নিজস্ব প্রতিবেদক //

বরিশালের পোর্ট রোডের শহীদ জিয়া পাইকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে যখন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনায় দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, তখন সেই পবিত্র আয়োজনের মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ছায়া নেমে আসে। দোয়া শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনার ঝড়। কারণ—এই আয়োজনের সারিতে দেখা গেল সরকারি দলের পরিচিত কয়েকজন নেতাকর্মীকে।

যে উপস্থিতি দোয়া মাহফিলকে বিতর্কে ফেলল

দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সদ্য কারামুক্ত বরিশাল মহানগর মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি ইয়ার সিকদার। যিনি “বিএনপি’র করা একাধিক মামলার আসামি” বলে পরিচিত। আরও ছিলেন শ্রমিক লীগ নেতা রাকিব, যিনি “নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর হামলা মামলার আসামি” হিসেবে এলাকায় পূর্ব থেকেই আলোচিত।
এই দুই নেতার উপস্থিতি বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে শুধু ক্ষোভই ছড়ায়নি, বরং দলীয় শুদ্ধি ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নও তুলেছে।

ফেসবুকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ

বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চিশতী সামাজিক মাধ্যমে কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে লিখেন—
“১৭ বছর ধরে আ’লীগের অপকর্মের সাথে জড়িত ব্যক্তি কীভাবে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দোয়ায় উপস্থিত হয়? কার ইন্ধনে এরা দলে অনুপ্রবেশ করছে?”
তার স্ট্যাটাসে ক্ষোভ যেন চুঁইয়ে পড়ছিল। শুধু একজনের প্রশ্ন নয়—স্থানীয় অনেক নেতারই একই উদ্বেগ: এইসব রাজনৈতিক ছদ্মবেশীরা দলে ঢুকে যে ক্ষতি করছে, তা কি কেউ বুঝতে পারছে না?

ছবিতে দেখা যায়, বরিশাল মহানগর বিএনপি নেতা কামাল সিকদারের পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন ইয়ার সিকদার, আর সামনে শ্রমিক লীগ নেতা রাকিব। দৃশ্যটি অনেকের মনেই অসন্তোষের আগুন আরও উসকে দিয়েছে।

‘ভুল হয়েছে’—ছোট কামালের স্বীকারোক্তি

মহানগর বিএনপি নেতা ছোট কামাল বলেন,
“ওরা পোর্ট রোডের আড়তদার—এই পরিচয়ে দোয়ায় এসেছে। কাউকে ঘাড় ধরে বের করে দিতে পারি না। তারপরও আমার ভুল হয়েছে, ভবিষ্যতে এমনটা আর হবে না।”
কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এমন সংবেদনশীল আয়োজনে সাধারণ আড়তদার পরিচয় কি যথেষ্ট? নাকি এর আড়ালে অন্য কোনো পরিকল্পিত অনুপ্রবেশের ছায়া রয়েছে?

দলের ভেতরেই নতুন বিতর্ক: ‘স্বঘোষিত সভাপতি’

বরিশাল মহানগর মৎস্যজীবী দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাম সিকদার অভিযোগ করেন—
“আমি দোয়া মোনাজাতে দাওয়াত পাইনি; অথচ সেখানে আ’লীগ নেতাদের নিয়ে দোয়া হয়।”
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমান সরোয়ারের উপস্থিতিতে “ইয়ার সিকদারের ভাই আজাদ সিকদার নিজেরাই ব্যানার সাটিয়ে স্ব-ঘোষিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করেছে”, যেখানে ছোট কামালও ছিলেন সহযোগী।
সালাম সিকদার এটিকে দলের ভেতরে বিঘ্ন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত অনুপ্রবেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

মহানগর বিএনপির কড়া অবস্থান

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন—
“আ’লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে কেউ যদি কোনো প্রোগ্রাম করে, তা দলের সাংগঠনিক বিধির বাইরে। তথ্য-প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“কেউ অনধিকারভাবে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করলে তা হাইকমান্ডকে জানানো হবে।”

