বরগুনা: বরগুনার আমতলীতে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় রোববার (০৮ নভেম্বর) রাতে অভিযুক্ত রুবেল খলিফা (২৮) ও তাকে সহায়তাকারী রাশিদা বেগমকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পরে সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুপুরে তাদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মো. শাকিব হোসেন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের হতদরিদ্র, অন্ধ এক ব্যক্তির স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে রাশিদা নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরে ওই ঘরে একই ইউনিয়নের বৈঠাকাটা গ্রামের সেরাজ উদ্দিন খলিফার ছেলে রুবেল খলিফা আসেন। রাশিদা এসময় রুবেলকে ধর্ষণের সুযোগ দিয়ে ঘর থেকে বাইরে চলে যান।


পরে রুবেল মেয়েটিকে মুখ চেপে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই স্কুলছাত্রী এ কথা তার দাদাকে জানায়।

এর আগেও রাশিদার সহায়তায় স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রুবেল একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে জানায় সে।
পরে ধর্ষণের অভিযোগে রোববার (০৮ নভেম্বর) রাতে রুবেল ও সহায়তাকারী রাশিদা বেগমকে আসামি করে দাদা নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রাতেই আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম হাওলাদার বলেন, ভিকটিম শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সবকিছুই উলট-পালট করে দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেকে, আয় কমে গেছে বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। বসবাসের ব্যয় বহন করতে না পেরে শহর ছেড়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি পরিশোধের চাপে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ করতে না পারলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল, পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত না করাসহ দেয়া হচ্ছে নানা বার্তাও।

বন্ধ থাকার পরও এই মহামারীর মধ্যে টাকা পরিশোধ করার নির্দেশনা পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তাদের।

সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে অভিভাবকরা। যদিও করোনাকালে টিউশন ফি আদায়ের জন্য চাপ না দিয়ে মানবিক হতে বলা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুর আলহাজ্ব দলিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম মানছেনা এটি।

জানা যায়, ওই স্কুল থেকে মাসিক বেতন, সেশন ও উন্নয়ন ফি দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দেয়া হচ্ছে। স্কুলে নোটিশ ঝোলানোর পাশাপাশি অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের ফি পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ওই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাই ৭৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩৬০০ টাকা,সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪০০০ টাকা থেকে শুরু করে দশম শ্রেণির প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০০০ থেকে ৭০০০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।

দলিল উদ্দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে। ১০ নভেম্বারের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হবে বলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে, সে বলেন গত মাসের ২৮ তারিখ অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে টাকা উত্তোলনের জন্য তার নির্দেশ আমরা পালন করছি। এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একই কথা বলেছে। ( সকল কথার ভিডিও রেকর্ড রয়েছে।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা বিনা কান্না করে বলেন, আমার সন্তান ওই স্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে টিউশন ফি দেয়ার জন্য আমাদের বাসায় লোক পাঠানো হচ্ছে।

টিউশন ফি পরিশোধ করা না হলে অনলাইন ক্লাস থেকে বহিষ্কার ও পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে না বলে শ্রেণি শিক্ষকদের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

অভিভাবক তানভীর আহমেদ অভি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ৮০ ভাগ অভিভাবকের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। শহর এলাকায় অভিভাবকগণ সংসারের ব্যয় বহন করতে হিমসিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় টিউশন ফি পরিশোধ করা সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব।

এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রিয়াজুল কবির কে ফোন দেওয়া হলে সে ফোন রিসিভ করেনি।বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান,শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেওয়ার দিক নির্দেশনা দেইনি আমরা।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার ও কথা জানান তিনি।

মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট ও আলুবাজার পয়েন্টে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিচার দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন করেছেন বাল্কহেড মালিক-শ্রমিকেরা। রোববার সকালে বরিশাল নগরীর চাঁদমারি–সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে ওই মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন শেষে এই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন মালিক-শ্রমিকনেতারা। স্মারকলিপিতে তাঁরা অভিযুক্ত চাঁদাবাজদের কঠোর বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইমারত নির্মাণে বালু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে এসব স্থাপনা নির্মাণে বালু আসে নৌপথে রাজবাড়ীর পাকশী এবং কুষ্টিয়া থেকে। বরিশাল অঞ্চলের অন্তত ৫০০ বাল্ডহেড রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বালু পরিবহন করে। পথে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট ও আলুবাজার–সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ট্রলার ও স্পিডবোটযোগে প্রতিটি বাল্কহেডে হানা দিয়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেয় স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। দাবি করা চাঁদা না দিলে বাল্কহেড শ্রমিকদের মারধর করে সঙ্গে থাকা টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়। অনেক সময় বাল্কহেড আটকে রেখে নদীতে বালু ফেলে দেয়। কখনো বাল্কহেড ডুবিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা।

চাঁদপুরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদা না দেওয়ায় বরিশালগামী বালুবাহী দুটি বাল্কহেডের ১০ জন শ্রমিককে মারধর করে বাল্কহেড আটকে রাখে সন্ত্রাসীরা।
ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে রোববার সকাল ১০টায় নগরের চাঁদমারি এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে মানববন্ধন করেন নির্যাতিত মালিক-শ্রমিকেরা। মানববন্ধন থেকে মেঘনার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী সেলিম খান ও তাঁর বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা।
মানববন্ধন শেষে এই দাবিতে বরিশালের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেন বাল্ডহেড মালিক-শ্রমিকেরা।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বাল্কহেড শ্রমিকদের স্মারকলিপি গ্রহণের পর বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি পৌঁছে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

বরিশাল: বাকেরগঞ্জে ধর্ষণের মামলায় ছেলেকে কারাগারে পাঠানোর খবর শুনে মৃত্যু হয়েছে বাবার। শনিবার (৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের কোচনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, চাকরি দেয়ার কথা বলে এক তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণের মামলা হয় কবাই ইউনিয়নের ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

বুধবার বিকালে শহিদুল ইসলাম বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ সংবাদ শুনে শহিদুল ইসলামের বাবা আব্দুর রশিদ মাতুব্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে একই অটোরিকশায় যাওয়ার সময় বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এর কিছুদিন পর তাদের আবার দেখা হয়। এ সময় অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম তার কলেজে ওই তরুণীকে চাকরি দেয়ার কথা বলেন।

কথোপকথনের একপর্যায়ে শহিদুল ইসলাম তার মোবাইল ফোন নম্বর চেয়ে নেন। এরপর তিনি প্রায়ই ফোন দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতেন। কয়েক মাস পর শহিদুল ইসলাম তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের সুবাদে ওই তরুণীর বাড়ি যাওয়া-আসা শুরু করেন শহিদুল ইসলাম। ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে মোবাইল ফোনে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলে শহিদুল ইসলাম জানতে পারেন তিনি বাড়িতে একা আছেন। রাতেই শহিদুল ওই তরুণীর বাড়িতে যান এবং চাকরি ও বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শহিদুল। পরে ওই তরুণী দেখা করলে শহিদুল ইসলাম তাকে বিয়ে করতে ও চাকরি দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এ ঘটনায় ওই তরুণী বাদী হয়ে গত ২২ জুন বাকেরগঞ্জ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শহিদুল ইসলাম উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ওই অধ্যক্ষ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে এ সংবাদে তার বাবা মারা গেছেন কিনা তা বলতে পারব না।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: গাজীপুরে পৃথক অভিযানে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৫ শত টাকার সমমানের জাল টাকা উদ্ধার এবং এক দম্পতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার ভোরে গাজীপুর মহানগরের মোগরখাল এলাকায় এবং শুক্রবার মধ্যরাতে শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- বরিশালের পটুয়াখালী গলাচিপা থানার রতনদি এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে মো. সফিকুল ইসলাম (৩২), ভোলার দক্ষিণ আইচার চরমাইনকা এলাকার শাহ আলম ফরাজীর ছেলে হাবিবুর রহমান (৪০), টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী গ্রামের শফি উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৬) এবং তার স্ত্রী নিলুফা বেগম (২১)।

প্রথম দুইজন গাজীপুর মহানগরের মোগরখাল এলাকার বশির উদ্দিন এবং ভোগড়া বাইপাস সড়ক এলাকার সাখাওয়াত হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং পরের দুইজন শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মোখলেস সরকারের বাড়ির ভাড়াটে।

গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) পুলিশের উপকমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার ভোর ৫টার দিকে মোগরখাল এলাকার বশির উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া সফিকুল ইসলামের ঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। পরে তার ঘরের বিছানার নিচ থেকে ১ হাজার টাকার ৩৭৭টি এবং ৫০০ টাকার ২১৪টি নোটসহ চার লাখ ৮৪ হাজার টাকার সমমানের জাল টাকা উদ্ধার করা হয়।

