বরিশালে মজিবুর রহমান সরোয়ার এর নেতৃত্বে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ।

বরিশাল নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ডস্থ গড়িয়ারপাড় এলাকায় বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সরোয়ার এর নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

এ সময় তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে হাতে লিফলেট তুলে দেন এবং বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনার মূল ধারনাগুলো জনসাধারণের কাছে ব্যাখ্যা করেন।

সরোয়ার বলেন, “বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।

লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে সরোয়ারের সাথে ছিলেন ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সজীব বেগ মিসাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী নিজাম উদ্দিনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

নেতারা বলেন, জনগণের সাথে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততা বাড়াতে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের এই দফাগুলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে তাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। স্থানীয় এলাকাবাসী সরোয়ারের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার পাশাপাশি জনগণের মতামত ও প্রত্যাশা বোঝার এই উদ্যোগ প্রয়োজন ছিল অনেক আগেই।

 

 

বরিশাল বিভাগের  ভোলার লালমোহন উপজেলায় মো. ফরিদ (৩৭) নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বসতঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ফরিদ ওই এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গ্রেফতার ফরিদ নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিতেন। তার টার্গেট ছিল নারীরা। যেসব বাড়িতে পুরুষরা থাকতেন না, সেসব বাড়িতে গিয়ে নারীদের বলতেন স্বামী তাকে ভালোবাসেন না। তার স্বামীর ওপর জিন ভর করেছে। ওই জিন দূর করলে স্বামী তাকে ভালোবাসবেন। যার জন্য ঘরের সকল স্বর্ণালঙ্কার একটি গøাসে রাখতে বলতেন নারীদের। এরপর তার টার্গেটে থাকা নারীকে বিভিন্ন খাল এবং পুকুর থেকে পানি আনতে পাঠাতেন। এই সুযোগে দামি সব স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চম্পট দিতেন ফরিদ।

ওসি বলেন, কয়েকদিন আগে লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ এলাকার এক ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ করেন। ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের একপর্যায়ে বেরিয়ে আসে ফরিদের অভিনব এই প্রতারণার ঘটনা। এরপর মঙ্গলসিকদার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মো. এরশাদ উকিল সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে প্রতারক ফরিদকে নিজ বসতঘর থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণা করে নেওয়া স্বর্ণালঙ্কারও উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, ভোলাসহ অন্য জেলায় গিয়েও এ ধরনের প্রতারণা করতেন ফরিদ। তার বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার অভিযোগে নোয়াখালী ও ভোলাসহ বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। লালমোহন থানায়ও তার বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতারণার বিষয়ে আরো জানতে ফরিদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরের দিন মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বারে ভাঙ্গা থেকে ঢাকার দিকে চলাচলকারী সব ধরনের যানবাহনে ভোর থেকেই ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই কার্যক্রম তদারকিতে ছিলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, ভাঙ্গা থানার ওসি আশরাফ হোসেন এবং ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি রোকিবুজ্জামানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।

ফরিদপুর পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে।

সকাল থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা দক্ষিণপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালিয়েছে। এছাড়া হাইওয়ের এক্সপ্রেসপথের চতুর্মুখী স্থানে সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলার মাধ্যমে চলাচলকারী প্রতিটি সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মহাসড়কে টহল দিচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে মারাত্মক আহত করার অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যার রায়ে সোমবার (১৭ নভেম্বর) হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড দেয় বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

 

 

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে ২ ঘণ্টা অবরোধ।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে জেলার রাজৈর উপজেলার কামালদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এর আগে, মহাসড়কের গোপালপুর ও মেলকাইসহ প্রায় ৮টি স্থানে ১২টি মোটা গাছ ফেলে অবরোধ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের আমগ্রাম ব্রিজ ও কামালদি ব্রিজের মাঝামাঝি একটি স্থানে গাছ কেটে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রী ও চালকদের।

