কুমিল্লার মুরাদনগরে আবু তাহের নামে একজনকে হত্যার দায়ে করা মামলায় তার স্ত্রী জোলেখা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীর গলায় দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পর এই রায় ঘোষণা করা হলো।
মঙ্গলবার কুমিল্লার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন এই রায় ঘোষণা করেন। সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০০৯ সালের ৪ মার্চ রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের আবু তাহেরকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে স্ত্রী জোলেখা বেগম। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে দিনের বেলায় পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরবর্তীতে রাত ৯/১০টার দিকে স্বামী-স্ত্রী একই বিছানায় ঘুমাতে যায়। এরপর আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে স্বামী আবু তাহেরকে ঘুমে রেখে গলায় দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে স্ত্রী জোলেখা। পরবর্তীতে স্বামীর মরদেহ ঘরে রেখে অন্য পার্শ্ববর্তী বাড়ির পাশে ঝোপের ভেতর লুকিয়ে থাকে। জোলেখা আদালতে বিচারকের সামনে ১৬৪ ধারায় এভাবে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
আরও জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন পুলিশ আবু তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করে এবং স্ত্রী জোলেখাকে ঝোপের ভেতর থেকে আটক করে। এ ঘটনায় তাহেরের ভাই ওয়াহেদ আলী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।
হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর একই বছরের ৫ মে মামলার চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক আজ রায় ঘোষণা করেন।