বরিশাল জেলায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধে “No Mask, No Service” প্রচারণা বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে মোবাইল কোর্ট ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

 

আজ ৬ ডিসেম্বর বরিশাল জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধে মোবাইল কোর্ট ও সচেতনতা কার্যক্রমে ৬৭ জন ব্যক্তিকে ৩০ হাজার ২শত ৫০ টাকা অর্থ দন্ড প্রদান করেন উপজেলার নির্বাহী অফিসার’রা।

 

বরিশাল জেলায় কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য দ্বিতীয় সংক্রমণ প্রতিরোধে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম অজিয়র রহমান জেলার সর্বত্র স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণে “No Mask, No Service–মাস্ক পরিধান করুন, সেবা নিন” শীর্ষক প্রচারণার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং তা বাস্তবায়নে ব্যাপক উদ্যোগ নেন। তার অংশ হিসাবে আজ বরিশাল জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

 

বরিশাল মহানগর

মাস্ক পড়তে জনসাধারণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে নগরীর আমতলা মোড়, সাগরদী ও রুপাতলী এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এ সময় ১৬ ব্যক্তিকে মোট ৬হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে বাজার রোড, আমানতগঞ্জ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আফরোজ। এসময় স্বাস্থ্যবিধি ভংগ করায় ৫ জন ব্যক্তি কে ৮হাজার ৭শত টাকা অর্থ দন্ড প্রদান করা হয়।

 

 

অপর একটি অভিযানে গতকাল সন্ধ্যায় মাস্ক পড়তে জনসাধারণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে নগরীর লঞ্চঘাট এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবদুল হাই। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এ সময় ৯ ব্যক্তিকে মোট ২হাজার ৭শত টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম

 

বাবুগঞ্জ

বাবুগঞ্জ উপজেলার বাবুগঞ্জ বাজারে করোনা ভাইরাস মহামারী চলাকালীন স্বাস্থ্য বিধি পরিপালন ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন মোঃ আমীনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট । মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালীন বাবুগঞ্জ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করার লক্ষ্যে সচেতন করা হয় এবং যারা মাস্ক পরিধান করেনি তাদেরকে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ অনুযায়ী ৪ ব্যক্তিকে ৩হাজার ৩শত টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।

 

 

মোবাইল কোর্ট চলাকালীন অর্থদণ্ড প্রাপ্ত ব্যক্তিদের উপজেলা প্রশাসন, বাবুগঞ্জ, বরিশাল তত্ত্বাবধানে তৈরিকৃত মাস্ক পরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী চলাকালীন বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিয়মিত মাস্ক পরিধান করা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়।

 

মোবাইল কোর্টকে আইনানুগ সহযোগিতা করে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের বাবুগঞ্জ থানার এস আই মোঃ মাহতাব উদ্দিনসহ পুলিশ ফোর্স।

 

উজিরপুর

নো মাস্ক নো সার্ভিস বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রনতি বিশ্বাস এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১২ জনকে ৫হাজার ২শত টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

 

গৌরনদীতে মাস্ক পড়তে জনসাধারণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে গৌরনদী উপজেলার ” টরকী বন্দর” এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। পরিচালনাকালে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় ৩ ব্যক্তিকে মোট ১হাজার ৪শত টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

একই সময় জনসাধারণের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান করেন গৌরনদী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক অহিদ ও তার টিম।

আগৈলঝাড়া

নো মাস্ক নো সার্ভিস বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবুল হাশেম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। অভিযানকালে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১০ জনকে ২ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

 

বাকেরগঞ্জ

মাস্ক পড়তে জনসাধারণকে সচেতন করতে বাকেরগঞ্জ এর উপজেলা পাড়ায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মোঃ তরিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ভূমি বাকেরগঞ্জ ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এ সময় ৮ ব্যক্তিকে মোট ৯শত ৫০টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করেন বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ।

 

এছাড়া বরিশাল জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও যথারীতি “No Mask, No Service” বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম অজিয়র রহমান বলেন, বরিশালবাসীর কল্যাণে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য দ্বিতীয় সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।


করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ২৪ ও নারী সাতজন। হাসপাতালে ৩০ জন এবং বাড়িতে একজন মারা যান। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ৮৩৮ জনে দাঁড়াল।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৭টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ৩১৫টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৩ হাজার ২১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৯টি। এ সময়ে আক্রান্ত হিসেবে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৬৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৫ জনে।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৫২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬০ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক শূন্য ৬০ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ, শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৯২ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত ৬ হাজার ৮৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ২৩১ জন (৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ) ও নারী এক হাজার ৬০৭ জন (২৩ দশমিক শূন্য ৫০ শতাংশ)।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩১ জনের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচ, পঞ্চাশোর্ধ্ব চার এবং ষাটোর্ধ্ব ২১ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, চট্টগ্রামে তিন, রাজশাহীতে এক, খুলনায় এক, বরিশালে দুই, সিলেটে দুই, রংপুরে দুই ও ময়মনসিংহে দুই।