পরে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। রাজৈর থানা ও মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে গাছ সরিয়ে সকাল ৭টার দিকে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক করে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টেকেরহাট পোর্ট স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশনের লিডার মো. ইসমাইল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করি। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল ৭টার দিকে সড়কের ওপর থেকে গাছটি সরাতে সক্ষম হই। গাছটি মহাসড়কের পাশ থেকে কেটে সড়কের ওপরে ফেলা হয়েছে।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোরের দিকে মহাসড়কে গাছ ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছটি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

উল্লেখ্য, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন বাস্তবায়নে গত রোববার (১৬ নভেম্বর) ভোরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গাব্রিজ থেকে ভূরঘাটার মাঝামাঝি ৮টি স্থানে ১২টি গাছ ফেলে অবরোধ করা হয়। এ সময় মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করেন তারা।

এতে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর কালকিনি থানা, ডাসার থানা ও মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

 

‎পিরোজপুর-১ আসনের (সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী) সাবেক সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই বেসরকারি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের গুলশান-১ শাখার কর্মকর্তা শামীম শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

‎মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, সোমবার দুপুরে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে পিরোজপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

‎পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর সদর ও নাজিরপুর থানায় দায়ের হওয়া তিমটি মামলার অভিযুক্ত ছিলেন শামীম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে ডিবি পুলিশের একটি দল গুলশানের একটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর শামীমকে সেখান থেকে পিরোজপুরে নিয়ে আসা হয়েছে।

‎পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, পিরোজপুরে তিনটি মামলায় শামীমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে পিরোজপুরে নিয়ে আসা হয়েছে। আজকেই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে সোপর্দ করা হবে।

 

বরিশাল সদর উপজেলার দিনারের পুল এলাকায় সড়কের পাশে থাকা একটি বাসে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাত ২টার দিকে চরকাউয়া-গোমা আঞ্চলিক সড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা বিষয়টিকে নাশকতা দাবি করলেও এটি অগ্নিসংযোগ নাকি অগ্নিকাণ্ড, তা নিশ্চিত নয় পুলিশ।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় বাসের মধ্যে কেউ ছিল না। ঘটনাস্থলের অদূরে টহল পুলিশ ছিল। যে কারণে ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এতে বাসের কয়েকটি সিট পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, সৌরভ পরিবহন নামের বাসটি ১৬-১৭ দিন ধরে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছিল। তবে কীভাবে এটিতে আগুন লেগেছে তা বলা যাচ্ছে না। এটি অগ্নিসংযোগ নাকি অগ্নিকাণ্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি অগ্নিসংযোগ হয় তবে দোষীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

যদিও স্থানীয়দের দাবি, থেমে থাকা বাসটিতে কেউ আগুন না দিলে মাঝরাতে সেটি পুড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ বাসটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ অবস্থায় সড়কের পাশে রাখা ছিল।

 

শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আসামি করা হয়েছে ৫০ জনকে।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে মাদারীপুরের কালকিনি থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলাটি করা হয়। পরে রাতেই একজন এজাহারনামীয় আসামি মহিউদ্দিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি কালকিনি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।

পুলিশ জানায়, রবিবার ভোরে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালপুরে জড়ো হন মীর গোলাম ফারুক। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মাদারীপুর জেলা কমিটির সদস্য, কালকিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। এ সময় শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা করা হলে দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন দূরদূরান্তের যাত্রী ও চালকরা। পরে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ, উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা প্রায় ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় রবিবার রাতে কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তালেব বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক এবং কালকিনি পৌরসভার সাবেক মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদারসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে মহিউদ্দিন হাওলাদারকে তার নিজ বাড়ি কালকিনি উপজেলার পশ্চিম মিনাজদী গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মাদারীপুরের কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, গোপালপুর ব্রিজের উপর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে সরকার বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। মহাসড়কে গাছ ফেলায় বেশ কিছু সময় যানচলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং এক আওয়ামীলীগের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদেরও গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

 

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুকুল বেগম (৫০) নিশানবাড়িয়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান তালুকদারের স্ত্রী। হাবিবুর চাকামইয়া ইউনিয়নের মৌলভীরতবক গ্রামের জামে মসজিদের ইমামতী করেন বলে জানায় পুলিশ।

