আসাদুজ্জামান শেখ ::

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এলসিএস প্রজেক্টের অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডি তে চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই অনৈতিক পথে অর্থ উপার্জন সহ নানাবিধ অবৈধ অপকর্ম ও ক্ষমতাসীনদের দ্বারস্থ হয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধের জন্য সচেষ্ট থেকেছেন। উপজেলা এলসিএস অর্গানাইজার পদে দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে অবৈধ ও অনৈতিক পন্থায় অর্থ উপার্জনই ছিল তার একমাত্র উদ্দেশ্য যা তিনি সিদ্ধ হস্তে বাস্তবায়ন করেছেন। অর্গানাইজার পদে দায়িত্ব পালন কালীন সময় এলসিএস শ্রমিকদের নিয়োগ ক্ষেত্রে বড় অংকের ঘুষ বাণিজ্যর এবং এলসিএস শ্রমিকদের বেতনের টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে নিজে বিশাল অর্থ বৃত্তের মালিক বনে গেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে পরিচয় হন বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলালের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে তিনি বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসারদের নিজের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে উপজেলা এলজিইডি অফিসের সকল ক্ষমতা বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন তিনি।এলসিএস টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি যা গ্রামীণ সড়ক মেরামতের মতো প্রকল্পের জন্য স্থানীয় দরিদ্র ও দুস্থ নারী শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে। অর্গানাইজার সানজিদা তার এই প্রকল্পের জন্য সুপারভাইজার পদে আপন ভাই কাওছারকে নিয়োগ দিয়েছেন। সরকারী নিয়ম তোয়াক্কা না করে রেকসোনা নামে এক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে তার ছেলে মিরাজকে দিয়ে হাজিরা দেখিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন অর্গানাইজার সানজিদা। এবং সরকারী সমস্ত নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বারবার একই ব্যক্তিদের শ্রমিক পদে নিয়োগ দিয়ে আসছেন সানজিদা। এলজিইডি তে নিজেকে একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত করেন, তার ইশারা ছাড়া এল জি ডি ই তে অনেক কিছুই হত না এ কারণে প্রজেক্টের সুপারভাইজার পদে আপন ভাই কাওসারকে নিয়োগ দিয়ে সব ধরনের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। এছাড়াও এই প্রকল্পে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে নুরনাহার ও তার মা তহমিনাকে নিয়োগ দিয়ে তার ব্যক্তিগত বাসায় কাজ করানো অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান কালে আরও জানাজায়, তহমিনা এই প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে ৮ বছর এবং মেয়ে নুরনাহারকে ৭ বছর ধরে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন সানজিদা আক্তার।
এভাবে বাবুগঞ্জ উপজেলায় এলসিএস শ্রমিক নিয়োগে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন এবং মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি ইউপি সদস্যদের দেওয়া প্রকল্পের কাজ এলসিএস শ্রমিক দিয়ে বাস্তবায়ন করে সেখান থেকেও আর্থিক লাভবান হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই প্রজেক্টে শ্রমিক নিয়োগে তিনি অনৈতিক পন্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেন এবং প্রকল্প সুপারভাইজার পদে ভাইদের নিয়োগ দেন। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে অনেক অসহায় দুস্থ নারীরা প্রজেক্টে কাজ করার জন্য এলজিইডি অফিসে ঘোরাঘুরি করেও কোন কাজ পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন একাধিক অসহায় দুস্থ নারীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে অফিসের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করছি একটু কাজের জন্য, কিন্তু যখনই সানজিদার কাছে যাই তিনি বলেন, ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে স্থানীয় মেম্বারদের সাথে নিয়ে আমার অফিসে আসবে। তারা জানান, টাকাও যোগাতে পারি না,আর কাজও পাই নাই। যা সম্পূর্ণ চাকরির বিধি-বিধান লঙ্ঘিত।
এইভাবে সানজিদা আক্তারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রজেক্টে শ্রমিক নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছেন যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে এ ব্যাপারে প্রকল্প অর্গানাইজার সানজিদা আক্তার তিনি বলেন,আসলে কেউ যদি তার কাজের পরে অন্য কাজ করে তাহাতে তো কোন বাধা নেই। জানতে চাওয়া হয়, এক পরিবারের দুইজনকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান আছে কি! তিনি বলেন, আসলে আপনি তো আমাকে আগেও চিনেন অফিসে আসেন সব বলিব। জানতে চাওয়া হয়, মাঠ সুপার ভাইর আপনার আপন ভাই তাকেও নিয়োগ দিলেন কিভাবে। তিনি জানান, সুপারভাইজার কাওছার আমার কোন আত্মীয় না। শ্রমিক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যর বিষয়ে জানতে চাই তিনি বলেন, আমার অনেক মাথা ব্যথা হচ্ছে। আপনি অফিসে আসেন তখন বলব।
অর্গানাইজারের দুর্নীতি বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী এমদাদুল হক আলিম বলেন, আসলে আমি এই বিষয়গুলো জানিনা।

