শামীম আহমেদ : বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের ইসলাম নগরে আলহাজ্ব দলিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী রুমি আক্তারের আত্মহত্যার পর এবার একই ঘরে ফের আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ঐবাড়ির মালিকের ছোট মেয়ে শিমলা আক্তার।

এদিকে মৃত্যু ও আত্মহত্যার চেষ্টা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের প্রশ্ন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের ইসলাম নগরের দ্বিতীয় গল্লির হুমায়ন কবিরের স্ত্রী শাহিনুর বেগম ওরফে কবিতা ম্যাডামের ঘরে ভাড়াটিয়া জামাল মোল্লার মেয়ে স্থানীয় দলিল উদ্দিন স্কুলের ছাত্রী রুমী আক্তার (১৬) তার নিজ বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রহস্যজনক আত্মহত্যা করেছিলেন।

তার কিছু দিন যেতে না যেতেই এবার ঐবাড়ির মালিকের ছোট মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে আত্মত্যার চেষ্টা চালায়।

পরে তার মা শাহিনুর বেগম (কবিতা ম্যাডাম) টের পেয়ে দেখতে পান তার মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে হাসপাতালের ৪র্থ তলার মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। এনিয়ে ভাড়াটিয়া জামালের মেয়ে আত্মহত্যা ও বাড়ীর মালিকের মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চলছে নানা ধরনের কথা।

নাম প্রকার্শে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর আগে ঐবাড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা মালিকের বড় মেয়ে।

তার কিছুদিন পরেই একই বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে তারই ভাড়াটিয়া জামালের মেয়ে রুমী আক্তার। ফের তিন মাসের মাথায় এবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ঐবাড়ির মালিকের ছোট মেয়ে।

তবে কি কারনে ঐবাড়িতে একের পর এক রহস্যজনক ভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো হচ্ছে তা আমাদের স্থানীয়দের জানা নেই।

তবে প্রশাসন যদি সঠিক ভাবে তদন্ত করে তাহলে ঘটনার মূল রহস্য বেড়িয়ে আসতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন।

 

শামীম আহমেদ : নানা দুর্নীতির অভিযোগে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১২ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিসিসি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।

চাকরিচ্যুতরা হলেন-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) কাজী মনিরুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন, নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কমল ও জহিরুল ইসলাম, চিফ অ্যাসেসর মোঃ আজম, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ রুমেন, অ্যাস্টেট অফিসার (সম্পত্তি শাখা) মাহাবুবুর রহমান শাকিল, হিসাবরক্ষক মোঃ মাইনুদ্দিন, আইন সহকারি রফিকুল ইসলাম, অফিস সহকারি আব্দুস সালাম এবং মোঃ হায়াতুল।

শনিবার সকালে বিসিসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি একযোগে ৩২জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়।

বিভিন্ন সময় তাদেরমধ্যে কয়েকজনকে চাকরিচ্যুতি করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ আগস্ট চিঠির মাধ্যমে উল্লেখিত ১২ জনকে চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে।

তিন মাসের বেতন পরিশোধপূর্বক চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ।

চাকরিচুত্য হওয়া সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) কাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।

অনিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাকে চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে। এরআগে বিসিসি খোঁড়া অজুহাত তুলে আড়াই বছরের অধিক সময় আমাদের ওএসডি করে রাখে। ওইসময় বেতনের একটা অংশ দেয়ার নিয়ম থাকলেও তাও দেয়া হয়নি।

 

সড়ক নিরাপত্তা-ব্যবস্থাপনায় বরিশাল জেলা ও সামগ্রিক পারফরম্যান্সের বিচারে গৌরনদী থানা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছে।

পাশাপাশি রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ সার্কেল এসপি হিসেবে ভোলা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহসিন আল ফারুককে এবং রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ হিসেবে গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেনকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে।

এছাড়া শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী ক্যাটাগরিতে ঝালকাঠি জেলা ডিবির এসআই মো. আসলাম খান ও শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিল অফিসার হিসেবে ভোলার বোরহানউদ্দিন থানার এসআই মোহাইমিনুল ইসলামকে পুরষ্কৃত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামানের সভাপতিত্বে জুলাই মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ এসব অফিসারদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

এ সময় বরিশাল রেঞ্জের সার্বিক বিষয়ে আলোচনা শেষে ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার কথা বলেন। সেইসঙ্গে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা এবং মাদক সেবনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নির্দেশ দেন।

অপরাধ পর্যালোচনা সভায় রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম এহসান উল্লাহসহ সব জেলার পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশের সুপার, আরআরএফ কমান্ড্যান্টসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বরিশাল জেলা পুলিশের সাফল্যে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংশ্লিষ্ট সকল পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে নকল ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা করা পটুয়াখালীর দশমিনার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন প্রিন্স পুলিশের অভিযানে বাসা থেকে বোরকা পরে পালিয়ে গেছেন।