মুকুল বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে ২৭ বছর বয়সী মুসা তালুকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া থানার ওসি তদন্ত মো. ইলিয়াস তালুকদার।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, পাশের বাড়ির এক নারীর সঙ্গে মুকুল বেগমের বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল। তাই উভয়ের বাড়িতে প্রায়ই তাদের আসা যাওয়া ছিল। সন্ধ্যার পর পাশের বাড়ির ওই নারী মুকুল বেগমের সঙ্গে দেখা করতে আসার পর ঘরে ঢুকে রক্ত দেখে চিৎকার করেন। তখন বাড়ির লোকজন এসে মুকুল বেগমের মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।

রোববার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় মুকুল বেগমের স্বামী হাবিবুর রহমান বাড়িতে ছিলেন না বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেন, আমার প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন অনেক দিন আগে। মুকুল বেগম আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। গতকাল দুপুরে ভাত খাওয়ার পর আমি নামাজ পড়াতে মসজিদে যাই। ঘটনা শুনতে পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি আমার সব শেষ।”

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, মুসা তাদের নির্মানাধীণ ভবনের ছাদে পানি দিচ্ছিল। এ সময় সাথে পাশের বাড়ির আরও একটি ছেলে ছিল। সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

 

 

বরগুনা প্রতিনিধি : তালাকপ্রাপ্তা এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিন বছর সংসার পেতে ধর্ষণ করার অভিযোগে মো. রুবেল মুন্সীর বিরুদ্ধে সোমবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী।

ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে বরগুনার গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ৭ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু।

অভিযুক্ত মো. রুবেল মুন্সী (২৮) বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বাইনচটকী গ্রামের মো. রুস্তুম আলী মুন্সীর ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী ও আসামি পরস্পর প্রতিবেশী। চার বছর আগে বাদী তালাকপ্রাপ্ত হন। প্রতিবেশী মো. রুবেল মুন্সী বাদীর বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেন। বাদী ও তার বাবার বিপদ-আপদে সব সময় এগিয়ে আসতেন রুবেল। এ কারণে বাদী ও তার পরিবার রুবেলের প্রতি বিশ্বাস অর্জন করে। ৩ বছর পূর্বে রুবেল বাদীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রুবেল কুরআন শরীফ সাক্ষী রেখে স্থানীয় মৌলভী দিয়ে গোপনে বাদীকে বিয়ে করেন। রুবেল বাদীকে নিয়ে ঢাকায় বাসা রেখে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তিন বছর সংসার করেন।

বাদী বলেন, আমি ও আমার পরিবার রুবেলকে বারবার কাবিন দেওয়ার জন্য বলেছি। রুবেল বলে কিছু দিনের মধ্যেই কাবিন দেব। এমনিভাবে তিনটি বছর চলে যায়। ঢাকা থেকে আমরা বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসতাম। কিছুদিন থেকে আবার ঢাকায় চলে যেতাম। কিছুদিন আগে আমরা আবার বাড়িতে বেড়াতে আসি।

তিনি বলেন, ১৪ নভেম্বর সকালে আমার বাবা ও আমি রুবেলের কাছে আবারও কাবিন রেজিস্ট্রি করে দিতে বলি। এ সময় রুবেল উত্তেজিত হয়ে বলে আমার সঙ্গে তোমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি তোমাকে বিয়ে করিনি। এই কথা বলে আসামি রুবেল চলে যায়। আমি রুবেলকে বোঝাতে চাই কাবিন না হলে বিয়ের স্বীকৃতি হয় না। রুবেল আমাকে সাফ জানিয়ে দেয় সে আমাকে বিয়ে করেনি। রুবেল আমাকে বিয়ে করে তিন বছর সংসার করার পরে এখন বিয়ে অস্বীকার করে। রুবেলকে আমি তিন বছর বিশ্বাস করে তার সংসার করেছি। অসংখ্যবার রুবেল আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। রুবেল আমার সঙ্গে প্রতারণা করে বিয়ের নাটক সাজিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করবে তা আমি ও আমার পরিবার বুঝতে পারিনি।