 

বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি।
নারী নির্যাতন মামলায় বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দ্বিতীয় স্ত্রী লাভলী আক্তার নিপার দায়ের করা মামলায় বরগুনা জেলা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যালের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এই আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ১ কোটি ২২ লাখ ৬৬৬ টাকার মামলা দায়ের করেন জসিম উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী লাভলী আক্তার নিপা।

অভিযোগ রয়েছে, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এক প্রবাসী স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন। ওই সভাপতির নাম লাভলী আক্তার নিপা। তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্যের বোনের মেয়ে। নিপার প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন জসিম। পরে ২০২২ সালের ২৫ জুন দশ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন তিনি।

দ্বিতীয় স্ত্রী লাভলী আক্তারের (নিপা) তথ্যমতে, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন অবিবাহিত দাবি করে এই বিয়ে করেন। তার বিয়ের খবর চট্টগ্রামে বসবাসরত প্রথম স্ত্রী জানতে পারলে এ নিয়ে তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে নিপাকে এড়িয়ে চলতে থাকেন জসিম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে পুনরায় নিপার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। শিক্ষা কর্মকর্তা তখন স্থানীয় লোকজন ধরে নিপাকে পুনরায় চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল ৯১ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিবাহ করেন এবং তার সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন।

পরবর্তীতে জসিম উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী এই বিয়ের বিষয় জানতে পারলে পারিবারিক চাপে তিনি নিপাকে তালাক দেন। এমনকি গত ২ অক্টোবর প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগম স্বামী জসিমকে নিয়ে নিপার বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন। এতে নিপা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে নিপা কাবিনের টাকা ও খোরপোশ দাবি করে জেলা জজ কোর্টে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলা আমলে নিয়ে আদালত বরগুনা শিক্ষা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেন অভিযুক্ত জসিমের নিজ এলাকা চট্টগ্রামের পাহারতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা পলাতক রয়েছেন।

 

বরিশালে সরকারি অফিসে ঢুকে গত কয়েক বছরের উন্নয়ন কাজের কাগজপত্র দাবি এবং অফিস স্টাফদের হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এম.এম. কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মাহফুজুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে। বরিশাল সামাজিক বন বিভাগের প্রধান সহকারী লুৎফর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবেক কথিত যুবলীগ নেতা এবং বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তারে চেষ্টা করা ঠিকাদার মিলন নতুনবাজারস্থ সামাজিক বন বিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে প্রধান সহকারী লুৎফর রহমান ও হিসাবরক্ষক সিরাজুল ইসলামের কাছে গত কয়েক বছরের সকল উন্নয়ন কাজের কাগজপত্র দাবি করেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাগজ দেওয়া সম্ভব নয় জানালে ঠিকাদার মিলন ক্ষিপ্ত হয়ে কৌশলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রধান সহকারী লুৎফর রহমান জানান “তিনি বহু বছরের কাগজপত্র একসাথে চান। তাকে বলেছি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে নিয়ম অনুযায়ী সব দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি আমার কথা শুনেননি; বরং চাপ সৃষ্টি করেছেন।”