পরে তার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মহানগরের ভোগড়া বাইপাস সড়ক এলাকার সাখাওয়াত হোসেনের বাড়ির ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শ্রীপুর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার মধ্যরাতে মোখলেস সরকারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করা হয়। পরে তাদের হেফাজত থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার পাঁচশ’ টাকার সমমানের জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে দুই বান্ডিলে এক হাজার টাকার ২০৫টি নোট এবং ৫০০ টাকার ৯১টি নোট রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসা করে আসছে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরগুনায় নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় এক কাপড় ব্যবসায়ীকে গালিগালাজ করেন সুদী জহিরুল ইসলাম সৌরভ। এতে অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই ঋণগ্রস্ত ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন পলাশ (৩৭) আত্মহত্যা করেছেন। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি শনিবার সকালে সদর উপজেলার নলী বাজারের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গর্জনবুনিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে বেলাল হোসেন পলাশ (৩৭) নলী বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তিনি বরগুনা শহরের শেরেবাংলা সড়কের পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভের কাছ থেকে ২০১৫ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে সাড়ে সাত লাখ টাকা মাসিক ২৬ হাজার টাকা সুদে ঋণ নেন। সুদ বাবদ এ পর্যন্ত ১১ লাখ পরিশোধ করেন পলাশ। এর পরও আসল টাকার জন্য পলাশকে চাপ দিতে থাকেন সৌরভ।

ওই টাকা নির্ধারিত সময় পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সৌরভ শনিবার ভোরে পলাশকে গালিগালাজ করেন। অপমান সইতে না পেরে ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে নলী বাজারের বাসার পেছনে মেহগিনি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এদিকে পলাশের আত্মহত্যার পর আজ সকাল ৭টার দিকে আবারও টাকা চেয়ে ফোন করেন সুদ ব্যবসায়ী সৌরভ। পলাশের স্ত্রী রোকসানা তাকে পলাশের আত্মহত্যার খবর জানান। এ ঘটনার পর ফোন বন্ধ করে গাঢাকা দিয়েছেন সুদ ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম সৌরভ।

বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহীদুল ইসলাম মিলন বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।’ এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সালাম না দেওয়ার দ্বন্দ্বে সরকারি বরিশাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপুকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় টিপুকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। টিপু সরকারি বরিশাল কলেজের পেছনের এলাকার বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন বাবুলের ছেলে।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় সরকারি বরিশাল কলেজ সংলগ্ন এলাকায় টিপুকে কুপিয়ে সড়কে ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসা চলছিল টিপুর। হামলাকারীরা হচ্ছে নগরীর কালিবাড়ি রোডের বাসিন্দা জামাল উদ্দিনের ছেলে তাসিন ও রাজিনসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টিপু সরকারি বরিশাল কলেজ সংলগ্ন শ্রীনাথ চ্যাটার্চী লেনের মুখে একটি হোটেলে বসে ছিলেন। এ সময় তাসিন ও রাজিনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসী গ্রুপ সেখানে এসে টিপুকে টেনে-হিঁচড়ে বের করার চেষ্টা চালায় এবং দোকানটি ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে টিপুকে সড়কে এনে মাথার ওপর ৫টি কোপ দিয়ে ফেলে রাখে। সন্ত্রাসীরা সরে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন টিপুকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যান।

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান জানান, কিছুদিন পূর্বে রাজিনের সঙ্গে আহত টিপুর দেখা হয়। এ সময় টিপু তাকে দেখে কেন সালাম দেয়নি রাজিন জিজ্ঞাসা করে। এ নিয়ে টিপুর সঙ্গে রাজিনের বাকবিতণ্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে রাজিনকে চড়-থাপ্পড় মারে টিপু। ওই সময় টিপুকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় রাজিন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ঘটনার জের ধরে টিপুকে কোপানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম টিপু আমাদের সাথে রাজনীতি করে না। তার সাথে আমাদের কোনও ওঠাবসা নেই। তাকে কারা কী কারণে কুপিয়েছে তা আমার জানা নেই। আপনারা সাংবাদিক খুঁজে দেখুন।’