দলের জন্য ক্ষতির বার্তা

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজনৈতিক রং বদলানো কিছু ব্যক্তির এভাবে দলীয় কর্মসূচিতে ঘেষাঘেষি করা শুধু বিভ্রান্তি ছড়ায় না, বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দুটোই ঝুঁকিতে ফেলে। ইতিহাস বলছে—অনুপ্রবেশ রাজনৈতিক দলকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে।
এই ঘটনার পর অনেকেরই প্রশ্ন:
দলের দুর্বলতা কোথায়? কে দিচ্ছে সুযোগ? আর কতদিন এমন প্রবেশে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

শেষ কথা

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির দোয়ায় সবার অংশগ্রহণই কাম্য—কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল করে পরিকল্পিতভাবে দলে অনুপ্রবেশ করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
সতর্কতা, সংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ এবং যোগ্য নেতৃত্বই পারে এই ধরণের অপপ্রয়াসকে থামিয়ে দিতে

 

আসাদুজ্জামান শেখ ::

বরিশালের শীতের সকালটা ছিল শান্ত, স্বাভাবিক দিনের মতোই। কিন্তু কর্নকাঠি ও চরকাউয়ার মানুষ বুঝতেই পারেনি—তাদের পরিচিত গ্রামীণ পরিবেশকে ঢেকে রাখা ধূসর ধোঁয়ার বিরুদ্ধে আজ শুরু হতে যাচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। সকাল থেকেই এলাকাজুড়ে তৈরি হতে থাকে অস্বাভাবিক নড়াচড়া। মুহূর্তেই চেনা পথে ঢুকে পড়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়িবহর। সাইরেনের শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশ। বুঝতে বেশি সময় লাগে না—আজই সেই দিন, যখন অভিযানের হাত পড়ছে বহুদিন ধরে চলা অবৈধ ইটভাটাগুলোর ওপর।

ধোঁয়ার নগরীর বিরুদ্ধে জনস্বাস্থ্যের লড়াই

গত কয়েক বছরে বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা এসব অনুমোদনহীন ইটভাটা শুধু মাটির স্তরকেই ক্ষতবিক্ষত করেনি; দূষিত করেছে বাতাস, হুমকির মুখে ফেলেছে মানুষের ফুসফুস। স্থানীয়দের অভিযোগ—শীতের আগমনীতে সকাল-সন্ধ্যা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গ্রামগুলো। শিশু ও বয়স্কদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে প্রতিদিনই।

এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই পরিবেশ অধিদপ্তর, সদর দপ্তর (ঢাকা)-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বুধবারের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে অংশ নেন বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দীন এবং প্রসিকিউশন প্রদানের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক মোঃ সোহেল মাহমুদ। শুধু তাই নয়—পুলিশ, ১০ এপিবিএন, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের উপস্থিতি অভিযানে যোগ করে বাড়তি গুরুত্ব।

ইটভাটার চিমনি ভাঙার মুহূর্ত—এক প্রতীকী দৃশ্য

অভিযান শুরু হতেই প্রথমে লক্ষ্যবস্তু করা হয় দুটি ড্রাম চিমনি ইটভাটা। দীর্ঘদিন ধরে কোনো অনুমোদন ছাড়াই চালু ছিল এগুলো। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মুহূর্তেই এগুলো ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করে কর্মীরা। লোহার বড় হাতুড়ির শব্দে এলাকার নীরবতা যেন গুঁড়িয়ে যাচ্ছিল ইটভাটার চিমনির মতোই।

চরকাউয়ার একজন বৃদ্ধ বলেন,


“এই ভাটা বন্ধ হলে আমাদের শ্বাসটা একটু স্বাভাবিক হবে। ঘরে ধোঁয়া ঢুকে নাতি-নাতনিরা কাশি থামাতে পারে না।”

এই কথাগুলো মনে করিয়ে দেয়—এ শুধু ইটভাটা ভাঙার অভিযান নয়, মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইও।

