TT Ads

 

নিজস্ব প্রতিবেদক // কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল কারাগারে থাকলেও বরিশালের বানারীপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন থেমে নেই। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র ও পর্যবেক্ষকদের মতে, বাবুলের অনুপস্থিতিতে বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের নেপথ্য নেতৃত্বে রয়েছেন তার ছোট বোন, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী নাসিমা ইয়াসমিন। অভিযোগ রয়েছে, ভাই কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতা নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে তার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায়।
নাসিমা ইয়াসমিনের রাজনৈতিক পরিচয় শুধু স্থানীয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং শেখ হাসিনা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এই রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করে তিনি বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের পরাজিত ও বিতর্কিত কাঠামো পুনর্গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, বানারীপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দীর্ঘদিন ধরেই নাসিমা ইয়াসমিনের বাসা এবং তার ভাই ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের বাসাকে কেন্দ্র করে দেওয়া হতো। বাবুল কারাগারে যাওয়ার পরও এই নেপথ্য সাংগঠনিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দলীয় পুনর্গঠন, কর্মসূচির পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ এসব স্থান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
এদিকে শনিবার দুপুরে শহীদ ওসমান হাদিকে নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে নাসিমা ইয়াসমিন এবং জয় বাংলা বাবুল কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর বানারীপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। স্থানীয় পর্যায়ে জনরোষের মুখে পড়েন তারা। ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র জনতা ফুঁসে ওঠে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার মধ্য দিয়েই বানারীপাড়ায় ভাই–বোনের নেতৃত্বে পরিচালিত রাজনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃত চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পরিকল্পিতভাবে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন এবং আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছেন। ক্ষমতা হারানোর পরও ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা চলছে নাসিমা ইয়াসমিনের সক্রিয় ভূমিকায়—এমন অভিযোগ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বানারীপাড়া–উজিরপুর এলাকায় যে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘাতের অভিযোগ উঠেছিল, তার ধারাবাহিক প্রভাব এখনও বিদ্যমান বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাদের মতে, এই অস্থিরতার পেছনে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও নাসিমা ইয়াসমিনের পরিবারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বর্তমানে ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল কারাগারে থাকলেও বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের নেপথ্য রাজনীতি থেমে নেই। বরং নাসিমা ইয়াসমিনের সক্রিয় নেতৃত্বে তা আরও সংগঠিত ও আক্রমণাত্মক রূপ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ভাই–বোনের রাজনৈতিক তৎপরতা বানারীপাড়ার সার্বিক রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অশান্ত ও বিশৃঙ্খল করে তুলছে বলে স্থানীয়ভাবে উদ্বেগ বাড়ছে।

TT Ads