বরগুনায় শ্বশুর বাড়ি থেকে শিকলে বাঁধা জামাতাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে দশটার দিকে জামাতাকে উদ্ধারের সময় তাকে বেঁধে রাখার অভিযোগে তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার কাকলী, শ্যালক সোহাগ সরদার ও শাশুড়ি খাদিজা বেগমকে আটক করা হয়।

বরগুনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক ওবায়দুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বুড়িরচর গ্রামের পনু সরদারের ঘরে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আবুল খায়েরকে পাওয়া যায়।

পনু সরদারের মেয়ে মৌসুমি আক্তার কাকলী জানিয়েছেন, ২ বছর আগে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার ছোট আমতলা গ্রামের আবদুল ওহাব শেখের ছেলে আবুল খায়েরের (২৬) সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ৮ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

খাদিজা বেগম বলেন, রোববার সন্ধ্যায় তার জামাতা আবুল খায়ের তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে।

আবুল খায়ের বলেন, শ্বশুর বাড়িতে যাবার পরেই শ্যালক সোহাগ সরদার তার পায়ে শিকল বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখে।

সোহাগ সরদার বলেন, তার বোনকে বিয়ের পর কাবিন না করায় ভগ্নীপতিকে বেঁধে রাখা হয়। কাবিন করলেই তাকে ছেড়ে দেয়া হতো।

বরগুনা থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই তারা জামাতাকে উদ্ধার ও ৩ জনকে আটক করেছেন।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কারখানা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কারখানার তীর, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার আবাদি জমি, ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সাত দিনের অব্যাহত ভাঙনে বাহেরচর লঞ্চঘাট, পশ্চিম কাছিপাড়া, কারখানা লঞ্চঘাট এলাকার প্রায় ১০০ একর আবাদি জমি, আকনবাড়ি, খানবাড়িসহ অর্ধশত ভিটেবাড়ি, ঈদগাহ মাঠ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ২০ বছর ধরে ভাঙছে ওই নদীর তীরবর্তী কারখানা, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকা।

কারখানা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম খলিফা বলেন, কারখানা নদীর অব্যাহত ভাঙনে এই গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাঁচ শতাধিক পরিবার সব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। অনেক অসহায় পরিবার এলাকা ছেড়েছে। দুই শতাধিক পরিবার কারখানার চরে ঘর তুলে বসবাস শুরু করছে। তিনি আরও বলেন, অমরখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে আবার নতুন ভবন নির্মাণ করে পাঠদান চলছে। বর্তমানে ভাঙনের কবলে রয়েছে কারখানা দারুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসা, কারখানা রাহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারখানা সুফিয়া খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক।

কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আগুনে পুড়লে জমি থাকে। কিন্তু নদীর ভাঙনে কিছুই থাকে না। ভাঙনের কবলে পড়ে কারখানা, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার কত পরিবার যে নিঃস্ব হয়ে গেছে, তার হিসাব নেই।’ তিনি ভাঙন রোধে টেকসই ভাঙন রক্ষা প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পটুয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের নদীপ্রধান দেশ। প্রাকৃতিকভাবেই এক পাড় ভাঙবে, আরেক পাড় গড়বে (চর জাগবে)। এটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম। সরকার ভাঙন রোধে ব্যাপক কাজ করছে। বাউফলেও কাজ হচ্ছে। তবে খুব শিগগির ওই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

মহামারী করোনা মোকাবিলায় সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে বরিশাল নগরীতে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নগরীর ৫টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান সুজন।

পাশাপাশি যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন না তাদেরকে সচেতন করা হয়। এ সময়ে নগরীতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জানান, ‘সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অভিযান আরও জোরালো করা হবে।’


শামীম আহমেদ :: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, নিরাপদ সমাজ গড়ার জন্য বিটপুলিশিং অত্যন্ত জরুরি। বিটপুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিংকে শক্তিশালী করতে পারলে আমরা সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে পারবো, অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ে হুলতে পারবো। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজের সমস্যা সমুহ চিহ্নিত করে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবনতা দুর করে অপরাধ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। গতকাল  (১০ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার নতুন ভবনে ওপেন হাউজ ডে উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরও বলেন, করোনাকালে স্বাস্থবিধি মেনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সমাজে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার আগেই কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে তা নির্মূল করতে চাই। আমরা নির্ভেজাল সেবা দিতে কাজ করছি, তাই আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মোঃ খাইরুল আলম বলেন, ওপেন হাউজ ডে হচ্ছে জনগনের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ। আজ থেকে একশত বছর পূর্বে এদেশে জন্মগ্রহন করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হচ্ছে আমাদের এ স্বাধীন বাংলাদেশ। বর্তমানে মুজিব বর্ষ চলছে। আমরা এ মুজিব বর্ষে জনতার পুলিশ হতে কাজ করছি। আমরা আগে থানা ভিত্তিক সেবা দিতাম। বর্তমানে পুলিশের সেবাকে জনগনের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে বিটপুলিশিং ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। বিটপুলিশিং এর মাধ্যমে আপনারা সঠিক সেবা পাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে আমরা সব সময় খেয়াল রাখছি। সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মোঃ ফজলুল করিম বলেন, ওপেন হাউজ ডে হচ্ছে মানুষের সমস্যা সমাধানের একটি অন্যতম মাধ্যম। মানুষ সমাজে যে সব সমস্যার সমাধান পাচ্ছেনা ওপেন হাউজ ডের মাধ্যমে সে সকল সমস্যার সমাধান করা হয়। ওপেন হাউজ ডে বাংলাদেশে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে পুলিশের সাথে জনগনের সম্পর্কের সেতু বন্ধন তৈরী হয়।