সবচেয়ে বড় ভাটা—সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা

সবচেয়ে বড় পদক্ষেপটি নেওয়া হয় ১২০ ফুট চিমনি বিশিষ্ট একটি বিশাল ইটভাটার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে এটি স্থানীয় পরিবেশকে সবচেয়ে বেশি দূষিত করার অভিযোগে ছিল আলোচনায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত সাইট পরিদর্শন করে আইন অনুযায়ী ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। জরিমানার পরও এখানেই থেমে থাকেনি অভিযান—চিমনিটি ভেঙে পুরো কাঠামোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।

ফায়ার সার্ভিসের পানি—মুছে দেয় কাঁচা ইটের আশা

পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পানি ছিটাতে শুরু করেন কাঁচা ইটের পাহাড়ে। অল্প সময়েই সেগুলো কাদায় পরিণত হয়।
ইটভাটার মালিকদের চোখে তখন হতাশা, আর এলাকাবাসীর চোখে স্বস্তি।

এ অভিযানের প্রতিটি ধাপ যেন জানান দিচ্ছিল—আইনকে অমান্য করলে আর দাঁড়িয়ে থাকার সুযোগ নেই।

আইন শুধু কাগজে নয়—বাস্তবেও প্রয়োগ

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯)–এর বিধান অনুযায়ী পরিচালিত এ অভিযান শুধু আজকের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও এক বড় বার্তা রেখে গেলো। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভাষায়—
“জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। কোনো অনিয়মই ছাড় দেওয়া হবে না।”

শেষ কথা: পরিচ্ছন্ন বাতাসই ভবিষ্যৎ

অবৈধ ইটভাটা ধ্বংস করা মানে শুধু একটা ব্যবসা বন্ধ করা নয়; এটা এক অঞ্চলের মানুষকে ধোঁয়া-ধুলোর ভয়াবহতা থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা। বরিশালের এই অভিযানে ঠিক সেই মানবিক দায়িত্ববোধই সামনে এসেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে—এ অভিযান ছিল ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ। ভবিষ্যতেও জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষায় এমন অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

 

ভোটের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের উৎখাত করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের ঠাঁই বাংলাদেশে আর হবে না। জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশালের বেলস পার্ক মাঠে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও এর ভিত্তিতে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে, উন্নয়নের নামে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’

তিনি বলেন, দেশের সম্পদ নিয়ে ষড়যন্ত্র ও লুটপাট চলছে। বিদেশে ‘বেগম পাড়া’ গড়ে তোলার অভিযোগ তুলে তিনি দাবি করেন, দেশজুড়ে তার (রেজাউল করীম) সফরে জনগণের ক্ষোভ তিনি নিজ চোখে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। আপনাদের ঠাঁই আর হচ্ছে না।’

সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে অনেকে চোখ হারিয়েছেন, পরিবার হারিয়েছে আপনজন। জুলাই শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি যারা করবে, বাংলাদেশে তাদের জায়গা নেই।

জনগণের উদ্দেশে চরমোনাই পীর বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে দেখে মানুষ পরিবর্তন চায়। তার দাবি, ইসলামী দলগুলোর জোট ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি বন্ধ হবে এবং দেশ উন্নয়নের পথে এগোবে।’

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অসুস্থ রাজনৈতিক নেতাদের জন্য দোয়া কামনা করেন।

বরিশালের বেলস পার্ক মাঠে অনুষ্ঠিত এ মহাসমাবেশে ইসলামপন্থী আটটি দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। উপস্থিত নেতারা পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

 

বরিশাল মহানগরীতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার ভয়ংকর নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে আসা পলাতক আসামি মান্না সুমন অবশেষে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে নগরীর চড়কাউয়া খেয়াঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে একটি মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার করা হয়।।

এর আগে ৭ নভেম্বর দুপুরে, নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর এলাকায় কাউনিয়া থানা পুলিশ মান্না সুমনের স্ত্রী শিল্পী বেগমকে আটক করে। সেই সেসময়—১০২ পিস ইয়াবা, ৫০ গ্রাম গাঁজা, ৩০০ মিলিলিটার দেশীয় মদ, কিছু দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক বিক্রির নগদ ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০ টাকা পাওয়া যায়।