সদর রেঞ্জ অফিসার আরিফ হোসেন এবং হিসাবরক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান নিয়ম মেনে কাগজ চাইতে বললে মিলন তার দলবল নিয়ে ভয়ভীতি দেখান। ডিএফও বদলি হলেও মিলনের প্রভাব কমেনি। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে বরিশাল সামাজিক বন বিভাগের সাবেক ডিএফও ড. মো. আব্দুল আউয়ালকে ওএসডি করা হলেও তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার মিলনের দাপট এখনো কমেনি। আবারও অন্য ডিএফওকে কেন্দ্র করে একই ধরনের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক ডিএফও কবির হোসেন পাটোয়ারী ব্যক্তিগত স্বার্থ পূরণে রাজি না হওয়ায় মিলন তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র এবং অপপ্রচার চালান। চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে মিলনের ভাড়াটে কিছু মানুষকে দিয়ে মানববন্ধনও করানো হয়। আউটসোর্সিংয়ে অনিয়মের অভিযোগ।

অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে- কয়েক বছর আগে মিলন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তার ঘনিষ্ঠ ৬ জনকে নিয়োগ দেন। বর্তমান সরকার আউটসোর্সিং নীতিমালা পরিবর্তন করলে তাদের নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়। এরপর শূন্য পদে নতুন নিয়োগের জন্য ডিএফও টেন্ডার আহ্বান করলে মিলন টেন্ডারে অংশ না নিয়ে পূর্ববর্তী ৬ জনকে পুনরায় নিয়োগ দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। ডিএফও তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে বিতর্কিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন ঠিকাদার মিলন। বিএনপির নাম ভাঙানোয় রাজনৈতিক ক্ষোভ। ঠিকাদার মিলন তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নাম ব্যবহার করায় সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

তাদের মন্তব্য “ব্যক্তিগত স্বার্থে বিএনপির নাম ব্যবহার করে সরকারি দপ্তরে ভয়ভীতি দেখানো বিএনপির জন্যই চরম বদনাম ডেকে আনছে। কোনো রাজনৈতিক দল কখনোই এমন আচরণ সমর্থন করে না। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

এবিষয়ে ঠিকাদার মাহফুজুর রহমান মিলনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

বরিশাল॥ বরিশালের বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৮-৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে নিহত ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলামের বাবা মিজানুর রহমান ওরফে দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আউয়াল হাওলাদারকে ১ নম্বর আসামি করে এ মামলা করেন।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি জানান, তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত আক্রোশবশত হয়রানি করা হবে না।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ নেই। যারা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক— এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা মোটেও বরদাস্ত করা হবে না।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করছিলেন।

এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রদল সহসভাপতি রবিউল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. আউয়াল হাওলাদারের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে আউয়াল হাওলাদার ধারালো অস্ত্র দিয়ে রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন বলে অভিযোগ।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

বরিশাল॥ বরিশালের গৌরনদীতে সাকুরা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস দুপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৪ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (এবি সিদ্দিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাথে ) দুপুরের দিকে গৌরনদী উপজেলার দক্কিন বিজয়পুর এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসটি বরিশাল থেকে ঢাকাগামী ছিল। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এতে বাসে থাকা যাত্রীরা ছিটকে পড়ে আহত হন।

খবর পেয়ে গৌরনদী হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় ।

কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা মাঝারি পর্যায়ে হলেও সবাই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুর্ঘটনার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পুলিশ প্রাথমিকভাবে অতিরিক্ত গতি ও চালকের অসাবধানতাকে দায়ী করছে।

এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ।স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কের ওই অংশটিতে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

বরিশাল নগরের চাঁদমারি এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে সন্দেহজনক অবস্থায় ভোলার প্রবাসীর স্ত্রী লাবনী বেগম এর সাথে তার পরকীয়া প্রেমিক  বাচ্চু আহমেদকে আটক করে স্থানীয়রা।  ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটে বলে জানান এলাকাবাসী। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি গোপনে সমাধানের প্রচেষ্টা চলে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চাঁদমারি ও আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটছে। পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় এসব হোটেল দিন দিন অবৈধ কর্মকাণ্ডের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে বলে দাবি করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

তাদের মতে, প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান ও কড়া তদারকি না থাকায় এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। জননিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলার স্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী।

 

 

 

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে অটোরিকশায় চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে আরিফ সরদার (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার কাজিরহাট থানার চরসোনাপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরিফ সরদার চরসোনাপুর গ্রামের হেলাল সরদারের ছেলে। তিনি অটোরিকশা চালাতেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