এসি নাসরিন জাহান বলেছেন, সমাজে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি জনগনেরও কিছু দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। সমাজে কোন ব্যাক্তি কোন অপরাধের সাথে জড়িত সে বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশকে জানাতে পারেন। আমরা যে কোন সময়ে আপনাদের সমস্যার কথা শুনতে প্রস্তুত আছি।

সভাপতির বক্তব্যে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাহিদ বিন আলম বলেছেন, এয়ারপোর্ট থানা এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হলে আপনাদের সহযোগিতা দরকার। তাই এ এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ট্রাফিক পুলিশের টিআই বিদ্যু চন্দ্র দে, এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ মোঃ ফয়সাল, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানসহ এয়ারপোর্ট থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ।

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটুক্তি করায় ব্যবসায়ী সজল শীলকে স্থানীয়রা তাকে আটক করে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেন্দগঞ্জ থানা ইনচার্জ আবিদুর রহমান।

মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার ৬নং খরকী ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী শংকর শীলের ছেলে সজল শীল ।

জানা গেছে, সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানসিক সমস্যায় ভুগে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম। আজ সোমবার সকালে ভর্তির পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরপর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাসপাতালের ব্যবস্থাপকসহ ছয়জনকে আটক করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম বলেন, পারিবারিক ঝামেলার কারণে তাঁর ভাই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা তাঁকে নিয়ে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। কাউন্টারে যখন ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন, তখন কয়েকজন কর্মচারী তাঁকে দোতলায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর তাঁদের জানানো হয় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর তাঁরা তাঁকে দ্রুত হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেখানে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাঁকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী তাঁর পা চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই তাঁর শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তাঁর মুখে পানি ছিটান। তাতেও আনিসুল করিম নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তাঁর বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী। রেজাউল করিম বলেন, তাঁর ভাইয়ের রক্তচাপজনিত সমস্যা ছিল। কিছুটা হৃদ্রোগও ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই প্রকট ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পিটুনিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মিয়া বলেন, হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটের খাতায় লেখা রয়েছে ‘ব্রট ডেড’ অর্থাৎ সেখানে নিয়ে আসার আগেই আনিসুলের মৃত্যু হয়েছিল।ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে বলেন, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাঁরা সংগ্রহ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আনিসুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। কী ঘটেছিল, তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. ইমরান খান মুঠোফোনে বলেন, আনিসুল হককে জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট থেকে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই তিনি খুব উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। একে–ওকে মারধর করছিলেন। তাঁকে শান্ত করার জন্য ওই কক্ষটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, তাঁকে মারধর করা হয়েছিল, কেন মারা হলোÍএ প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, তিনি তখন হাসপাতালে ছিলেন না। ময়নাতদন্তেই জানা যাবে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজন আসামির প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি এক নম্বর আসামি সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও পাঁচ নম্বর আসামি বরিশাল নগরীর কালীবাড়ি রোডের বাসিন্দা জাকির হোসেনকে এক কোটি টাকা করে অর্থদন্ড করা হয়েছে। সোমবার শেষ কার্যদিবসে বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মহসিনুল হক দন্ডপ্রাপ্ত সকল আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

ওইদিন সন্ধ্যায় দন্ডপ্রাপ্তদের আদালত থেকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারি হারুন-অর রশিদ। দন্ডপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন-সাবেক বরিশাল পৌরসভার (বর্তমান বরিশাল সিটি কর্পোরেশন) নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমান অবসরপ্রাপ্ত) মোঃ ইসহাক, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী (বর্তমান ঢাকা নগর ভবনের স্থানীয় সরকার বিভাগের আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভয়েরমেস্টাল হেলথ সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) খান মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সাবেক বরিশাল পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস ছাত্তার ও বরিশাল নগরীর কালীবাড়ি রোডের বাসিন্দা জাকির হোসেন।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, দন্ডপ্রাপ্তরা ১৯৯৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন তারিখের মধ্যে তৎকালীন পৌরসভা এলাকায় টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামত দেখিয়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থার জাল প্যাড প্রস্তুত করে ভূয়া দরপত্র সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ভুয়া ঠিকাদার নিয়োগ করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যেমে বরিশাল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এ চলতি হিসাব খোলেন। ওই হিসাবে টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত চারটি চেকের মাধ্যমে মোট ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭১ টাকার রাস্তার মেরামত কাজ দেখায় এবং পরস্পর একে অপরের সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাত করে।