তবে অভিযানের সময় মান্না পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি থেকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। ২৮ তারিখ রাতে তাকে আটক করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি, এই দম্পতি বছরের পর বছর ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। একাধিকবার আটক হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ত।

স্থানীয় বাসিন্দা এক বাসিন্দা জানান— “মান্না আর তার স্ত্রী শিল্পি বহুদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। আমরা পুলিশকে বহুবার অভিযোগ দিয়েছি। লোকজন তাদের কারণে আতঙ্কে থাকত। অবশেষে পুলিশ তাকে ধরেছে, এতে আমরা স্বস্তি পেয়েছি।”

স্থানীয় ব্যবসায়ী এক ব্যবসায়ী জানান—“এই দম্পতির কারণে এলাকার যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তারা খোলাখুলিভাবেই মাদক বিক্রি করত। বহুবার গ্রেফতার হলেও কিছুদিন পর আবার বের হয়ে এসে আগের মতো ব্যবসা শুরু করত। এবার যেন তারা আর বের হতে না পারে—এটাই আমাদের দাবি।”
কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন—“মান্না ও তার স্ত্রী শিল্পি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

 

স্ত্রী শিল্পি বেগমকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। মান্না পলাতক থাকায় গোয়েন্দা বিভাগ তাকে নজরদারিতে রাখে। শেষ পর্যন্ত তাকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এলাকায় মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত—কেউই ছাড় পাবে না।”

 

রাজধানীর শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন দুই থেকে তিন শতাধিক দলিল নিবন্ধনের কাজ হয়। কিন্তু এ দপ্তরটিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই এক কর্মচারীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কথিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।

অফিসের একাধিক দলিল লেখক জানান—সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে দলিল জমা দেওয়ার পর তা প্রথমে ওই কর্মচারীর মাধ্যমে “পরীক্ষা” করানো হয়। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রুটি দেখিয়ে দলিলপ্রতি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে দলিল আটকে রাখা, নানা অজুহাতে বিলম্ব করা এবং সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে মানসিক চাপ প্রয়োগের অভিযোগও রয়েছে।

এক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“এই অফিসটা পুরোপুরি জিম্মি অবস্থায় চলে গেছে। যে দলিলই দিই, সেটা প্রথমে তার হাত দিয়ে না গেলে অগ্রগতি হয় না।”

তাদের অভিযোগ—প্রায় ৫% অতিরিক্ত কমিশনের নামে নিয়মিত ঘুষ নেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন শত শত গ্রাহক হয়রানির শিকার হন, আর দলিল লেখকদের ওপর সৃষ্টি হয় অযৌক্তিক আর্থিক চাপ।

স্বল্প বেতনে বিপুল সম্পদের অভিযোগ

অফিসের একাধিক সূত্র জানায়—স্বল্প বেতনের দাপ্তরিক পদে থাকার পরও কথিত ওই কর্মচারীর নামে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় দু’টি ফ্ল্যাট, তেজগাঁও হকার্স মার্কেটে দোকান এবং স্থানীয় এক মার্কেট সমিতির নির্বাচনে বিপুল টাকা ব্যয় করে পদ লাভের ঘটনা বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তুলেছে।

তাদের দাবি,
“মাসিক ১৫০০ টাকার হাজিরায় কেউ যদি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে যায়, তাহলে তদন্ত ছাড়া সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ থাকাই স্বাভাবিক।”

যোগাযোগে সাড়া মেলেনি

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য জানতে স্বদেশ বিচিত্রা অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে অভিযোগ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

দুদকের তদন্ত দাবি

দলিল লেখক, ভুক্তভোগী গ্রাহক ও স্থানীয়দের দাবি—অফিসটির স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে এবং কথিত দুর্নীতি চক্রের সন্ধানে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি তদন্ত প্রয়োজন।

 

 

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে ঘুস গ্রহণের অভিযোগে বদলি করা হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। তাকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় বদলি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

 