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ পেলে তদন্ত শুরু করব। রুবেলের ফোন নাম্বার বাদীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন না। যার কারণে রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

 

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা রায়হান কাওছারকে বিদায়ী বেলায় ‌‘জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর তারা নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।

 

এ সময় তারা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন- ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট পতনের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেবেছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দালালমুক্ত হবে। বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকার বলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক পদে অসীন হয়ে বরিশালবাসীর জন্য স্মরণীয় কিছু রেখে যাবেন কিন্তু তার ১ বছর কর্মক্ষেত্রে নগরবাসীর সাথে রুর আচরণ এবং বিভিন্ন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের সাথেও বিভিন্ন সময় অসৌজন্যমূলক আচরন করেছে। যা সকলেই অবগত আছেন। ২০০২ সালে ৫৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ সিটি কর্পোরেশন হিসাবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন আত্মপ্রকাশ বা সৃষ্টি হয়। ২০০৩ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার তাদের অর্গানোগ্রামের পদ সৃষ্টির সাপেক্ষে বিভিন্ন পদে ১২১ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন।

১/১১ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছ দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের ভিন্ন ভিন্ন স্মারকে ২০০৭ সালের ১৮ অক্টোবর চাকুরীচ্যুত করা হয়। একই বছর ভিন্ন ভিন্ন রিটে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিবিশনে পিটিশন দাখিল করে। ২০১০ সালে হাইকোর্ট থেকে বহালের রায় পান তারা। ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চাকরি বিধিমালার গেজেট প্রকাশ পায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ রয়েছে সাংগঠনিক কাঠামোতে পদ সৃষ্টি সাপেক্ষে তাদের স্থায়ীকরণ করা হবে। তাদের সকলের পদ সাংগঠনিক কাঠামোতে সৃষ্টি হয়েছে এবং উল্লেখিত চাকরী বিধি মালা ২০১০ এর দশম অধ্যায়ের ৫৭ অনুচ্ছেদ এর ধারা ১ এর ক্ষমতা বলে তাদের শুন্য পদে স্থায়ীকরেণের কোন আইনগত বাধা নেই।

 

প্রশাসক সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বারবার তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শূন্য পদে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিলেও শূন্য পদে স্থায়ী করেনি বরং বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করতে থাকে। আইন, মানবিক বিভিন্নভাবে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি একাধিক বার তার রুম থেকে তাদের বের করে দেন। তাদের প্রশ্ন আইনগত বাধা না থাকলেও কেন তাদের স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। বরিশালের একাধিক বিজ্ঞ আইনজীবী তাদের শূন্য পদে স্থায়ীকরণের আইনগত বাধা নেই মর্মে মতামত প্রধান করেছেন।

বিভাগীয় কমিশনার তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৫৯ জন শ্রমিককে চাকরিচুত্য করেছেন। যারা এখন মানবতার জীবনযাপন করছেন অথচ প্রশাসক শ্রমিক পদে বিভিন্ন সময় নতুনভাবে শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বিপুল অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ, পদোন্নতি দিয়েছেন। যাদের মধ্যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি ফ্যাসিষ্টের দোসর হিসাবে পরিচিত। যা সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করলেই সত্যতা পেয়ে যাবেন। ঠিকাদারী, জমি ক্রয় বিভিন্ন কাজ থেকে টাকা না নিয়ে প্রশাসক কোন ফাইল এ স্বাক্ষর করে না।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশাসকের সাথে তাদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে বলতে গেলে তিনি অসভ্য ভাষা ব্যবহার করে এবং গুলি করার হুমকি প্রদান করে।

 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অতিরিক্ত সচিব মো. রায়হান কাওছারকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। ৪ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এরপর বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) প্রশাসকের দায়িত্বও পেয়েছিলেন। তবে তার এক বছর ৯ দিনের কার্যক্রমে বিবিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও নগরবাসী অতিষ্ঠ এমনটাই দাবি করেছেন নগর ভবনের সামনে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টার সংবাদ সম্মেলন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সবশেষ ১৪ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছারকে বদলি করা হয়।