আজ (২৩ নভেম্বর) বুধবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভূমিহীনদের খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি রোধে বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতি বরিশাল জেলার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং ভূমিহীন মানুষের খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সমিপে খোলা চিঠি বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল ইসলাম শাফিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মিরাজ। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রী কমিটির সভাপতি জননেতা বাচ্চু ভূইয়া, গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু, সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল সদর উপজেলার সদস্য সচিব ইয়াসমিন সুলতানা বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলা সভাপতি মোহাম্মদ জাবের প্রমুখ।
বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, “করোনার প্রভাবে দেশের সকল মানুষে অর্থনৈতিকভাবে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে ভাসমান শ্রমজীবীদের জন্য সরকারের যে ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা ছিল তারা তা না করে বরং দূর্বল বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে জনগনের জীবনকে আরো সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সকল ধরনের জ্বালানী খরচ বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা বারবার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু দুর্নীতিবাজ সরকার কর্ণপাত করছে না। যার ফলে জ্বালানির সাথে সম্পর্কিত সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘন্টায় ২০ টাকা শ্রম বিক্রি করে শ্রমিকদের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। অবিলম্বে সরকারকে সকল নাগরিকদের রেশনিং এর আওতায় আনতে হবে। জ্বালানি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে না পারলে দ্রুত পদত্যাগ করার দাবি করেন।
গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, “দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপ ও ফ্যাসিবাদি দুঃশাসনে জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনে জনগণ ইতিমধ্যে রাজপথে নেমে এসেছে৷ ভূমির অধিকার সহ সকল নাগরিক অধিকার আাদায়ে রাজপথের সংগ্রামকে বেগবান করতে হবে৷ গণজাগরণ তৈরি করে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলাতে হবে”।
সভাপতির বক্তব্যে আরিফুর রহমান মিরাজ বলেন, “দেশে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে জনগনের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। এই পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন দূর্বিষহ হয়ে গেছে। তারা এর থেকে পরিত্রাণ চায়। সুপরিকল্পিত ভাবেই সরকার সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমার্পন করেছেন। । তারা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে নানান অযুহাত দিচ্ছে। কিন্তু জনগণ আসল ঘটনা জানে। লুটপাট ও সীমাহীন দূর্নীতির মাধ্যমে সরকার জনগণকে আজ বিপদে ফেলেছে। সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের দায় জনগণ নেবে না। বরিশালের শ্রমজীবী পরিবারগুলো দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো, সিন্ডিকেট হটাও এবং ভুমিহীনদের খাস জমির দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে। সংবিধানে খাসজমির মালিকানা ভূমিহীনদের দেওয়া হয়েছে। এসকল দাবি না মানা হলে শ্রমজীবীদের নিয়ে অচিরেই দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ।
বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্ত্বরে সমাবেশ শুরু করে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন হলে এসে সমাপ্ত হয়।