শফিকুল ইসলাম প্রায় পাঁচ বছর ধরে নান্দাইলে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় সব ঠিকাদারের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে তার। এ সুযোগে ঠিকাদারদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে তিনি আর্থিক ফায়দা আদায় করতেন বলে অভিযোগ উঠে। এ অবস্থায় গত ১৭ নভেম্বর ফেসবুকে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি অফিসে তার চেয়ারে বসে একজনের কাছ থেকে ঘুসের টাকা নিয়ে তড়িঘড়ি করে টেবিলের ড্রয়ারে রাখছেন; কিন্তু বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এগিয়ে আসেন সংশ্লিষ্ট অফিসের ঠিকাদাররা। পরদিন ১৮ নভেম্বর তারা (ঠিকাদাররা) অফিসের কেউ না হয়েও নান্দাইল উপজেলা এলজিইডি অফিসে সাংবাদিকদের ডেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সম্মেলনে তারা প্রকৌশলীর টাকা গ্রহণের ভিডিওটি ঘুস গ্রহণের কোনো ভিডিও নয়, সেটি বিয়ের উপঢৌকন বলে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানান। কিন্তু ১৮ নভেম্বর যুগান্তরে ‘উপসহকারী প্রকৌশলীর ঘুসের ভিডিও ফাঁস’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে নান্দাইল থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় বদলির ব্যবস্থা করে।

বদলি হওয়া উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে তার অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল মালেক বিশ্বাস বদলির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রোববার হেড অফিস থেকে তাকে বদলি করা হয়েছে, তবে কী কারণে বদলি করা হয়েছে, সেটি তো বলতে পারব না, সেটা প্রশাসনিক বিষয়।

 

 

ঢাকার সাভার পৌরসভায় অফিসকক্ষে প্রকাশ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন দুই কর কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে হোল্ডিংয়ের মালিকানা পরিবর্তনের জন্য এক সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে নেওয়া পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এমন মারামারিতে জড়িয়েছেন দুজন।

মারামারিতে জড়ানো দুই কর্মকর্তা হলেন- সাভার পৌরসভার কর নির্ধারক নাজমুল হাসান ও সহকারী কর আদায়কারী নজরুল ইসলাম।

ভিডিওতে দেখা যায়, কর নির্ধারণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান নিজের চেয়ারে বসে আছেন। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। এমন সময় সহকারী কর আদায়কারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উপস্থিত হন। তখন দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সহকারী কর আদায়কারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম কর নির্ধারণ কর্মকর্তার দিকে তেড়ে যান। তাকে থামানোর চেষ্টা করেন উপস্থিত ব্যক্তিরা। তাদের ঠেলে নজরুল ইসলাম কর নির্ধারণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে আক্রমণ করতে যান। এরপর দুই কর্মকর্তাই একজন আরেকজনকে কিল ঘুষি মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে উপস্থিত লোকজন দুইজনকেই নিবৃত্ত (শান্ত) করেন।

ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সেবা গ্রহীতা ও পৌর কর্মচারীদের মাঝে বিভিন্ন গুঞ্জন চলছে। নাম প্রকাশে এক কর্মচারী ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “করের অতিরিক্ত টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই কর্মকর্তা মারামারিতে জড়িয়েছেন। অফিস কক্ষে এরকম ঘটনা ঘটানো উচিত হয়নি।”

জানতে চাইলে কর নির্ধারণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, “নজরুল ইসলাম আমার জুনিয়র। হোল্ডিংয় ট্যাক্স ও নামজারী ফি বাবদ এক লোক নজরুল ইসলামকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। ঐ লোক নজরুল ভাইয়ের পরিচিত। আমি নজরুল ভাইকে ডেকে বলি নামজারি ফি ১,১৫০ টাকার রশিদ আছে কিন্তু হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ দেননি কিন্তু সাক্ষর করেছেন। এই কথা বলা মাত্রই তিনি উত্তেজিত হয়ে আক্রমণ করেন।”

এদিকে বক্তব্য জানতে সহকারী কর আদায়কারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি ঘটনার পর পৌর ভবন থেকে আত্মগোপনে গেছেন।

