ককটেল বিস্ফোরণে দু’জন নিহত হওয়াসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপে বরিশাল জেলার ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ৪১টি ইউনিয়নে নৌকা, তিনটিতে লাঙল, একটিতে হাতপাখা ও পাঁচটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (২১ জুন) অনুষ্ঠিত ৩৬ ইউনিয়নের নির্বাচনের মধ্যে বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে কামাল হোসেন মোল্লা নৌকা প্রতীক নিয়ে তিন হাজার ৯৫৬ ভোট, জাগুয়া ইউনিয়নে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হেদায়াতুল্লাহ খান হাতপাখা প্রতীক নিয়ে দুই হাজার ৩৯৬ ভোট, চরবাড়িয়া ইউনিয়নে মাহাতাব হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৮৯৯ ভোট ও টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নে নাদিরা রহমান চশমা প্রতীক নিয়ে পাঁচ হাজার ৫৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দীন আনারস প্রতীকে তিন হাজার ১৫৯ ও একই উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নজরুল ইসলাম চুন্নু পাঁচ হাজার ৮০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের এনায়েত হোসেন হাওলাদার ১২ হাজার ৮৫৪, হরিনাথপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান পাঁচ হাজার ৪৯২, গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে শাহজাহান তালুকদার ছয় হাজার ৩৪৩ ও মেমানিয়া ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসির উদ্দিন চার হাজার ৪৩৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে জসিম উদ্দিন পাঁচ হাজার ৭৮৫, কাজিরচর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক নিয়ে মন্টু বিশ্বাস নয় হাজার ৪৬৭, সফিপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে মো. আবু মুসা ১৩ হাজার ৩৪৬, নাজিরপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান আট হাজার ৫৩৩ ও চরকালেখান ইউনিয়নে লাঙল প্রতীক নিয়ে মিরাজুর ইসলাম চার হাজার ৬২৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

গৌরনদী উপজেলার শরিকল ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৩ হাজার ২৬৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী ফারুক হোসেন মোল্লা।

বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নে মজিবুল ইসলাম টুকু নৌকা প্রতীক নিয়ে আট হাজার ৬৭৫ ও বাইশারি ইউনিয়নে শ্যামল চক্রবর্তী নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ২১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নে শাহীন হাওলাদার নৌকা প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৮৮৪, বড়াকোঠা ইউনিয়নে সহিদুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৮৪, জল্লা ইউনিয়নে বেবী রানী দাস নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৮৪ ও ওটরা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে এম এ খালেক ১২ হাজার ২১৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নে লাঙল প্রতীক নিয়ে সিদ্দিকুর রহমান সাত হাজার ২৮২, দেহেরগতি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে মশিউর রহমান নয় হাজার ৩৮৮, কেদারপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নুরে আলম ছয় হাজার ৬৮৮ ও বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর (আগরপুর) ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান খান আনারস প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৭৩৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নে জাহিদুল হাসান নৌকা প্রতীক নিয়ে নয় হাজার ৬৪৯, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে বশির উদ্দিন নৌকা প্রতীক নিয়ে সাত হাজার ৯৪৪, ভরপাশা ইউনিয়নে আশ্রাফুজ্জামান খান নৌকা প্রতীক নিয়ে সাত হাজার ৯৬৬, গারুড়িয়া ইউনিয়নে এস এম কাইউম খান লাঙল প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৮৬৭, কলসকাঠি ইউনিয়নে ফয়সাল ওয়াহিদ নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৩৫৪, কবাই ইউনিয়নে জহিরুল হক তালুকদার নৌকা প্রতীক নিয়ে পাঁচ হাজার ৩৯, নলুয়া ইউনিয়নে আ স ম ফিরোজ আলম খান নৌকা প্রতীক নিয়ে তিন হাজার ৯২৬, ফরিদপুর ইউনিয়নে এস এম শফিকুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে চার হাজার ৩৬৬, দাঁড়িয়াল ইউনিয়নে সহিদুল ইসলাম হাওলাদার নৌকা প্রতীক নিয়ে পাঁচ হাজার ৪৩২ ও চরাদি ইউনিয়নে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় ২৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৪ জন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নে আবদুল হালিম সরদার, মুলাদী সদর ইউনিয়নে কামরুল আহসান, গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নে গোলাম হাফিজ মৃধা, মাহিলাড়া ইউনিয়নে সৈকত গুহ, খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে নূর আলম সেরনিয়াবাত, বার্থী ইউনিয়নে আবদুর রাজ্জাক, বাটাজোর ইউনিয়নে আবদুর রব হাওলাদার, চাদশী ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম, বানারীপাড়া উপজেলায় বিশারকান্দি ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম, ইলুহার ইউনিয়নে শহিদুল ইসলাম, সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নে মো. সিদ্দিকুর রহমান, বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নে আবদুল জলিল ঘরামী, উদয়কাঠি ইউনিয়নে রাহাদ আহম্মেদ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউনিয়নে গোলাম মোর্শেদ।

