দয়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার ফলে গর্ভের শিশুকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে একটি বেসরকারী হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এমনকি মিথ্যা  আশ্বাস ও প্রতারনা করে প্রসুতি নারীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
তাছাড়া রোগীর স্বামীর কাছ থেকে জোরপুর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ারও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী স্বামী।
ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বেজগাতি সুইজ হাসপাতালের। এখানে হরহামেসাই শিশু হত্যার মত চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার কারখানা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন এই সুইজ হাসপাতাল।
গত (২৫ জুন) শুক্রবার আরও একটি শিশু মৃত্যুর খবর দিয়ে আবারও আলোচনায় নাম লেখালেন সেই আলোচিত সুইজ হাসপাতাল। ঘটনাটি কয়েকদিন আগের হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জিম্মি থাকায় এত দিন মুখ খুলতে পারেন নি ভুক্তভোগী রোগীর পরিবারটি।
জানা গেছে, গত শুক্রবার উপজেলার ধানডোবা গ্রামের বাসিন্দা সবুজ ভ’ইয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে সুইজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে আসলে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে দায়িত্বরত থাকা ডাঃ (ডিএমএফ) শফিকুল ইসলাম নিজেই আলট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গর্ভের বাচ্চা ও মা দু’জনই সুস্থ আছেন মর্মে জানান। এবং আগামী ২ সপ্তাহ পরে বাচ্চা প্রসবের সময় হবে বলে ব্যাথা উপশমের জন্য স্যালাইন ও প্রয়োগ করেন ডাঃ শফিক। এমতাবস্থায় ফরিদা বেগমের ব্যাথা আরও বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনে একটি ইনজেকশন পুশ করান এই ডিএমএফ ডাঃ শফিক। এবং ফরিদাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
রবিবার (৪ জুন) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফরিদার শাশুড়ী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ইনজেকশন পুশ করার কিছুক্ষণ পড়ে ফরিদার ব্যাথা আরো বেড়ে যায়। এই অবস্থায় আমি একা মহিলা কোন উপায় না পেয়ে অসহায়ের মত বারবার ছুটে যাই নার্সদের কাছে। কিন্তুএত রাত্রে ডাক্তারকে ডাকা যাবেনা তাহলে ডাক্তার রাগ করবেন বলে জানায় নার্স। নার্সের এরকম আচরণে সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে পেটের ভিতর মারা যায় ফরিদা আমার ছেলের সন্তান।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের প্রতি উল্টো অভিযোগ এনে জানান, রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের বিল পরিশোধের না করার জন্য মিথ্যা একটি ঘটনা সাজিয়েছে।
কিন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা।
 পটুয়াখালীতে আরিফ (২৮) নামের এক লম্পট যুবকের বিরুদ্ধে চার সন্তানের জননী বিধবা এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে বর্তমানে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, ঢাকার নারায়ণগঞ্জে আমাদের খাবার হোটেল ও দোকান ছিল।
দুই বছর আগে আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে পটুয়াখালীর ২ নম্বর ব্রিজ এলাকার বাবার বাড়িতে চলে আসি।
সেখানে কিছুদিন থাকার পর সন্তানদের নিয়ে জেলগেট এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করি।
প্রায় ৮ মাস আগে আরিফ নামের স্থানীয় এক যুবক বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে আমাকে ধর্ষণ করে। এসময় আরিফ নেশাগ্রস্ত ছিল।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরে সে (আরিফ) ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে আরও বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। তার অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে জেলগেট এলাকা থেকে বাসা পরিবর্তন করে বালুর মাঠ এলাকায় বাসা ভাড়া নেই।
কিন্তু সেখানে গিয়েও আরিফ আমাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। বিষয়টা আরিফকে জানানোর পর থেকে তার আর তার দেখা পাওয়া যানি। শুক্রবার আমি অসুস্থ হয়ে পরলে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসি।