যোগাযোগ করা হলে সাভার পৌর নির্বাহী অফিসার সায়েদুল ইসলাম বলেন, “দুই কর্মকর্তার মাঝে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে এটা শুনেছি। মারামারি হয়নি। তবে কোন বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়েছে জানতে পারিনি। বিস্তারিত জেনে জানাতে পারবো।”

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক//
বরিশালে কোস্ট গার্ডের বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ চোরাইকৃত কয়লা, একটি লাইটার ভেসেল এবং ১২ জন চোরাকারবারী আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

কোস্ট গার্ড জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর ভোর ৫টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশালের একটি টিম বরিশাল কোতোয়ালি থানার চরমোনাই আনন্দ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় সন্দেহজনক একটি লাইটার ভেসেল থামিয়ে তল্লাশি করা হলে প্রায় ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চোরাইকৃত কয়লা উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। এ সময় ভেসেলে অবস্থানরত ১২ জন চোরাকারবারীকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়, মোংলার হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে অসদুপায় অবলম্বন করে এসব কয়লা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।

অভিযানে জব্দ করা কয়লা, লাইটার ভেসেল এবং আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক আরও জানান,চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল নগরীর কাউনিয়া লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন একটি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবক গোপাল চক্রবর্তীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে এলাকার কুখ্যাত মাদকাসক্ত সুমিত সরকার। বর্তমানে গোপাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাস্থল সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে গোপাল অনুষ্ঠানে অংশ নিলে সামান্য কথাকাটাকাটির জেরে সুমিত অতর্কিতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা গোপালকে স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হামলার পর পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সুমিত শুধু মাদকাসক্তই নন—তিনি স্ত্রী পুলিশ সদস্য হওয়াকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছেন। স্ত্রী পুলিশের চাকরিতে থাকায় সে নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে, এবং প্রতিটি অপকর্মে প্রকাশ্যে ক্ষমতার দাপট দেখায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা জানান—
“সুমিতের স্ত্রী পুলিশে চাকরি করেন—এই জন্যই সে ভয়ডরহীন। মদ্যপ অবস্থায় মানুষকে মারধর, হুমকি-ধমকি তার নিয়মিত কাজ। কেউ প্রতিবাদ করলে সে বলে—তার কিছুই হবে না।”

অভিযোগ রয়েছে, সুমিত ভারতের পাসপোর্টধারী এবং সেদেশের একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সক্রিয় কর্মী। ভারত যাওয়া–আসার আড়ালে তিনি অবৈধ পণ্য আমদানি–রপ্তানিতেও জড়িত।

এলাকাবাসীর দাবি—
“স্ত্রীর পুলিশ পরিচয়ে বেপরোয়া সুমিতকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

এ ঘটনায় আহত গোপালের পরিবার মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জোর দাবি জানিয়েছে—এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর সহ্য করা হবে না।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় অবৈধভাবে আহরণ ও পরিবহনের সময় বিপুল পরিমাণ ঝাটকা ইলিশ মাছ জব্দ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে বিশেষ সংরক্ষণ অভিযানে এসব মাছ আটক করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। পরে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ফারুক আহমেদের নির্দেশনায় জব্দকৃত ইলিশ স্থানীয় বিভিন্ন এতিমখানা ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়।

ইউএনও মোঃ ফারুক আহমেদ জানান, দেশের স্বার্থে ইলিশ রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী জব্দকৃত মাছ নষ্ট না করে প্রয়োজনীয় গরিব অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে যেমন অপচয় রোধ হয়, তেমনি অসহায় মানুষের মুখে হাঁসি ফোটে।

এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন উল ইসলাম। তার মানবিক ও দায়িত্বশীল উদ্যোগ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযানে পুলিশ ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থান এবং মানবিক ব্যবস্থাপনা একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তারা এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান।

এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মামুন উল ইসলাম বলেন আমাদের এই অভিযান ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে। সরকারি আইন কানুন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যা করা দরকার করব। কোন অপরাধকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত।

ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ঝাটকা ধরা, পরিবহন, মজুদ ও বিক্রি বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থান বজায় রাখার কথা জানিয়েছেন।