নিজস্ব প্রতিবেদক, কলাপাড়া:: পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে মকবুল হাওলাদার (৪০) ও জহিরুল ইসলাম খান (৩২) নামে দুই মাদক ব্যবসাযীকে ১১ বোতল বিদেশী মদসহ আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। শনিবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটার কেরানিপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের রাতেই মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটককৃত মকবুল পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের মৃত ধলু হাওলাদারের ছেলে ও জহিরুল খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলদা ইউনিয়নের বাচ্চু খানের ছেলে।
কলাপাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফরহাদ হোসেন বরিশালটাইমসকে জানান, মকবুল দীর্ঘদিন ধরে কুয়াকাটার বিভিন্ন হোটেলে দেশী বিদেশী মদ সাপ্লাই দিয়ে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে ১১ বোতল বিদেশি মদসহ হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের শনিবার রাতেই মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বরিশালটাইমসকে বলেন, এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

 

প্রথম ধাপে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুর পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে প্রথমে বাকেরগঞ্জ এবং পরে উজিরপুর পৌরসভায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই করা হয়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, বাকেরগঞ্জে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তিনজন মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়া, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।


অপরদিকে, উজিরপুর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তিন প্রার্থী মেয়র পদে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নয়জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। উজিরপুরে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আঁখি খানম নামে একজনের মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় তার মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।


মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা ও গাঁজাসহ সন্ত্রাসী মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল র‌্যাপিট এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-৮) এর সদস্যরা। এ ঘটনায় র‌্যাব বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম ছরোয়ার র‌্যাবের দায়ের করা মামলার উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, বুধবার মধ্যরাতে র‌্যাবের টহল দল রত্নপুর বাজারে ডিউটিকালীন অবস্থায় স্থানীয় দলিল উদ্দিন হাওলাদারের ঘরে অস্ত্র ও মাদকসহ এক ব্যবসায়ির অবস্থানের খবর পান। পরে র‌্যাব সদস্যরা ওই বাড়ি ঘেরাও করে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী ছয়গ্রামের মৃত জব্বার হাওলাদারের পুত্র মনির হোসেনকে (৩৬) আটক করে। মনিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার (মনির) শ্বশুর দলিল উদ্দিনের ঘর থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ছোড়া, ২০পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৩৫ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেন।

এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি আরও বলেন, র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটক মনির জানিয়েছে সে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক এনে এলাকায় পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করতো। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকসহ আটক মনিরকে বৃহস্পতিবার সকালে থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাবের ডিএডি মোঃ আব্দুুল্লাহ বাদি হয়ে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত মনির হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় বৌভাতের দিন বর মো. রফিকুল ইসলামের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

কয়েক দিন আগে উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের সফিকুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বেতাগী ভাসনদা এলাকার আবদুল মান্নানের মেয়ে ময়নার বিয়ে হয়। সোমবার (৩০ নভেম্বর) ময়নাদের বাড়িতে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বুধবার ছেলের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ক্ষণিকে বিয়েবাড়ির আনন্দ রূপ নিল বিষাদে। সেই সঙ্গে নামে কান্নার রোল।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন পর পর তার রক্ত পরিবর্তন করতে হয়। রফিকুল অসুস্থ থাকায় এতদিন বিয়ে করেননি। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। সোমবার অনুষ্ঠান করে নববধূকে বাড়িতে তুলে আনেন। বুধবার ছেলের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়। মেয়েদের বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় আত্মীয়-স্বজন বুধবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু হঠাৎ করে সকাল ১০টার দিকে রফিকুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে দুপুর ১২টার দিকে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

Advertisement

স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে নববধূ ময়না অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকেও তাৎক্ষণিকভাবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি সুস্থ হন। বর্তমানে নববধূ চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়রা জানান, রফিকুল ইসলামের এমন মৃত্যু মানা যায় না। কয়েক দিন আগে বিয়ে করেছেন। আজ তার বাড়িতে অনুষ্ঠান। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। অনুষ্ঠানের দিন তার মৃত্যু হলো। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুক।

মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বুধবার রফিকুল ইসলামের বাড়িতে বৌভাবের অনুষ্ঠান ছিল। অথচ এদিন সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হলো। রাত সাড়ে ৭টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

ঝালকাঠি-বরিশালসহ ১০ রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে ঝালকাঠি বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন। মাহেন্দ্রা গাড়ি চালক কর্তৃক বাস মালিককে মারধরের প্রতিবাদে বুধবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে এ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আকস্মিকভাবে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীরা।

 

ঝালকাঠি বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ঝালকাঠি-বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রিহুইলার মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও ঝালকাঠিতে সুযোগ পেলেই এ গাড়িগুলো চলাচল করছে।

 

মালিক সমিতি বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় বাস মালিক গোলাম রসুল আঞ্চলিক মহাসড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচলে বাধা দেয়।

 

তিনি আরও জানান, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহিন্দ্রা চালকরা তাকে মারধর করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ঝালকাঠি বাস টার্মিনালে মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের জরুরি সভা হয়।

 