যে ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল বাছেত ২০০২ সালের ১১ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন। ২০১১ সালের ১৯ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক এবং পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ আদালতের চার্জশীট দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহন শেষে উল্লেখিত রায় ঘোষনা করেন।

বরিশালে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির মামলায় জেল হাজতে যাওয়ার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মোল্লা লিটনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান।

বহিষ্কার হওয়া কামাল হোসেন মোল্লা লিটন সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বরিশাল জেলা টেম্পু মালিক-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি।

ইউএনও মুনিবুর রহমান বলেন, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলা এবং ওই মামলায় তাকে জেল হাজতে প্রেরণের ঘটনায় ৩ নভেম্বর কামাল হোসেন মোল্লা লিটনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া আগামী ১০ দিনের মধ্যে কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না সেই কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমাদের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের জবাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর পরিবহন কাউন্টারগুলোতে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে কামাল হোসেন মোল্লা লিটনের বিরুদ্ধে। সেই সূত্র ধরেই গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাস কাউন্টার থেকে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে গত ২২ জুলাই রাতে কাউন্টার ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম বাসায় যাবার পথে লিটন মোল্লার নির্দেশে অনুসারীরা চাঁদার টাকা দাবি করে মারধর করে।

এ সময় লিটন মোল্লার লোকজন ইনচার্জের সঙ্গে থাকা ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯শ’ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় লিটন মোল্লাকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করে কাউন্টার ইনচার্জ। এদিকে ৯ আগস্ট বিএমএফ কাউন্টারে চাঁদাবাজিকালে কামাল হোসেনের শ্যালক কামরুলকে আটক করে পুলিশ।

পরে ওই ঘটনায় মামলাও আসামি করা হয় কামাল হোসেনকে। ওই দুই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ সেপ্টেম্বর বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কামাল হোসেন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

শামীম আহমেদ :: বরিশালের বানারীপাড়ায় যৌতুকের দাবিতে তিন বছরের শিশু সন্তানের সামনে মারধর করে স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়া মামলার আসামি ঘাতক রাসেল বালীকে (৩০) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
বর্বরোচিত এ ঘটনার এক মাস পাঁচদিন পর পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত রাসেল বালীকে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সূত্রমতে, গত ৩ অক্টোবর সকালে বানারীপাড়া পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের দুলাল বালীর বাসার সামনের রাস্তায় বসে শিশু সন্তানের সামনে গৃহবধূ হ্যাপি বেগমের পায়ের রগ কেটে দেয় তার ঘাতক স্বামী রাসেল বালী। গুরুতর অবস্থায় গৃহবধূ হ্যাপিকে প্রথমে বানারীপাড়া উপজেলা হাসপাতালে ও ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার পায়ে অস্ত্রোপাচার করা হয়।

এ ঘটনায় ৪ অক্টোবর আহত গৃহবধূর পিতা রাজ্জাক হাওলাদার বাদি হয়ে বানারীপাড়া থানায় ঘাতক রাসেল, তার বাবা হাসান বালী, মা খাদিজা বেগম ও চাচাতো ভাই জসিম বালীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

আহত গৃহবধূর বাবা জানান, সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের হাওড়াবাড়ি এলাকার হাসান বালীর পুত্র ধান ব্যবসায়ী রাসেলের সাথে ১০ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে তার মেয়ের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রিমি (৯) ও রাতুল ( ৩) নামের দুটি সন্তান রয়েছে। তিনি আরও জানান, তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে হ্যাপিকে দীর্ঘদিন থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলো রাসেল। স্বামীর যৌতুকের চাহিদা মেটাতে হ্যাপি তার স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে ৩৬ হাজার টাকা দিলেও বাকী টাকার জন্য তার ওপর নির্যাতন অব্যাহত থাকে।

শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল নগরীতে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে নিষ্ক্রিয় এ গ্যাং পুনরায় সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত করছে। এরই মধ্যে গত শনিবার রাতে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপুকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে তারা। ফলে গ্যাং কালচার নিয়ে নতুন করে নগরবাসীর মাঝে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

 

তবে বরিশাল মহানগর এলাকায় কোন ধরনের গ্যাং কালচার চলতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। যারাই গ্যাং কালচার করতে আসবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও শনিবার রাতের ঘটনাটি দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে দাবি করেছেন নগর পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। অপরদিকে, গত শনিবার রাতে ‘আব্বা গ্রুপ’ নামক কিশোর গ্যায়ের সশস্ত্র হামলার শিকার সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপুকে শনিবার মধ্য রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