বরিশাল জেলার নয়টি উপজেলায় সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ২০ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার চার লাখ ৫২ হাজার ৩৩০ ও পুরুষ ভোটার চার লাখ ৬৮ হাজার ১৩৩ জন। ৪৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে দুই হাজার ৯৬৮টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

মো:রাজিবুল হক(বরগুনা সংবাদদাতা):
বরগুনার বামনা উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২টিতে সরকার দলীয় প্রার্থী ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন।

বিজয়ীরা হলেন ২নং বামনা সদর ইউনিয়নে সরকারদলীয় প্রার্থী(নৌকা) এ্যাডঃ চৌধুরী কামরুজ্জামান সগির বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ৮৫ ভোট তাঁর নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ এনায়েত কবির হাওলাদার পেয়েছেন ১০২০ ভোট। ৩নং রামনা ইউনিয়নে সরকারদলীয় প্রার্থী(নৌকা) মোঃ নজরুল ইসলাম জমাদ্দার বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ১২৩ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী( আনারস) মোঃ আঃ খালেক জমাদ্দার পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৬৫ ভোট।
দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ১ং বুকাবুনিয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী(চশমা) মোঃ সাইদুর রহমান সবুজ নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭৯ ভোট। তার নিকটতম আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী লিটন মোল্লা পেয়েছেন ৩হাজার ১০ ভোট। ৪নং ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান(আনারস) পেয়েছেন ৭ হাজার ৭১৫ ভোট।তার নিকটতম প্রার্থী (নৌকা) মোঃ মোঃ কামরুল ইসলাম নিজাম মৃধা পেয়েছেন ২ হাজার ৬৪ ভোট।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও ঝালকাঠি >> ঝালকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ মো. লিয়াকত আলী তালুকদার পুনরায় নির্বাচিত হয়েছে। তিনি পেয়েছেন ১৭ হাজার ৯৭৪ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন রানা নারিকেল গাছ পেয়েছেন ৫৯৪ ভোট। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ৪১৫ ভোট।

এ পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বেসরকারিভাবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ মো. লিয়াকত আলী তালুকদারকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এদিকে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে রেজাউল করিম জাকির, ২ নম্বর ওয়ার্ডে হাফিজ আল মাহমুদ (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এস এম আল আমিন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. কামাল শরীফ (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তরুণ কর্মকার (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. হুমায়ুন কবির খান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাবিবুর রহমান হাবিল, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হুমায়ুন কবির সাগর।

এরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে তাছলিমা বেগম, মালা বেগম এবং সাবিনা ইয়াসমিন নির্বাচিত হয়েছেন।

ঝালকাঠি জেলার ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩০টিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। শুধু একটি ইউপিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

নির্বাচিতরা হচ্ছেন- ঝালকাঠি সদরের বিনয়কাঠিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এজেএম মঈন উদ্দিন, শেখেরহাটে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. নূরুল আমিন খান সুরুজ, গাবখান ধানসিঁড়িতে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আবুল কালাম মাসুম, গাভারামচন্দ্রপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানী, নবগ্রামে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মুজিবুরল হক আকন্দ, নথুল্লাবাদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, বাসন্ডায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মোবারক হোসেন মল্লিক, কেওড়ায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আবু সাইদ খান এবং কীর্ত্তিপাশায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহীম মিয়া।