বুধবার রাতে উপজেলার মাছুয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দশমিনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত প্রতারণা মামলায় বুধবার ওয়ারেন্ট জারি হলে রাতে পুলিশ গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে।

বিষয়টি টের পেয়ে রুহুল আমিন বাসা থেকে বোরকা পরে পালিয়ে যান বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

দশমিনা থানার ওসি মো. জসীম জানান, রুহুল আমিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী ও ডিজির ছবিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নামে নকল ওয়েবসাইট খোলার অভিযোগ এনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ভুয়া ওয়েবসাইটের ওই চক্রের সন্দেহভাজন মো. রুহুল আমীন প্রিন্সকে (৪৫) ৯ ফেব্রুয়ারি র্যা ব আটক করে ১০ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থানায় সোপর্দ করেন।

ওই দিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। পরে জামিনে তিনি মুক্ত হন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রতারক মো. রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলা দায়ের করার জন্য পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মাদ ছাইয়াদুজ্জামান জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ১২৫নং দক্ষিণ চর শাহজালালের প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

দশমিনা উপজেলার শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. হারুন অর রসিদকে বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল নগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের চহঠা থেকে এক হোমিও চিকিৎসকের হাত-পা বাধা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। বৃহষ্পতিবার (১২ আগস্ট) সকালে তার নিজ বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করচ্ছে পুলিশ ।

নিহত অধ্যাপক (অব.) ডাঃ মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ (৭০) কাশিপুর এলাকার নব বায়ো- হোমিও চিকিৎসালয়ের সত্ত্বাধিকারী। তিনি অগ্রনী ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ছিলেন।

তার ছেলে জগলুল মোরশেদ প্রিন্স নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এসময় স্বজনরা বিচারের দাবি করলে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেন সিটি মেয়র।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, এটি মর্মান্তিক ঘটনা। সিআইডি ও পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত আসামীরা গ্রেফতার হবে বলে আশা করছি।

এদিকে স্বজনদের কেউ কেউ দাবি করছেন, ডাঃ মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ বুধবার রাতে বাসায় একা ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি।

পরে বাসার পেছনের জানালার একটি গ্রিল ভাঙ্গা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। পাশাপাশি তার নাকে ও চোঁখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

গভীর রাতে কোন এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বাসার পেছনের গ্রিল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে হাত-পা বেঁধে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ হালদার বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মৃতদেহের হাত-পা রশি দিয়ে বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়।

সেই সাথে তার নাক-মুখে রক্তাক্ত জখমের চিহ্নও ছিলো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড।

তিনি জানান, সিআইডি’র টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতিও চলছে, সেইসাথে মামলা দায়ের ও করা হবে।

 

বরিশাল নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- লক্ষ্মীপুর জেলার নাছিমনগর এলাকার মো. ইউসুফ ফকির (৪১) ও চট্টগ্রাম জেলার হরিশপুর এলাকার মো. মামুন (৩৫)।

কাউনিয়া থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ইব্রাহীম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে অভিযান চালায় পুলিশ। টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে ইউসুফ ফকির ও মো. মামুনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

এসি মো. ইব্রাহীম আরও বলেন, ওই দুই মাদক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক নিয়ে এসে বরিশালে বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে ইউসুফ ফকিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে। আটক দুজনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে আরও এটি মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

 

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার আমুয়া হলতা নদীতে বুধবার দুপুরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ যুবক জাহিদ হোসেন (২৫)-এর মরদেহ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় একই স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আমুয়া বন্দরের বাসিন্দা ও নিখোঁজ জাহিদের প্রতিবেশী শাকিল হোসেন মিঞাজী জানান, জাহিদ নিখোঁজের পর কাঁঠালিয়া ফায়ার সার্ভিস, বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবরি দল ও স্থানীয় লোকজন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে কোন সন্ধান মেলাতে না পারায় বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার কার্যক্রম স্থাগিত করেন তারা চলে যান। কিন্তু নিখোঁজ তরুণ জাহিদের স্বজনরা জাহিদের মরদেহের সন্ধানে হন্যে হয়ে ট্রলার, জাল ও দড়িসহ ঘটনাস্থলসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় অভিযান বিরামহীনভাবে চালাতে থাকেন। পরে বহস্পতিবার বিকালে আমুয়া বন্দরের হলতা নদী থেকে জাহিদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় জেলেরা।

জাহিদের স্বজন মাওলানা তোহা ইমাম জানান, প্রতিদিনের মতো জাহিদ বুধবার দুপুর ১টার দিকে বাজারের হলতা নদীতে গোসল করতে নামে। এ সময় নদীতে ডুব দেয়ার পর আর উপরে না ওঠায় কিনারে থাকা তাইয়েবা নামে এক শিশু জাহিদের বাসায় গিয়ে খবর দেয়।

 

আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইমরান হোসেনকে (৩২) ফরিদপুরের সদরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদরপুর থানার পুলিশ ইমরানকে উপজেলার চরবিষ্ণপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সদরপুর থানার ওসি সুব্রত গোলদার ইমরানের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চর বিষ্ণুপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইমরান হোসেন সদরপুর উপজেলার চর চাঁদপুর গ্রামের মীর আব্দুল জলিলের ছেলে। ইমরান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নস্থানে পলাতক ছিলেন।

২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ইমরানের অনুপস্থিতিতে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। মামলা চলার সময় থেকেই ইমরান পলাতক ছিলেন। ইমরান ওই সময় ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলেন।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির-নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনদুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস। অনেক টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। তাকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের এক বছর পর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়।

২০১৭ সালের ৬ আগস্ট মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। চারজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও দুজনকে খালাস দেন। এ ছাড়া বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আপিলকারী দুজনকে খালাস দেওয়া হয়।

২০০৬ সাল থেকে ঢাকার শাঁখারীবাজারে দর্জির কাজ করতেন বিশ্বজিৎ। দোকানের নাম ছিল নিউ আমন্ত্রণ টেইলার্স। বড় ভাইয়ের দোকান। নিহত বিশ্বজিৎ দাসের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর দাসপাড়া গ্রামে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্বজিতের এক আত্মীয় বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে আছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আপিল বিভাগের রায়ে আশা করি সব আসামি শাস্তি পাবে।

 

বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের পাতাকাটা গ্রামে পঞ্চম বিয়েতে সম্মতি না দেয়ায় চতুর্থ স্ত্রী সালমা বেগমকে (৩৫) কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল কেটে দিয়েছে বিয়ে পাগল স্বামী মোখলেস মাতব্বর। আহত সালমা বেগমকে স্বজনরা উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মামলার পর পুলিশ বিয়ে পাগলা মোখলেসকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

আমতলী উপজেলার পাতাকাটা গ্রামের হাতেম আলী মাতব্বরের ছেলে মোখলেস মাতব্বর এ পর্যন্ত চারটি বিয়ে করেছেন। চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে পটুয়াখালী জেলার বোতলবুনিয়া গ্রামের মোনাসেফ সিকদারের মেয়ে সালমাকে এ বছর জানুয়ারি মাসে বিয়ে করেন। কিন্তু চারটি বিয়েতে সন্তুষ্ট নয় মোখলেস। তাই স্ত্রীদের অনুমতি নিয়ে তিনি পঞ্চম বিয়ে করতে চান। স্ত্রীর নিকট অনুমতি ও জমি বিক্রি করে টাকা দাবি করেন। সালমা সম্মতি ও টাকা দিতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিয়ে পাগল মোখলেস স্ত্রী বাড়ি থেকে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীর সকল মালামাল চুরি করে বিক্রি করেন। সালমা বাড়ি এসে মালামাল না পেয়ে স্বামী মোখলেসকে জিজ্ঞেস করেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে মোখলেস স্ত্রীর ডান হাতের বৃদ্ধাগুলি ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।

সালমা বেগম আরটিভি নিউজকে বলেন, আমার স্বামী আবার বিয়া হরার লইগ্যা মোর কাছে লিখিত জমি বেইচ্যা টাহা চায়। মুই এইয়্যা দেতে রাজি না অওয়ায় চুরি হইর‌্যা ঘরের মালামাল লইয়্যা গ্যাছে। মুই এ্যাইয়্যার প্রতিবাদ করায় মোরে কোপাইয়্যা আতের আঙ্গুল কাইট্টা দেছে।

সালমার বাবা মোনাসেফ সিকদার আরটিভি নিউজকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে জামাতা মোখলেস নির্যাতন করে আসছে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নীরবে সহ্য করেছি। এখন আর পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবদুল মুনায়েম সাদ আরটিভি নিউজকে বলেন, সালমা বেগমের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে ফেলেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার আরটিভি নিউজকে বলেন, স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় মোখলেসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পিরোজপুরে একটি ফ্ল্যাটে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে একজন চিকিৎসককে পিটিয়ে আহত করে ডাকাতি করা হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) ভোরে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের সরকারি বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি হলেন, ডা. সানজিদা আজাদ শিখা (২৮)। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শিশির রঞ্জন অধিকারী জানান, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের সরকারি কোয়ার্টারের একটি ভবনের নিচের তলায় একা থাকতেন ডা. সানজিদা আজাদ শিখা। বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর রাতে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ডাকাতির উদ্দেশ্য নিয়ে বাসার জানালার গ্রিল কেটে তারা বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় বিষয়টি টের পেয়ে ডাকাতিতে বাধা দিতে গিলে ডাকাতেরা তাকে মারধর করে।

পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ. জা. মো. মাসুদুজ্জামান জানান, ডাকাতরা আলমারি খুলে নগদ ৫২ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপ ও ২টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন ডা. সানজিদা আজাদ শিখা। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার চেষ্টা করছে।