 

সেখানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাছাড়া এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই হামলার ঘটনায় থানায় কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়ে পুলিশ। জানাগেছে, ‘২০১৯ সালে বরগুনায় কলেজ ছাত্র রিফাত শরীফের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় গোটা দেশ কেঁপে ওঠে। ওই ঘটনার পর থেকেই দেশ জুড়ে কিশোর গ্যাং দমনে মাঠে নামে র‌্যাব এবং পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থাগুলো।

 

দেশ জুড়ে ধরপাকড়ের ফলে প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে কিশোর গ্যাং। এতে স্বস্তি ফেরে সাধারণ মহলেও। তবে হঠাৎ করেই বরিশাল নগরীতে ফের গ্যাং কালচার শুরু করেছে কিশোর গ্যাং। সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল মহড়া, ছিনতাই, মাদক বহন এবং হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- সংঘটিত করছে তারা। সবশেষ গত শনিবার রাতে বরিশাল নগরীর ফকিরবাড়ি রোডস্থ সরকারি বরিশাল কলেজের সামনে ‘আব্বা গ্রুপ’ নামের কিশোর গ্যাং সশস্ত্র হামলা করে ওই কলেজটির ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপু’র ওপর।

 

তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম এবং সেখানকার একটি হোটেল ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা। টিপু’র অনুসারী মো. রুবেল জানিয়েছেন, ‘টিপু কালীবাড়ি রোডের ফাহিম হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ করেই আলোচিত কিশোর গ্যাং নগরীর বগুড়া রোডের সৌরভ বালা, তানজিম, রাজিন, সাগরসহ ১০-১২ জন টিপু’র ওপর সশন্ত্র হামলা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষ করে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

তার মাথায় ছয়টি এবং শরীরে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। টিপু’র রাজনৈতিক এবং বন্ধু মহল জানিয়েছে, ‘হামলার ঘটনাটি কোন দলীয় কোন্দল নিয়ে হয়নি। সিনিয়র-জুনিয়রকে কেন্দ্র করে হয়েছে। বগুড়া রোডের কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য তানজিম ও তার ভাইয়ের সাথে সিনিয়র জুনিয়ার বিষয় নিয়ে টিপু’র কথা কাটাকাটি চলে আসছিলো। সম্প্রতি এ নিয়ে টিপু’র সাথে তাদের হাতাহাতিও হয়। এর জের ধরেই শনিবার রাতে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান তারা। তারা আরও বলেন, ‘হামলাকারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দলীয় কোন পরিচয় নেই। তারা একেক সময় একেক দলের কথিত নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়ে থাকে।

 

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ‘হামলাকারি কিশোর গ্যাং সৌরভ বালা গ্রুপের দৌরাত্ম্য দীর্ঘ দিন ধরেই। মাঝে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতার কারণে নীরব থাকলেও বর্তমানে তারা নগরীর সদর রোড, কালীবাড়ি রোড, ফকিরবাড়ি রোড, বগুড়া রোড, বটতলা এবং অক্সফোর্ড মিশন রোডসহ আশপাশের এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। তাছাড়া এ গ্রুপের বিরুদ্ধে ইতিপূূর্র্বে একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। এ প্রসঙ্গে কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘রোববার রাত পর্যন্ত কুপিয়ে জখমের ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা হয়নি। তবে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

 

তাদের গ্রেফতারে আমাদের তিনটি টিম কাজ করছে। খুব শীঘ্রই এদের আইনের আওতায় নিসে আসা হবে জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য কিনা সেটা নিশ্চিত নই, তবে এদের বিরুদ্ধে পূর্বে থেকেই অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘নগরীর আলোচিত আব্ব গ্রুপ’ই নয়, এর বাইরেও নগরীর জিলা স্কুল, ব্রাউন কম্পাউন্ড রোড এবং গোড়াচাঁদ দাস রোড ও বিএম কলেজ এলাকায় রয়েছে পৃথক দুটি কিশোর গ্যাং। যাদের একটি বিএম কলেজের অভ্যন্তরে এবং অন্যটি নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে আড্ডা দেয়।

 

সেখানে বসেই মাদক সেবনসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত করে আসছে তারা। এদের বিরুদ্ধ দ্রুত অভিযান প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, ‘শনিবার রাতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা দলীয় কোন্দল থেকে ঘটেছে বলেছে আমি শুনেছি। এর আগে তার ছোট ভাই বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত রাফসান আহমেদ জিতুকেও একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি বরিশাল মহানগরীতে গ্যাং কালচারের সুযোগ নেই। আর শনিবারের ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না। তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে সে হোক কিশোর গ্যাং বা যুবক।