ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ দেখা দেয় তাদের।
তবে সম্প্রতি পটুয়াখালীর ১২ জন এবং বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের ১ জনসহ মোট ১৩ জন রোগীর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য ভাবিয়ে তুলেছে স্বাস্থ্য বিভাগকে।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এখন পর্যন্ত তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যেখানে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আগে ঢাকা বা অন্য কোথাও ছিলেন তারা। তাই এগুলোকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলেই ধরে নেয়া হয়েছে। যদিও তথ্য আরও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ডা: শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবেও সকলের নজরে এসেছে। বৃহস্পতিবার আইডিসিআর থেকে টিম আসছে। তাদের সাথে আমাদের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের একটি টিমও পটুয়াখালীতে যাবে। সেখান থেকে বিভিন্ন ধরণের নমুনা সংগ্রহ করবে। যার ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী করনীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে।
এদিকে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে একজন রোগীর স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার বিষয়ে বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার স্বজনদের সাথে কথা বলে আরও ভালোভাবে তথ্য যাচাই-বাছাই করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে গিয়েও স্বাস্থ্য বিভাগের টিম কাজ করবে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ার সংক্রমনরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছি। প্রয়োজন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলের সচেতন হওয়া। টবসহ পানি জমে থাকে এমন জায়গাগুলোকে পরিষ্কার রাখাসহ বাড়ির আশপাশ নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে সকলকে। যাতে এডিসসহ কোন মশারই বংশ বিস্তার না হতে পারে।