জ্ঞাত আয়-বর্হিভূত সম্পদ অর্জন, মিথ্যা তথ্য প্রদান ও গোপনে দায়ে এক দম্পতিকে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মেহেদি আল মাসুদ রায় দেন বলে বেঞ্চ সহকারী আবুল বাশার জানিয়েছেন।

দণ্ডিতরা হলেন- ভাণ্ডারিয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর ও ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার পশ্চিম আউরা গ্রামের বাসিন্দা শাহনাজ পারভীন এবং তার স্বামী একই গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান।

রায় ঘোষণার সময় স্বামী-স্ত্রী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে দুইজনকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

বেঞ্চ সহকারী আবুল বাশার জানান, ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে শাহনাজ পারভীনের ১২ লাখ ৬৪৯ টাকার তথ্য গোপন, ৩৪ লাখ ২৩ হাজার ৮০০ টাকার মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং ৫০ লাখ ৬২ হাজার ৬৪৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদের প্রমাণ মেলে।

এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৬ অগাস্ট দুদকের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবুল হাসেম কাজী বাদী হয়ে শাহনাজকে আসামি করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।

তদন্ত শেষে স্ত্রীকে সহায়তার অভিযোগে মাহফুজুরসহ শাহনাজের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

আবুল বাশার বলেছেন, রায়ে শাহনাজকে দুই ধারায় মোট ৫ বছর কারাদণ্ড, ৪১ লাখ চার হাজার ৮৪৭ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আর তার স্বামী মাহফুজুরকে তিন বছর কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

 

রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনসুর আহমেদ, গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলমের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়। আজ মঙ্গলবার থেকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদকের উপপরিচালক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।

দুদক সূত্র জানায়, সাবেক এই তিন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

গত রোববার দুদকের সভায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারসহ পাঁচজনের দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

 

ঝালকাঠির কাঠালিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় নিহত চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দি গ্রামের শিক্ষার্থী মো: রাকিব ও দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামের ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মচারী মো: সুজন খানের পরিবারকে দুই লাখ করে চার লাখ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঝালকাঠি জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদদের পরিবারের কাছে এ অনুদানের অর্থ হস্তন্তর করেন।

ঝালকাঠি জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

বিশেষ অতিথির ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসেন হেলাল, পিরোজপুর সাইদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন। বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ফরিদুল হক, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাবেক নেতা ও বরিশাল বি এম কলেজের সাবেক এ জি এস শেখ নেয়ামুল করীম, কাঠালিয়া উপজেলা আমির মাস্টার মজিবুর রহমান, কাঠালিয়া উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক মো: সাইদুর রহমান, কাঠালিয়া উপজেলা জাময়াতের ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মো: নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের অনুদান প্রদানের পাশাপাশি এই দুই শহীদ পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানান তারা।

 

বরিশালের উজিরপুরে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নিহত একজনের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনায় পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

হামলায় নিহত দুজন হলেন উপজেলার সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ইদ্রিস হাওলাদার (৪৬) ও একই ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সাগর হাওলাদার (২৮)। তাঁরা পরস্পরের চাচাতো ভাই। গত শনিবার রাতে উপজেলার সাতলা পশ্চিমপাড় সেতু এলাকায় তাঁদের ওপর হামলা হয়। এর মধ্যে ইদ্রিস হাওলাদার শনিবার রাতে এবং সাগর হাওলাদার রোববার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে নিহত ইদ্রিস হাওলাদারের স্ত্রী রেশমা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য কিবরিয়া হাওলাদারকে (৩৮) প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১২ জনকে। আজ মঙ্গলবার সকালে এজাহারভুক্ত আসামি কবির বিশ্বাসকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার অধিকাংশ আসামি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন হাওলাদার (৪৮), তাঁর চাচাতো ভাই উজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদ হাওলাদার (৪৬), সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য কিবরিয়া হাওলাদার (৩৮), সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হাওলাদার (৫৪), সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক কবির বিশ্বাস (৩৫), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সোহেল হাওলাদার (৪২) প্রমুখ।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ইদ্রিস হাওলাদার (৪৬) ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাচাতো ভাই সাগর হাওলাদারের (২৮) সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে রাত পৌনে ১১টার দিকে সাতলা পশ্চিমপাড় ব্রিজের ঢালে পৌঁছালে সাতলা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন হাওলাদারের নেতৃত্বে আসামিরা হামলা করেন। তাঁরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলের গতি রোধ করেন। পিটিয়ে ও কুপিয়ে ঘটনাস্থলে ইদ্রিস হাওলাদারকে হত্যা করেন। মোটরসাইকেলের চালক সাগর হাওলাদারকে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করা হয়। বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকাল ১০টায় সাগর মারা যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন হাওলাদারের সঙ্গে সাতলা বাজারের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস হাওলাদারের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ মার্চ ইদ্রিস হাওলাদারের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছিল প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় ইদ্রিস হাওলাদার মামলা করেছিলেন। তখন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও আসাদ হাওলাদার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।এ ব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও তাঁর চাচাতো ভাই আসাদ হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। হত্যার ঘটনার পর থেকে তাঁরা আত্মগোপনে আছেন।

উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. তৌহীদুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়িক ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ইদ্রিস হাওলাদার ও সাগর হাওলাদারকে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইদ্রিস হাওলাদারের স্ত্রী রেশমা বেগম থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

 

বরিশালের কেউ চিনত না খোকন সেরনিয়াবাতকে। বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে কে পাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তা নিয়ে যখন চলছিল আলোচনা-হঠাৎ করে নৌকার মাঝি হিসাবে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত হয় তার নাম। অনেকটাই হতবাক হয়ে পড়েন বরিশালের মানুষ। কে এই খোকন সেরনিয়াবাত তা জানতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন সবাই। পরে জানা যায়, দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর একমাত্র ভাই ও শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ছোট ছেলে এই খোকন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই।
দলীয় রাজনীতিতে কোনো অবদান না থাকলেও শেখ পরিবারের কোটায় ওই বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হন খোকন। মেয়রের দায়িত্ব নেন ১৪ নভেম্বর। মাত্র সাড়ে ৮ মাস ছিলেন এ দায়িত্বে। এ সময়েই নগর ভবনের ঠিকাদারির পার্সেন্টেজ নেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে প্রায় শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার ভাই হিসাবে প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষকে তটস্থ করে রেখেছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত তার কথায় উঠতে আর বসতে হতো বরিশালের প্রায় সবাইকে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন বরিশাল ৫ সংসদ আসনের সাবেক এমপি জেবুনেচ্ছা আফরোজ । সেখানে তিনি সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের শত কোটি টাকা হাতানোর বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-

আলহামদুলিল্লাহ

 

খোকন সেরনিয়াবাত মাত্র ৮ মাসেই হাতিয়েছে শতকোটি টাকা! সেই টাকার কিয়দংশ অর্থাৎ স্বাধীনতা পরবর্তী সর্বাধিক সফল সাবেক মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরনের মালিকানাধীন শিশু পার্ক (প্লানেট পার্ক) নবায়নের জন্য তাকে দিতে হয়েছে কোটি টাকার একটা অংক। হিরন সাহেবের মৃত্যুর পরে আমি পার্কের দেখভাল করেছি সেই সাথে আমার দুইজন সহযোগীও আছেন। খোকন সেরনিয়াবত শপথ গ্রহনের পরই তার প্রথম জবাই হলাম আমি। অথছ খোকন সেরনিয়াবাত নমিনেশন পাওয়ার পর মরহুম হিরনের নেতা-কর্মী সমর্থকদের সহযোগিতা নিয়েই নির্বাচন পরিচালনা করেছে এবং হিরনের নামের উপরেই সে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। এটা বরিশাল সহ অন্যান্য স্হানের বিশেষ করে দক্ষিন বাংলার সর্বস্তরের জনগনও জানেন। সেটার পুরস্কার সরুপ হিরন পরিবারকে (আমি এবং আমার মেয়ে ও ছেলে) মান সম্মানে ধুলায়

লুন্ঠিত করাই ছিলো তার (খোকনের) প্রথম

এবং প্রধান কাজ। সেই সাথে টাকা কামানোর মিশনেও তো সে পরিপূর্ন সফল হয়েছে।কারো অভিশাপের প্রয়োজন নেই,দীর্ঘনিশ্বাসটাই অনেক বড় কিছু কথা বলে দেয়।প্রকৃতির বিচারই সঠিক হয়।

 

তালতলী(বরগুনা)প্রতিনিধি //বরগুনার তালতলীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জমিতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে-পরে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

