আসাদুজ্জামান শেখ ::
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এলসিএস প্রজেক্টের অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডি তে চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই অনৈতিক পথে অর্থ উপার্জন সহ নানাবিধ অবৈধ অপকর্ম ও ক্ষমতাসীনদের দ্বারস্থ হয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধের জন্য সচেষ্ট থেকেছেন। উপজেলা এলসিএস অর্গানাইজার পদে দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে অবৈধ ও অনৈতিক পন্থায় অর্থ উপার্জনই ছিল তার একমাত্র উদ্দেশ্য যা তিনি সিদ্ধ হস্তে বাস্তবায়ন করেছেন। অর্গানাইজার পদে দায়িত্ব পালন কালীন সময় এলসিএস শ্রমিকদের নিয়োগ ক্ষেত্রে বড় অংকের ঘুষ বাণিজ্যর এবং এলসিএস শ্রমিকদের বেতনের টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে নিজে বিশাল অর্থ বৃত্তের মালিক বনে গেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে পরিচয় হন বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলালের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে তিনি বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসারদের নিজের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে উপজেলা এলজিইডি অফিসের সকল ক্ষমতা বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন তিনি।এলসিএস টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি যা গ্রামীণ সড়ক মেরামতের মতো প্রকল্পের জন্য স্থানীয় দরিদ্র ও দুস্থ নারী শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে। অর্গানাইজার সানজিদা তার এই প্রকল্পের জন্য সুপারভাইজার পদে আপন ভাই কাওছারকে নিয়োগ দিয়েছেন। সরকারী নিয়ম তোয়াক্কা না করে রেকসোনা নামে এক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে তার ছেলে মিরাজকে দিয়ে হাজিরা দেখিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন অর্গানাইজার সানজিদা। এবং সরকারী সমস্ত নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বারবার একই ব্যক্তিদের শ্রমিক পদে নিয়োগ দিয়ে আসছেন সানজিদা। এলজিইডি তে নিজেকে একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত করেন, তার ইশারা ছাড়া এল জি ডি ই তে অনেক কিছুই হত না এ কারণে প্রজেক্টের সুপারভাইজার পদে আপন ভাই কাওসারকে নিয়োগ দিয়ে সব ধরনের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। এছাড়াও এই প্রকল্পে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে নুরনাহার ও তার মা তহমিনাকে নিয়োগ দিয়ে তার ব্যক্তিগত বাসায় কাজ করানো অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান কালে আরও জানাজায়, তহমিনা এই প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে ৮ বছর এবং মেয়ে নুরনাহারকে ৭ বছর ধরে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন সানজিদা আক্তার।
এভাবে বাবুগঞ্জ উপজেলায় এলসিএস শ্রমিক নিয়োগে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন এবং মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি ইউপি সদস্যদের দেওয়া প্রকল্পের কাজ এলসিএস শ্রমিক দিয়ে বাস্তবায়ন করে সেখান থেকেও আর্থিক লাভবান হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই প্রজেক্টে শ্রমিক নিয়োগে তিনি অনৈতিক পন্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেন এবং প্রকল্প সুপারভাইজার পদে ভাইদের নিয়োগ দেন। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে অনেক অসহায় দুস্থ নারীরা প্রজেক্টে কাজ করার জন্য এলজিইডি অফিসে ঘোরাঘুরি করেও কোন কাজ পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন একাধিক অসহায় দুস্থ নারীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে অফিসের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করছি একটু কাজের জন্য, কিন্তু যখনই সানজিদার কাছে যাই তিনি বলেন, ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে স্থানীয় মেম্বারদের সাথে নিয়ে আমার অফিসে আসবে। তারা জানান, টাকাও যোগাতে পারি না,আর কাজও পাই নাই। যা সম্পূর্ণ চাকরির বিধি-বিধান লঙ্ঘিত।
এইভাবে সানজিদা আক্তারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রজেক্টে শ্রমিক নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছেন যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে এ ব্যাপারে প্রকল্প অর্গানাইজার সানজিদা আক্তার তিনি বলেন,আসলে কেউ যদি তার কাজের পরে অন্য কাজ করে তাহাতে তো কোন বাধা নেই। জানতে চাওয়া হয়, এক পরিবারের দুইজনকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান আছে কি! তিনি বলেন, আসলে আপনি তো আমাকে আগেও চিনেন অফিসে আসেন সব বলিব। জানতে চাওয়া হয়, মাঠ সুপার ভাইর আপনার আপন ভাই তাকেও নিয়োগ দিলেন কিভাবে। তিনি জানান, সুপারভাইজার কাওছার আমার কোন আত্মীয় না। শ্রমিক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যর বিষয়ে জানতে চাই তিনি বলেন, আমার অনেক মাথা ব্যথা হচ্ছে। আপনি অফিসে আসেন তখন বলব।
অর্গানাইজারের দুর্নীতি বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী এমদাদুল হক আলিম বলেন, আসলে আমি এই বিষয়গুলো জানিনা।







