দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না পেয়ে প্রথম স্ত্রীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদারের বিরুদ্ধে। রোববার (১০ জুলাই) ঈদের রাতে মারধর করলেও বুধবার (১৩ জুলাই) বিষয়টি জানাজানি হয়। মূলত আহত রেশমা বেগম (৩৫) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা নিলে সেখান থেকে তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়।
এ ঘটনায় আহত নারী তার স্বামী ও দেবরের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ১৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে নারায়ণগঞ্জের কাইয়ুমপুর এলাকার আলী আশাবের মেয়ে রেশমা বেগমের সঙ্গে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদারের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ঘরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
রেশমা বলেন, পলাশ তালুকদার অন্য এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে ১৮ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিয়েছি। বর্তমানে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছেন। টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। ঈদের রাতে আমি বাড়িতে আসলে আমার স্বামী ও দেবর সোহাগ আমাকে মেরে গুম করার চেষ্টা করেছিল। প্রতিবেশীরা আমার চিৎকার শুনে প্রাণে রক্ষা করেছে।
রেশমার বাবা মো. আলী আশাব বলেন, আমার মেয়ে রেশমাকে মারধর করছে, তাকে তাড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের চেষ্টা করছে। তাই রেশমার ওপর নির্যাতন করে সন্তানদের রেখে দেন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদার বলেন, পারিবারিকভাবে আমার স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধ চলছে। কয়েক বছর আগে আমার স্ত্রীর অত্যাচারে আমার বাবা স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ। আমার মা তাদের বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকেও অপমান করে বের করে দেন আমার স্ত্রী রেশমা। এ নিয়েই আমাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আমি যৌতুকের জন্য আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করিনি এবং তাকে মারধরও করিনি। আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে মিলে আমার ক্ষতিসাধন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) দায়িত্বরত পুলিশের এসআই আব্দুল জলিল বলেন, আমি পলাশ তালুকদারকে ফোন করেছিলাম বিষয়টি নিস্পত্তি করার জন্য, কিন্তু পলাশ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়া হয়েছে। এখন আর তিনি রেশমার সঙ্গে সংসার করবেন না।