২০১১ সালের ২৩ মার্চ একই স্থানে টিপুর ভাই সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি রাফসান আহমেদ জিতুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রয়াত জিতু ও টিপু দুইজনই মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক‍ এবং সাবেক সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামালের অনুসারী।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো. জুয়েল প্যাদার (৩৫) বাম হাতের কবজি কেটে নেয়ার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান এ তথ্য জানান।

গ্রেফতাররা হলেন- বশির চৌকিদার ও সোহেল হাওলাদার।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে বুধবার (৪ নভেম্বর) রাতে কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শরীফ বাড়ি এলাকায় নির্জন কাঁচা রাস্তায় একাকি পেয়ে ৪/৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রসী জুয়েল প্যাদার ওপর হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রসীরা তার বাম হাতের কবজি কেটে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত আড়াইটার দিকে বরগুনার আমতলীর প্রত্যন্ত পূজাখোলা গ্রামে দুই কিলোমিটার কাদার মধ্যে হেঁটে অভিযান চালিয়ে বশির চৌকিদার ও সোহেল হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে হামলায় ব্যবহৃত একটি ছুরি ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টাসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তবে কেটে নেয়া হাত এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

জুয়েল প্যাদা স্থানীয় রাজনীতির পাশাপাশি এলাকায় জমির দালালি করতেন। তার বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সদর, কলাপাড়া এবং বরগুনার আমতলী থানায় অস্ত্র, হত্যা, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে আটটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহ্ফুজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) শেখ বিলাল হোসেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সালাহউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন দফা দাবিতে আজ রোববার দ্বিতীয় দিনও ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে।

সকালে হাসপাতালে গিয়ে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসককে কাজে দেখা যায়নি।

তবে রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানান, শনিবার দুপুরের পর থেকে কোনো চিকিৎসকই তাদের খোঁজখবর নেননি। এমনকি কোনো চিকিৎসকের দেখাও তারা পাননি। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

বিশেষ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাধারণত ২৪ ঘণ্টাই রোগীর পাশে থাকতেন; কিন্তু ধর্মঘটের কারণে এখন আর তারা কেউ সেখানে নেই।

দাবিগুলো হলো- ডা. মাসুদ খান কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা ও বিভিন্ন মাধ্যম কর্তৃক হয়রানি অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা, ডা. মাসুদ খানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচারকৃত অসত্যের জন্য মানহানির বিচার করা।

এর আগে গত ২১ অক্টোবর শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মাসুদ খান শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সভাপতি সজল পাণ্ডে এবং সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে তার ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ আনে। এ নিয়ে পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন।

এর পর দিন ২২ অক্টোবর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেডিকেলের সামনে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেয়ার অভিযোগে পাল্টা অভিযোগ করেন ডা. মাসুদ খানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সবশেষ ৩০ অক্টোবর ডা. মাসুদ খান কোতোয়ালি থানায় ওই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

মামলার খবর পেয়ে ২৯ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করলেও কর্তৃপক্ষের সমঝোতার আশ্বাসে ওই সময় ধর্মঘট স্থগিত করা হয়।

তবে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় শনিবার ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, দুপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পক্ষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় সমঝোতা হয়নি। সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান পরিচালক।

 

 

নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ “ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা” বিষয়ক বরিশাল বেতারে বিশেষ সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বেতার বরিশাল কেন্দ্রে এ সাক্ষাতকার রেকর্ডিং করা হয়।

বরিশাল বেতারের অনুষ্ঠান উপস্থাপক ইমনের সঞ্চালনায় বরিশাল বিভাগের চৌকস উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার (ডিএলআরসি) তরফদার মোঃ আক্তার জামীল সাক্ষাতকার প্রদান করেছেন।

ভূমি ব্যবস্থাপনার জটিলতা নিরসনে সাম্প্রতিক সময়ে ভূমি সেবায় কি ধরণের পরির্বতন আনা হয়েছে, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও হয়রানি বন্ধে ভূমি ব্যবস্থাপনায় কি ধরণের সংস্কার করা হচ্ছে, সংস্কার কার্যক্রমসমূহ জনগণকে অবহিতকরণ, সংস্কার কার্যক্রমে নাগরিকদের সন্তুষ্টি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তনে মোটিভেশনাল, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা, ভূমি সংস্কার বোর্ডের কর্মকর্তা হিসেবে চলমান সংস্কার কার্যক্রম মনিটরিং, মুজিববর্ষে প্রত্যাশা নিয়ে সার্বিক বিষয়ের এ সাক্ষাতকারটি আগামী ২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রচারিত হবে।