নিহতের ভাই রিয়াজ সরদার জানান, বুধবার দুপুরে অটোরিকশার চার্জ শেষ হয়ে গেলে আরিফ একাই ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে যান। ওই সময় তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারাত্মক আহত হন।

পরে বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আরিফকে উদ্ধার করে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, বিদ্যুতায়িত যুবককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিলো।

কাজিরহাট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে লাশ দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

 

বরিশাল নগরীতে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ কালাম ওরফে লুডু কালামকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ধান গবেষণা রোড এলাকার নিজ বাসা থেকে মোহাম্মদ কালাম ওরফে লুডু কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সহসভাপতি। কালাম ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালেবের ছেলে।

কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার কালামকে বিএনপির অফিস পোড়ানোসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতা লুডু কালাম ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এলাকায় মানুষকে জুলুম-নির্যাতন ও দখলদারিত্বের মাধ্যমে ভোগান্তিতে ফেলেছিলেন। এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান।

 

রুপাতলী গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালের সামনে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন খাল দখল করে গুদাম নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণের কারণে বর্ষা মৌসুমে রুপাতলীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের উকিলবাড়ী সড়কসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বহু বছর ধরে এমন ভোগান্তি চললেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।

স্থানীয়রা জানান, বরিশাল জেলা পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই বহু বছর আগে খালের ওপর গুদামটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয়দের প্রতিবাদে কোনো ফল হয়নি বলেও তারা অভিযোগ করেন।

উকিলবাড়ী সড়কের বাসিন্দা কামাল জানান, “রুপাতলী বটতলা হয়ে মহাসড়কের পাশে এই খালটি একসময় নৌকা ও ট্রলার চলাচলের পথ ছিল। এখন দখলের কারণে খালটি মৃতপ্রায়। খাল দখল করে গুদাম তুলে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছে তারা, আর বর্ষায় আমরা পানি বন্দি হয়ে থাকি।”

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়নি।

 

বরিশালে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ, দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক।

বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি-বরিশাল মহাসড়কের প্রতাপ এলাকায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও স্লোগান দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যার দিকে গাবখান ব্রিজের পশ্চিম ঢাল এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেলসহ তাদের আটক করে।

আটক যুবকরা হলেন—ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের টিপু হাওলাদার, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য বলে পরিচিত, এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পারদেশীপুর ইউনিয়নের ওলি, যিনি বাকেরগঞ্জ পারদেশীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ৪ জন যুবক দুটি মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠি-বরিশাল মহাসড়কের প্রতাপ এলাকায় এসে টায়ারে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে দ্রুতস্থান ত্যাগ করে। কিছুক্ষণের মধ্যে সড়কে আগুন দেওয়ার সেই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ বলছে, আটক টিপু হাওলাদার ও ওলি রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিব মাহমুদ অপু ও সদস্য দিপুসহ তাদের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি, বরিশাল ও পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় গাছ কেটে অবরোধ সৃষ্টি, বাড়িতে ভাঙচুরসহ একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। ওলিকে স্থানীয়ভাবে “ভাড়াটিয়া খুনি” হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানায়, সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। আটক দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পেছনে কারা জড়িত আছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

 

বিশেষ সূত্রে জানা যায় :- এর আগেও ৭৫ পিস ইয়াবা সহ নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ওয়ালিদ হোসেন অলি (২০)। নগরীর বাংলাবাজার ইঞ্জিনিয়ার সড়কস্থ জনৈক মুসা মিয়ার ভবনের নীচ তলা ভাড়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় বিএমপি গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. ফিরোজ আলম বাদি হয়ে ওয়ালিদ হোসেন অলি আসামি করে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিকে থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করলে সোমবার (২৫ আগস্ট) বিচারক জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এই অলি হলেন- নগরীর ১১ নং ওয়ার্ড আরশেদ আলী সড়ক এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং নগরীর বাংলাবাজার এলাকার আ.লীগ ক্যাডার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ রুবেল শরীফ (৪০) ওরফে নাক কাটা রুবেল ও তার ভাই রাজনের বিশ্বস্ত সহযোগী।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিক্তিতে রোববার (২৪ আগস্ট) রাত আট টায় অলির ভাড়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে কেবিনেটের মধ্যে থাকা জামা প্যান্টের নীচ থেকে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে ৭৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।