নলছিটি উপজেলার রানাপাশায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. শাহজাহান হাওলাদর, ভৈরবপাশায় আওয়ামী লীগ মনোনীত এ কে এম আবদুল হক, দপদপিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা, সুবিদপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আ. গফফার খান, কুশঙ্গলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আলমগীর হোসেন, সিদ্ধকাঠিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত জেসমিন আক্তার, মগরে আওয়ামী লীগ মনোনীত এনামুল হক শাহীন, মোল্লারহাটে আওয়ামী লীগ মনোনীত এ কে এম মাহাবুবুর রহমান, কুলকাঠিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত এইচ এম আখতারুজ্জামান বাচ্চু, নাচনমহলে আওয়ামী লীগ মনোনীত বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিরাজুল ইসলাম সেলিম।

রাজাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. নজরুল ইসলাম, সাতুরিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত সৈয়দ মইনুল হায়দার নিপু, বড়ইয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. সাহাব উদ্দিন হাওলাদার, মঠবাড়িতে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. শাহজালাল হাওলাদার, শুক্তাগড়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত বিউটি সিকদার ও গালুয়ায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় গোলাম কিবরিয়া পারভেজ।

কাঁঠালিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মাহামুদুল হক নাহিদ, পাটিখালঘাটায় আওয়ামী লীগ মনোনীত শিশির দাস, চেঁচরীরামপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. হারুন অর রশিদ, আমুয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আমিরুল ইসলাম সিকদার, শৌলজালিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মাহমুদ হোসেন রিপন ও আওড়াবুনিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মিঠু সিকদার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।’

ভোট কারচুপির অভিযোগে পটুয়াখালীর বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়নের চশমা মার্কার চেয়ারম্যানপ্রার্থী মিজানুর রহমান হিরন ও অটোরিকশা মার্কার চেয়ারম্যানপ্রার্থী সফিকুল ইসলাম মিঠু ভোটবর্জন করেছেন। আজ সোমবার (২১ জুন) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নে নিজ নিজ কার্যালয়ে এ ভোটবর্জনের ঘোষণা দেন।

এ সময় মিজানুর রহমান হিরন অভিযোগ করেন, নৌকা মার্কার কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র দখল করে নিজেরা ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ভরছেন। প্রিসাইডিং অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই ভোটবর্জন করেছি।

সফিকুল ইসলাম মিঠু একই অভিযোগ করে বরিশালটাইমসকে বলেন, এটি প্রহসনমূলক নির্বাচন। জোর করে ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না, তাই ভোটবর্জন করেছি।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী বিজয় মিছিলে কক‌টেল হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই জন।

এর আগে সকালে নির্বাচনী সহিংসতায় এই উপজেলায় মৌজে আলী মৃধা (৬৫) নামে আরও এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

এই নিয়ে এ পর্যন্ত নির্বাচন কেন্দ্রীক সহিংসতায় একদিনে একই উপজেলায় দুই জন নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান।

তিনি জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে ঘটেছে এই ঘটনা।

খাঞ্জাপুর পাঙ্গাসিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার পরপর ওই এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে বিজয়ী সদস্য টিউবওয়েল মার্কার গিয়াস উদ্দিন মৃধার সমর্থকরা। এ সময় পরাজিত প্রার্থী মোরগ মার্কার আরজ আলী সরদারের সমর্থকরা ওই মিছিলে ককটেল হামলা চালায়।
এতে আবু বক্কর মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হন। পরে তাকে উপেজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় আরও দুই জন আহত হন। এছাড়া নিহতের ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রেঞ্জ ডিআইজি।

বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সড়কের পাশে রাখা সংবাদকর্মীদের মোটরসাইকেল ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই সংবাদকর্মীরা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে একটি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন।

সোমবার বেলা দেড়টার দিকে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

সংবাদকর্মীরা অভিযোগ করেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেনের সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ফারুক হোসেন।

স্থানীয় দৈনিক বরিশাল সময় পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এইচ এম হেলাল বলেন, ‘নির্বাচনি সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি আমার এক সহকর্মীকে নিয়ে ওই কেন্দ্রে যাই।