সভায় প্রশাসনের কাছে আঞ্চলিক মহাসড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি বন্ধের দাবি জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝালকাঠি-বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পাথরঘাটা, ভান্ডারিয়া, কাউখালী, মঠবাড়িয়া ও আমুয়াসহ ১০ রুটে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এ রুটে যাতায়াতকারী হাজারো যাত্রী।

ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ২৬ নভেম্বর শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে। বুধবার ৬ষ্ঠ দিনের মতো এ ধর্মঘট পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।

লাগাতার ধর্মঘটে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বিশেষ করে টিকাদান বন্ধ থাকায় শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মায়েরা।

ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে কর্মবিরতি সমাবেশে বক্তৃতা করেন সভাপতি সৈয়দ বশির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করীম, স্বাস্থ্যসেবা পরিদর্শক সাইদা সুলতানা ও শাহিন তারা প্রমুখ। স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, গত ২৬ নভেম্বর থেকে সারাদেশের সঙ্গে একযোগে ঝালকাঠিতেও কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। তাদের দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, টেকনিকেল বেতন স্কেল, নিয়োগ বিধিতে স্নাতক সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ ভ্যাকসিন হিরো উপাধি প্রদান।

 

তৃণমূলের সেবা প্রত্যাশীরা জানান, করোনাকালে গ্রামের গরিব ও অসহায় মানুষ যদি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে সেটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হবে। কারণ তাদের সেবাগুলো একদম সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। যার মধ্যে রয়েছে নবজাতক শিশুদের বিভিন্ন ধরনের টিকা প্রদান। অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলায় তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রয়েছে। কোনো স্বাস্থ্যকর্মী সেবা দিচ্ছেন না। এতে ভোগান্তি বেড়েই চলছে।

স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, পোলিও ও গুটিবসন্তের মতো ভয়ংকর রোগগুলো দেশ থেকে বিলুপ্ত করার পেছনে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের অপরিসীম অবদান রয়েছে। এরপরও কেন সরকার স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নিচ্ছে না। এ দাবিগুলো মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলার স্বাস্থ্য সহকারী সমিতির সভাপতি মো. জোবায়ের হোসেন জানান, কর্তা ব্যক্তিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি না থাকায় আমরা কর্মবিরতি পালন করতে বাধ্য হয়েছি।

তিনি বলেন, আমরাও চাই না মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হোক। তাই সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দাবিগুলো যেন মেনে নেয়া হয়।

চাঁদা না পেয়ে কলেজশিক্ষককে মারধরের অভিযোগে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পৌর ছাত্রলীগ সভাপতিসহ তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বহিষ্কৃতরা হলেন- নলছিটি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কাওসার হোসেন সালমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাইসুল ইসলাম রবিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম তানভীর।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ গত ৩০ নভেম্বর ওই তিন নেতাকে বহিষ্কার করে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে চিঠি পাঠায়।

জানা যায়, নলছিটির প্যালেস্টাইন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজশিক্ষক মামুন কবিরকে ব্লাকমেলিং করে দাবিকৃত তিন লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে তাকে মারধর করা হয়।

গত ১৭ নভেম্বর রাতে শহরের লঞ্চঘাট থেকে তাকে তুলে নিয়ে কলবাড়ি এলাকায় মারধর করা হয়। এ ঘটনায় পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনের বিরুদ্ধে ১৯ নভেম্বর রাতে নলছিটি থানায় মামলা করেন ওই শিক্ষক।

এ ঘটনায় ১৯ নভেম্বর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মে. শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আল আমিন এক চিঠিতে অভিযুক্তদের কেন বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।

পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিষয়টি জানতে পেরে ওই তিন ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করে।


বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নে সরকারি খাল ভরাট করে দখলের চেষ্টায় মঙ্গলবার মামলা হয়েছে। ২৫ নভেম্বর যুগান্তরে ‘খাল ভরাট করে দখল, দায় এড়াতে নালা তৈরি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বরিশাল সদর উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার মেহেদী হাসান সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে মামলাটি হয়।

জানা গেছে, ইউনিয়নের কুন্দিয়ালপাড়া গ্রামের মৃত শামসুদ্দীন মুন্সির ছেলে স্থানীয় প্রভাবশালী অ্যাডভোকেট বায়তুল আহমেদ মুন্সি, তার ভাই জামাল মুন্সি মাটি ফেলে খাল ভরাট করে জমি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছিল। এ ঘটনায় ২০১৮ সালে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করে। ইতিবাচক ফল আসেনি।

জানা গেছে, ইউনিয়নের কানাইপুরা থেকে মানিক চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে থেকে খন্তাখালী গ্রাম পর্যন্ত প্রবাহিত হতো খালটি। এখন খালটি দখল করে বাগানবাড়ি নির্মাণের চেষ্টা করছেন দখলদাররা। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, খাল দখল করায় জোয়ার-ভাটার পানি আসতে পারে না। এ জন্য কৃষি কাজে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এই খাল দিয়ে নৌকায় মালামাল আনা-নেয়া এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন এসি ল্যান্ড। এখনও আমার কাছে রিপোর্ট দেননি। রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সহকারী ভূমি কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, আমি পরির্দশন করে সত্যতা পেয়েছি।