এ বিষয় জানতে আরিফের মোবাইলফোনে একাধিকাবার কল করে ও তার বাসায় গিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আরিফের বাবা আজিজুর রহমানের দাবি, ওই নারীর সঙ্গে আরিফের কোনও সম্পর্ক নেই।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোর্শেদ জানান, ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার খোঁজ রাখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।’
রাজাপুর প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদরের বলাইবাড়ী এলাকায় ভোর রাতে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিবাহিত তরুণীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই নৌশ প্রহরীর বিরুদ্ধে।
গত ৩ জুলাই শনিবার ভোর রাত আনুমানিক ৪ টার দিকে স্থানীয় মো.মোশারেফ হাওলাদারের বাড়ীর সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান,শনিবার ফজরের নামাজ আদায় শেষে বাড়ী ফেরার সময় ডাক চিৎকার শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে জানতে পারি নৌশ প্রহরী দক্ষিণ রাজাপুর এলাকার মৃত্যু মন্নাফ হাওলাদারের ছেলে মনির হোসেন হাং এবং মৃত্যু হাতেম এর ছেলে আশ্রয়ণের বাসিন্দা মো.দিলু এ দু’জন মিলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক তরুণীর শ্লীলতাহানী ঘটায়।
এ সময় তরুণীর চিৎকারে বাড়ীর মালিকের ছেলে নয়ন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং দুই নৌশ প্রহরীকে হাতে নাতে আটক করে স্থানীয়দের সহযোগীতায় রাজাপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ভুক্তভোগী বলেন,শনিবার ভোর রাতে আমি বলাইবাড়ী এলাকায় একটি ঘরের সামনে সিঁড়িতে বসে ছিলাম।
সেই সময়ে দুই জন লোক এসে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে (স্পর্শকাতর) হাত দেয় তখন আমি চিৎকার করি। আমার চিৎকার শুনে ঘরের ভিতর থেকে লোকজন বেড়িয়ে এসে তাদের ধরে ফেলে।
ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারটি সম্মানের ভয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। তাই আটককৃতদের পরিবার এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যদের জিম্মায় মুছলেকা রেখে ছেড়ে দেয় থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী তরুণী পার্শবর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী এলাকার মো.ফোরকান হাওলাদারের মেয়ে।
সে গত ২৬ জুন বাড়ী থেকে কাউকে কিছু না বলে বাহির হয়ে যায়। এ বিষয়ে তার পরিবার ভান্ডারিয়া থানায় গত ২ জুলাই ২০২১ একটি সাধারণ ডাইরী করেন যার নং – ৬৮।
অভিযুক্ত নৌশ প্রহরী (স্থানীয় দোকানদার) মনির হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীকে হত্যা এবং চাচাতো বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা বিচারাধীন রয়েছেন।
সে বিভিন্ন সময়ে এলাকায় অনেক অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে বেড়ায় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
রাজাপুর সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য মো.মামুন হোসেন জানান, মানষিক ভারসাম্যহীন ঔ তরুণীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় নৌশ প্রহরী দিলু ও মনির’কে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয়রা।
আমরা ও ঘটনার সত্যতা পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেই। ঘটনাস্থানে থানা পুলিশ এসে অভিযুক্তদের নিয়ে যায় এবং ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকারের অভিযোগ দায়ের না করার থানা পুলিশ আটককৃতদের মুচলেকা রেখে ইউপি সদস্যদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শহিদুল ইসলাম বলেন,খবর পেয়ে রাজাপুর থানা পুলিশের ওসি তদন্ত সহ একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়।
জনতার হাতে আটককৃতদের থানায় নিয়ে আসে এবং ভুক্তভোগীকে সাধারণ ডাইরী মোতাবেক শনাক্তের জন্য পুলিশ সহ ভান্ডারিয়া থানায় প্রেরণ করা হয়।
শনাক্ত পূর্বক পরিবারের সদস্যদের সহ রাজাপুর থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সহ তার পরিবার কোনো অভিযোগ না দেয়ায় মুচলেকা রেখে শনিবার বিকেলে উভয় পক্ষকে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের জিম্মায় দেয়া হয়।