এর আগে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল কেন্দ্রের বাইরে সড়কের একেবারে পাশে রেখে আসি। কিছুক্ষণ পর বের হওয়ার পথে দেখতে পাই আমার মোটরসাইকেলসহ অন্য সাংবাদিকদের আটটি মোটরসাইকেল সড়কের পাশে ফেলে দেয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানতে পারি পুলিশ সদস্যরা এই কাজ করেছেন।

 

দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার বরিশাল প্রতিনিধি এইচ আর হীরা বলেন, ‘অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেনের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।

তিনি নির্দেশ না দিলে অন্য পুলিশ সদস্যরা কীভাবে আমাদের মোটরসাইকেল ফেলে দেয়? এতে আমাদের মোটরসাইকেলের অনেক পার্টসের ক্ষতি হয়েছে। ইন্ডিগেটর আর হেডলাইট ভেঙে গেছে।

 

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, ‘কোনো সাংবাদিকের মোটরসাইকেল ফেলে দেয়া হয়নি। সড়কের পাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে শুধু।

ঝালকাঠি পৌর নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে দুপক্ষের সংঘর্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিলসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২১ জুন) বিকেলে পৌরসভার উদ্বোধন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে পৌরসভার নয় ওয়ার্ডের ২২ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৩টার দিকে কেন্দ্রের সামনে গিয়ে একটি পক্ষ ধীর গতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে উত্তেজিত হয়ে উঠলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টেবিল লাইট প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিলসহ পাঁচজন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অপরদিকে পৌর এলাকার ৬ নম্বর বাসন্ডা ওয়ার্ডের জেবিআই ইছানীল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন।

বাসন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভিতরে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই মেম্বার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের সংঘর্ষ হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় গুলিতে মনির মাঝি (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে।

এছাড়াও চরফ্যাশনের আরো কয়েকটি ইউনিয়নে নির্বাচনের বিক্ষিপ্ত সংর্ঘষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকাল ১১ টার দিকে চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চর ফকিরা এলাকায় মেম্বার প্রার্থী ইয়াসিন মাঝি ও রুহুল আমিন দালালের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংর্ঘষ হয়।

এক পর্যায়ে গুলিতে বশির সিকদারের পুত্র মনির মাঝি নামে এক যুবক গুলি বিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ রাবার বুলেটের গুলি ছুঁড়ে।

এদিকে নিহতের পিতা অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ছেলে ভোট দিয়ে ফিরতে ছিলো। এ সময় সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুলিতে তাঁর পুত্র নিহত হন।

তবে ভোলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থীর ছেলে লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে হামলা চালায়।

এ সময় এক প্রার্থীর ছেলের গুলিতে মনিরের মৃত্যু হয়। পুলিশ ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

শামীম আহমেদ ॥ ব‌রিশাল জেলার হিজলা উপ‌জেলার মেমানিয়ায় ইউ‌নিয়‌নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘ‌টে‌ছে।

সোমবার (২১ জুন) দুপুর একটার দি‌কে ২ নং ওয়ার্ড খাগের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ‍এ ঘটনা ঘটে। এ‌তে কমপ‌ক্ষে ১০ জন আহত হ‌য়ে‌ছে ব‌লে স্থানীয়রা জা‌নি‌য়ে‌ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্য করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। ‍

 

জানা গে‌ছে, ২ নং ওয়ার্ড খাগের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদানকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী ড. আলাউদ্দিনের সাথে বাগবিতন্ডা ঘটে ঘোড়া প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির ‍উদ্দিনের। ‍

 

বাগ‌বিতন্ডার সূত্রধ‌রে ‍উভয় প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা সংর্ঘষে জ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়েন। দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ‍এবং ‍ইটপাটকেল নিক্ষেপের ফলে ‍এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রনে আন‌তে লাঠিচার্য এবং ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া পু‌লিশ।

 

এদিকে হরিনাথপুর গঙ্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রন নিতে গেলে স্থানীয়দের সাথে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এক আনসার সদস্য ও এক পুলিশ সদস্যে আহত হয়।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় ঘন্টাখানেক ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহনন বন্ধ থাকে।

 

উভয় ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ১৩ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ার কথা নিশ্চিত করে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অস‌ীম কুমার সরকার জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক র‌য়ে‌ছে‌।