শনিবার (২৪ আগষ্ট) বেলা ১ টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমাজ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ পুলিশের সহযোগীতায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সিফাত আনোয়ার টুম্পা।

জানা যায়, গত ৫ ই আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে-পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নির্ধারিত সীমানা না থাকায় প্রায় ১ একর জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা চায়ের দোকান, মুদি দোকানসহ প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। অবৈধ স্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা সড়িয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ করলে তার গুরুত্ব না দিয়ে অবৈধ দখলদাররা তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি। হাসপাতালের জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোর বর্জ্যরে কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। পরে হাসপাতালের জমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান কর্তৃপক্ষ। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমাজ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ পুলিশের সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে প্রশাসন। এ সময় অনেক দখলদার নিজেরাই তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ কে এম মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের জমি বেদখল হয়ে যাওয়াতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করলে তিনি অবৈধভাবে দখল হওয়া জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম হক উচ্ছেদ অভিযান কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অবৈধ দখলদাররা যে দলেরই হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারী জমি ছাড়াও যাতে অন্য কোনো কিছুই অবৈধভাবে কেউ দখল দিতে না পরে সে জন্য উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা সক্রিয় থাকবে ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সিফাত আনোয়ার টুম্পা বলেন, একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরেও অবৈধ দখলদাররা তাদের স্থাপনা সরিয়ে না নেওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। হাসপাতালের জমি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়।

দেশ ছেড়ে ভারত প্রবেশের সময় বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলকে আটক করেছে বিজিবি।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা বর্ডার থেকে আটক করা হয়।

বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটান্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ভোমরা বর্ডার থেকে নিরব হোসেন টুটুল নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। তার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অনুসারী নেতা। টুটুলের বিষয়ে আইনানুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গতঃ গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর বরিশালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলা ভাংচুর শুরু হয়। এতে আত্মগোপনে থাকতে নগরী ছেড়েছেন অধিকাংশ নেতাকর্মী।

ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর ঝালকাঠির বাসভবন থেকে বিদেশি মুদ্রাসহ প্রায় ৫ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ টাকাগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, ঝালকাঠি শহরের রোনালসে রোডের আমির হোসেন আমুর বাসভবনে আগুন নেভাতে এসে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা লাগেজ ভর্তি এই টাকাগুল দেখতে পান। পরে বিষয়টি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে তারা এসে তা উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সোমবার বিকেলে বিক্ষুব্ধ জনতা আমির হোসেন আমু ঝালকাঠির বাসভবনে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কয়েক দফা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু রাত ১২টার দিকে স্থানীয়রা ওই ভবনের তিন তলায় আবার আগুন দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখানে এসে আগুন নেভানোর সময় পানি নিক্ষেপ করলে কয়েকটি পোড়া লাগেজ থেকে টাকাগুলো বেড়িয়ে আসে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, একটি লাগেজ থেকে অক্ষত এক কোটি এবং অপর লাগেজগুলো থেকে গণনা করে আংশিক পোড়া দুই কোটি ৭৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এরসঙ্গে ডলার, ইউরোসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যমানের মুদ্রাও ছিল।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন মাষ্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনটির তৃতীয় তলার কক্ষে অনেকগুলো কম্বলের লাগা আগুন নেভানোর সময় কিছু টাকা বেড়িয়ে আসে। এর সাথে কয়েকটি টাকাভর্তি লাগেজও পাওয়া যায়।  এরপর বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাই। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে টাকাগুলো উদ্ধার করে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক|| বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ফিরোজ হাওলাদার নামে একজন
এতিমখানার পরিচালকের মোবাইল এবং টাকা চুরির অভিযোগ পাওয়া
গেছে। ভুক্তভোগী ফিরোজ হাওলাদার মোবাইল এবং টাকা ফেরত পেতে
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
ডায়েরি সুত্রে জানা যায়, গত ৭ ই জুলাই সকালে শেবাচিমে চিকিৎসাধীন
পুত্রবধুকে দেখতে যান পলাশপুর রহমানিয়া ক্বিরাতুল কুরআন পাবলিক
মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুল ইসলাম ফিরোজী।
এক পর্যায়ে তার পরিধানে থাকা পাঞ্জাবির পকেটে থাকা মোবাইল এবং
টাকা নিয়ে চম্পট দেয় অজ্ঞাত চোর। পরবর্তীতে অনেক খোজাখুজি
করেও চোরের সন্ধান পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে, ভুক্তভোগী নুরুল
ইসলাম ফিরোজী হারানো মোবাইল এবং টাকা ফেরত পেতে কোতোয়ালি
মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
তিনি জানান, আমি পুত্রবধূকে দেখতে হাসপাতালের ৫ ম তলায়
অবস্থানকালে কৌশলে আমার পকেট থেকে মোবাইল এবং টাকা
চুরি হয়ে যায়। মোবাইলে আমার মাদ্রাসার অনেক গুরুত্বপূর্ণ
ডকুমেন্ট ছিল। এছাড়াও ২০২৩ সালের ১২ মার্চ নগরীর ৫ নং
ওয়ার্ড পলাশপুর কাজির গোরস্থান এর পূর্ব পাশে ভাড়াটিয়া বাসা
রাঢ়ি বাড়ি থেকে তার ছেলে রাসেলে’র ব্যাবহারকৃত স্মার্ট ফোন,
কাগজপত্র এবং ৪/৫ টি পাঞ্জাবি ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়
অজ্ঞাত চোরচক্র। চুরি হওয়া ফোনের নাম্বারঃ-০১৩০৮৭২৩৫৪৬
ও ০১৯২৪-২০৬৭৮৮। আইএমই নম্বর ৮৬২০৬০০৫৯৫৫৪৮৯০,
862060059554৮৮২ ব্র্যান্ড ভিভো। ভুক্তভোগী রাসেল হারানো
মোবাইল এবং টাকা ফেরত পেতে পরে দিন ১৩/০৩/২০২৩ তারিখ
বরিশাল কাউনিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়। জিডি
নং: ৫২১। এবিষয়ে ফিরোজী বলেন, একটি চক্র দীর্ঘ দিন ধরে
মাদ্রাসার ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এবং কি চক্রটি
কৌশলে কিছু দিন পূর্বে আমার বাসা থেকে ছেলে মোবাইল ও টাকা
চুরি করে নিয়ে যায়। আমি হাসপাতালের রোগী দেখতে গেলে
কৌশলে ওই চক্রটি আমার পকেট থেকে মোবাইল এবং টাকা চুরি
করে নিয়ে যায়। চুরি হওয়া মোবাইল ফোনে আমার মাদ্রাসা ও
বাসার অনেক ফোন রেকর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ছিল। যা চক্রটি
চুরি করে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে আমাকে ব্লাকমেইল করা চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যাতে
চক্রটিকে ধরা হয়।

 

 

পরিচয় গোপন করে আবারও বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাসপোর্ট সেবা দিতে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এরইমধ্যে এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদকের বরিশাল কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মিরাজ হোসেন।

বুধবার (২৬ জুন) এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে ছদ্মবেশে পাসপোর্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তথ্য পাওয়া যায়, অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য বিভিন্ন ফটোকপির দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে পাসপোর্টের আবেদনের জন্য ব্যবসায়ী/দোকানিরা প্রতি আবেদনে ২০০ টাকা বা তার বেশি নেয়। এছাড়াও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করার অভিযোগও পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, অভিযানে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস বরিশালের উচ্চমান সহকারী মোশাররফের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে হয়রানির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়, যা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালককে অবগত করা হয়। তিনি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ সেবা প্রদান হয়রানিমুক্ত ও ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন মর্মে দুদক টিমকে আশ্বস্ত করেন। অভিযানে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

অন্যদিকে পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জাকির হোসেনের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুদকের নির্দেশনা অনুসরণ করে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হচ্ছে। এরইমধ্যে তাকে ডেস্ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুদক। দুদকের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এইচএম আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানেও অনিয়মের প্রমাণ মিলেছিল।

ওই সময় আক্তারুজ্জামান জানান, একজন সেবাগ্রহীতা বরিশাল পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালদের দৌরাত্ম্যে হয়রানি, পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ দিলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি।

আমরা অনিয়মের চিত্র দেখতে পেয়েছি। এখানে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনিয়ম রোধে সেবাপ্রত্যাশীদের সচেতন করেছি, পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত যুগ্ম-পরিচালককে পরামর্শ দিয়েছি অনিয়ম বন্ধে তিনি যেন কার্যকর ভূমিকা রাখেন। যুগ্ম পরিচালক আমাকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে আরও কঠোর হবেন।