শামীম আহমেদ ॥ র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ডাকাত, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারকচক্রসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এ ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ইতিমধ্যেই বিশেষ সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

অসাধু মাদক ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেশী/বিদেশী মাদক সংগ্রহ করে বরিশাল জেলার গৌরনদী থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানা এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা ও অপারেশন চালিয়ে আসছে।

 

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৮, বরিশাল, সিপিএসসি কোম্পানীর একটি বিশেষ আভিযানিক দল (৪) জুলাই তারিখ বরিশাল জেলার গৌরনদী থানা এলাকায় একটি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান পরিচালনাকালে আনুমানিক রাত ৫ টার দিকে সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, বরিশাল জেলার গৌরনদী থানাধীন তারাকুপী সাকিনস্থ মোঃ শাহ আলম চাপরাশী(৩৮), এর বসত বাড়ির মধ্যে মাদক জাতীয় দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের আভিযানিক দলটি কৌশলগতভাবে ঘটনাস্থলের সন্নিকটে পৌঁছলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ঘেরাও পূর্বক ১ জন ব্যক্তিকে আটক করে।

আটককৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম (১) মোঃ শাহ আলম চাপরাশী(৩৮), পিতাঃ মৃত মোহাম্মদ আলী চাপরাশী, সাংঃ তারাকপি, থানাঃ গৌরনদী, জেলাঃ বরিশাল বলে জানায়।

 

পরবর্তীতে স্থানীয় জনসাধারণের উপস্থিতিতে ধৃত আসামীর নিকট থেকে ৭৫৩ (সাত শত তিপ্পান্ন) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।

 

পৃথক অভিযান পরিচালনা করে ৩ জুলাই ৬টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বরিশাল জেলার উজিরপুর থানাধীন মুন্সি তাল্টুু সাকিনস্থ টাকাবাড়ি স্টিল ব্রীজের পশ্চিম পাশে মাদক জাতীয় দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের আভিযানিক দলটি আনুমানিক সন্ধার দিকে কৌশলগতভাবে ঘটনাস্থলের সন্নিকটে পৌঁছলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ঘেরাও করে ২ জন ব্যক্তিকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নাম (১) মোঃ রুবেল শেখ(২২), পিতাঃ মোঃ মুজিবর শেখ, সাং- মশাং, (২) প্রফুল্লহ রায়(২৫), পিতাঃ গনেশ রায়, সাংঃ জামবাড়ি, উভয় থানাঃ উজিরপুর, জেলাঃ বরিশাল বলে জানায়।

 

পরবর্তীতে স্থানীয় জনসাধারণের উপস্থিতিতে ধৃত আসামীদের নিকট থেকে ৪৫৪ (চার শত চুয়ান্ন) পিস ইয়াবা এবং মাদক বিক্রয়ে নগদ (তিন হাজার চার শত বিশ) টাকা উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৮, বরিশাল সিপিএসসির ডিএডি মোঃ সাইফুল ইসলাম ও ডিএডি মোঃ আল মামুন শিকদার বাদী হয়ে বরিশাল জেলার গৌরনদী থানা এবং বরিশাল জেলার উজিরপুর থানায় পৃথক দুটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুইটি মামলা দায়ের করেন।

চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার বেসরকারি মেরিন সিটি হাসপাতালে বিষপান করা অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর (৩৫) লাশ রেখে পালিয়ে গেছে তার স্বজন। বৃহস্পতিবার পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, ৩০ জুন মধ্যরাত থেকে ওই নারীর কোনো স্বজনকে খুঁজে পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে হাসপাতাল থেকে এ তথ্য বায়েজিদ থানা পুলিশকে জানানো হয়।
বায়েজিদ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, এটি হত্যা না বিষপানে আত্মহত্যা, তা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রাত ১২টার পর তারা খবর পায়। রোগীর স্বজন মাস্ক আনার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গিয়ে আর আসেনি।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলাব্রত বড়ূয়া জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বায়েজিদ থানা পুলিশ অজ্ঞাত নারীর লাশ নিয়ে আসেন। সেটি মর্গে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির কোনো স্বজন যোগাযোগ করেনি।
পুলিশের অনুমতি নিয়ে হাজতে আসামির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তি। কোনো কারণ ছাড়াই তাকে চার ঘণ্টা হাজতে আটকে রাখে পুলিশ। বুধবার বিকেলে উপজেলার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগী রুহুল আমিন রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
রুহুল আমিন জানান, বুধবার বিকেলে রাজু নামের তার এক প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদার। রাজু একজন কাপড় ব্যবসায়ী। বুধবার বিকেলে পুলিশের অনুমতি নিয়েই তিনি হাজতে রাজুকে দেখতে যান। কিন্তু ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন অকারণে তাকে প্রথমে চড়-থাপ্পড় এবং একপর্যায়ে হাজতে আটকে রাখেন। অনেক কাকুতি-মিনতির পর রাত ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ফাঁড়িতে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ওই ব্যক্তি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, ফুটপাতে চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রুহুল আমিনও তার সহযোগী ছিল। এ কারণে তাকে রাজুর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। কাউকে হাজতে আটকে রাখার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
করোনা সংক্রমণে দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে শনাক্ত ও মৃতের হার বিবেচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে চতুর্থ স্থান থেকে এক লাফে সংক্রমণের শীর্ষে চলে এসেছে বরিশাল বিভাগ। গত এক সপ্তাহে এই বিভাগে সংক্রমণের হার বেড়েছে ১১৮.৩ শতাংশ।
এদিকে গত সপ্তাহের প্রতিবেদনে শীর্ষে থাকা ঢাকা বিভাগ দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে। ঢাকায় গত এক সপ্তাহে সংক্রমণের হার বেড়েছে ৭৬.৯ শতাংশ। যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ১১৪.৪ শতাংশ।
দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) নিয়মিত সাপ্তাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত ২১ থেকে ২৮ জুন এই এক সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় এসব তথ্য জানিয়েছে তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে সিলেট বিভাগ। এ বিভাগে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে ৩৩.৫ শতাংশ। সিলেটে গত সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮১৩ জন, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৬০৯ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে সংক্রমণের ২৫তম সপ্তাহে সব বিভাগে নতুন শনাক্তের হার বেড়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ১১৮.৩ শতাংশ বেড়েছে বরিশাল বিভাগে। আলোচিত সপ্তাহে বিভাগটিতে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৩৮ জনের। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৩৮ জন। এরপরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগে নতুন করে শনাক্তের হার বেড়েছে ৭৬.৯ শতাংশ। এই সপ্তাহে বিভাগটিতে ১৪ হাজার ৫৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল আট হাজার ২১৫ জন।
সংক্রমণ বিবেচনায় সারাদেশে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগ। বিভাগটিতে শনাক্তের হার বেড়েছে ৭১.৬ শতাংশ। সপ্তাহটিতে এ বিভাগে এক হাজার ৮৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৩৩ জন। চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে রংপুর বিভাগ। এই বিভাগে গত এক সপ্তাহে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে ৬৭.৮ শতাংশ। এ বিভাগে আগের সপ্তাহের এক হাজার ৫৯৮ জন শনাক্ত থেকে শনাক্ত বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৬৮২ জন।
গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রাম বিভাগে শনাক্তের হার বেড়েছে ৪০.৭ শতাংশ। এই বিভাগে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে চার হাজার ১২৭ জনের। তার আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিল দুই হাজার ৯৩৩ জন।
এছাড়া সংক্রমণ বিবেচনায় সপ্তম স্থানে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এ বিভাগে শনাক্তের হার বেড়েছে ৩১.৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ বিভাগে শনাক্ত ছিল পাঁচ হাজার ৪১৮ জন। আর এ সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন সাত হাজার ১৩৫ জন।
এক সপ্তাহে সর্বনিম্ন সংক্রমণ হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। বিভাগটিতে শনাক্তের হার বেড়েছে ১২.৪ শতাংশ। এ বিভাগে গত সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬২২ জন। গত সপ্তাহে শনাক্ত ছিল পাঁচ হাজার দুই জন।
মনপুরা প্রতিনিধি ॥ ভোলার মনপুরায় ঘরে ডুকে সনাতন ধর্মীয় এক গৃহবধূকে জোর পূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে দুই মাঝি। এই ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে মনপুরায় থানায় দুইজনকে আসামী করে ধর্ষণ মামলা করে। পরে মনপুরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই ধর্ষককে আটক করে।
বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩ টায় উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে সীতাকুন্ড গ্রামে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
ধর্ষন মামলায় আটককৃতরা হলেন, মোঃ আরিফ মাঝি (২৪) ও নাইম মাঝি (২২)। এদের দুইজনের বাড়ি উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সীতাকুন্ড গ্রামে।
ওই গৃহবধূ ও পুলিশের এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩ টায় আরিফ ও নাইম মাঝি মনপুরা ইউনিয়নে সীতাকুন্ড গ্রামে সনাতন ধর্মীয় এক গৃহবধূর বাড়িতে জোরপূর্বক ডুকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এই সময় ওই গৃহবধূর স্বামী কলাতলী চরে অবস্থান করে। বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে গৃহবধূকে। বৃহস্পতিবার সকালে কলাতলীর চর থেকে ধর্ষিত ওই গৃহবধূর স্বামী বাড়িতে আসলে ঘটনাটি জানায়। পরে স্বামীসহ ওই গৃহবধূ মনপুরায় থানায় এসে ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আসামী করে ধর্ষণ মামলা করে। পরে দুপুর ৩ টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হওয়া দুই আসামী আরিফ মাঝি ও নাইম মাঝিকে উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে আটক করে।
এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ধর্ষনের অভিযোগ থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই আসামীকে আটক করে।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী পৌর শহরের তাহফিজুল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ আব্দুল আউয়াল ও এক নারীর অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে হাফেজ আব্দুল আউয়াল আমতলী পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় তাহফিজুল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ওই মাদ্রাসায় দ্বীনি শিক্ষার উদ্দেশ্যে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করেন তিনি। পুরুষ হাফেজের পাশাপাশি নিয়োগ দেন একজন নারী হাফেজ।
ওই নারী হাফেজার সঙ্গে গড়ে তোলেন হাফেজ আব্দুল আউয়াল অনৈতিক সম্পর্ক। এ বিষয়টি মাদ্রাসার অভিভাবকসহ এলাকার মানুষের মাঝে জানাজানি হয়ে যায়। বিষয়টি শুধরে নেয়ার জন্য অভিভাবকরা হাফেজ আব্দুল আউয়ালকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু অভিভাবক ও এলাকার লোকজনের কথায় তিনি কর্ণপাত করেনি।
এদিকে ওই নারী হাফেজের সঙ্গে হাফেজ আব্দুল আউয়ালের অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাফেজ আব্দুল আউয়ালের এমন কুকীর্তি ফাঁস হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তারা হাফেজ আব্দুল আউয়ালের বিচার দাবি করেছেন।
অপরদিকে অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় হাফেজ আব্দুল আউয়াল ওই মাদ্রাসার আরেক হাফেজ আল আমিনকে দায়ী করেন এবং তাকে মারধর করে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
মাদ্রাসার অভিভাবক মো. আবু ছালেহ হাফেজ আউয়ালের শাস্তি দাবি করে বলেন, একজন হাফেজ মানুষের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, তার এমন কর্মকাণ্ডের কথা জেনে আমি আমার ছেলে ওই মাদ্রাসা থেকে নিয়ে এসেছি।
এলাকাবাসী কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, হাফেজ আব্দুল আউয়ালের কর্মকাণ্ড মেনে নেয়ার মত নয়। ওই মাদ্রাসায় অনেক মেয়েরা লেখাপড়া করে তারা ওই হাফেজের কাছে মোটেও নিরাপদ নয়।
হাফেজ আব্দুল আউয়ালের শাস্তি দাবি করে তিনি আরও বলেন, তার কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ।
মাদ্রাসার হাফেজ আল আমিন বলেন, পরিচালক আব্দুল আউয়ালের অশ্লীল কর্মকাণ্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে আমাকে দায়ী করেন তিনি। পরে আমাকে মারধর করে বেতন ভাতা না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আউয়াল আমাকে জীবননাশের হুমকিসহ মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমি তার এমন কর্মকাণ্ডের বিচার চাই।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ আব্দুল আউয়াল ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।
আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের নামে ভাউচার করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ঠিকাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‘পলি কনস্ট্রাকশন’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আকবারুজ্জামানকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ঠিকাদারকে বুধবার আদালতে প্রেরণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এই মামলায় ৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে, যারা সকলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুব ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
গ্রেপ্তার আকবারুজ্জামান বরিশাল শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ নং প্যারারা রোডে বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যবসায়িক অংশিদার মেহেদী হাসান সুমনের সাথে ‘পলি কনস্ট্রাকশন’র চেয়ারম্যান আকবারুজ্জামানের বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ মেটাতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও অংশ নেন। কাগজপত্র উপস্থাপন করলে দেখা যায়, সিটি মেয়রের নামে ভাউচার করে বড় একটি অংকের টাকা হাতিয়ে নেন ঠিকাদার আকবারুজ্জামান। এই বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করা হয়ে কাগজপত্রসহ ঠিকাদারকে বাসভবনে তলব করেন। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে না পারায় পরবর্তীতে কোতয়ালি পুলিশ ডেকে তাকে তুলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় বরিশালের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বাদী হয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা করেছেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আকবারুজ্জামানকে বুধবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়।