এস এম মিরাজ // শহিদ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বরিশাল নগরীতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটা থেকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই প্রান্তে শত শত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকে পড়ে, সৃষ্টি হয় চরম জনদুর্ভোগ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রজমোহন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এ আন্দোলনে অংশ নেন। প্রথমে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নথুল্লাবাদ গোলচত্বরে জড়ো হয় ছাত্র-জনতা। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে একপর্যায়ে সড়কে বসে পড়ে অবরোধ শুরু করে তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, “ওসমান বিন হাদি আমাদেরই ভাই। দিনের আলোতে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, অথচ এখনও প্রধান খুনিসহ জড়িতরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আমরা আর কোনো আশ্বাস চাই না, আমরা চাই দৃশ্যমান বিচার।”
এক শিক্ষার্থী আরও বলেন, “এটি কেবল একটি হত্যার বিচার নয়, এটি ন্যায়ের আন্দোলন। প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয়, তবে ছাত্রসমাজ রাজপথেই দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচার আদায় করবে।”
অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক আতিক আব্দুল্লাহ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বিএম কলেজ শাখার সভাপতি জিয়াউর রহমান নাঈম, বিএম কলেজ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ মুহসীন উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই শহিদ ওসমান বিন হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা প্রকাশ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেলেও এখনো গ্রেপ্তার না হওয়া লজ্জাজনক।”
তারা দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি দেন—বিচার নিশ্চিত না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
এদিকে অবরোধের ফলে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়, ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল নগর পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এয়ারপোর্ট থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” একই সঙ্গে মহাসড়ক স্বাভাবিক রেখে আন্দোলন চালানোর আহ্বান জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের মাধ্যমে স্পষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।







