রিমান্ডে নিয়ে হত্যা মামলার নারী আসামি মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বরিশালের উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য বরিশালটাইমসকে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান।
এদিকে সোমবার (০৫ জুলাই) আদালতের নির্দেশনা অনুসারে নির্যাতিতা নারী বাদী হয়ে প্রত্যাহার হওয়া দুই কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
সোমবার দুপুর ১টায় প্রত্যাহারকৃত ওসি হলেন- জিয়াউল আহসান এবং পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম। পরিদর্শক ওই নারী আসামির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান বরিশালটাইমসকে বলেন, দায়িত্বে অবহেলায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে নির্যাতিতা নারীর বর্ণনা অনুযায়ী প্রত্যাহারকৃত দুই কর্মকর্তাসহ নির্যাতিতা নারী মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তবে অপর ৩ জনের নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। এ কারণে গঠিত তদন্ত কমিটির দেয়া রিপোর্ট অনুসারে অপর ৩ জনকে শনাক্ত করে তাদেরও এই মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এদিকে আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে শের ই বাংল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সাইফুল ইসলাম চিকিৎসাকালীন সময় আসামি মিতুর শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই বরুন চক্রবর্তী ওইদিনই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় মিতুকে; যার সাথে তার ভাইয়ের পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো বলে দাবি করেন বরুন।
এই মামলার আসামি হিসেবে ওইদিন সেই মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলী আদালত নারী আসামির ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই ওই নারীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় তাকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে দেখে এর কারণ জানতে চান আদালত। ওই নারী আদালতের কাছে তাকে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। আদালত একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তার দেহ পরীক্ষা করে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পান।